চালে ও সবজিতে উর্ধ্বমুখী বাজার

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ যশোরে চালের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ সপ্তাহেও সরু চালের কেজিতে বেড়েছে আরও ২ টাকা। ব্যবসায়ীরা চালের দাম বৃদ্ধির পেছনে অটো রাইস মিল মালিকদের দায়ী করছেন। এদিকে, কয়েকদিনের টানা বৃৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে সবজির ক্ষেত। বাজারে সরবরাহ কমে দামও উর্ধ্বমুখী। তাছাড়া ক্রেতা চাহিদায় ভাটা পড়ায় খামারের মুরগির দামও কিছুটা কমেছে।

তবে এ সপ্তাহে আলু, পেঁয়াজ,ডিম ও গরুর মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভোক্তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি তদারকি সংস্থাগুলোর তৎপরতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। রোববার যশোরের বড় বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

যশোর বড় বাজারে স্থিতিশীল হচ্ছে না চালের দাম। গত সপ্তাহে সব ধরনের চালের কেজিতে ২ টাকা করে বাড়ার পর এ সপ্তাহে আবারও সরু চালের দাম বেড়েছে। মিনিকেট চালের কেজিতে গত সপ্তাহের থেকে কেজিতে ২ টাকা বেড়ে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬৬ থেকে ৭২ টাকা। ব্রি-৬৩ চালের কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য চালের দাম এ সপ্তাহে অপরিবর্তিত রয়েছে। বাংলামতি চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৮৪ থেকে ৮৬ টাকা, ব্রি- ৪৯ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা, ব্রি-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকা, কাজললতা চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকা, স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, হীরা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন কৃষকের ঘরে ধানের মজুত শেষ হওয়ার পর চালের বাজার এখন নিয়ন্ত্রণ করছে অটো রাইস মিল মালিকরা। তারা হাট থেকে প্রচুর পরিমাণে ধান কিনে মজুত করে চালের দাম বাড়িয়ে বাজারে অস্থিরতার সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে যশোর বড় বাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুশীল কুমার বিশ্বাস চালের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন। তিনি আরও বলেন,মজুদদারদের কারণে হাটে ধানের বেড়ে গেছে।

এদিকে এ সপ্তাহে টানা বৃষ্টির কারণে সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। বড় বাজারে খুচরা সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম ও মো. তামিম জানান, গত সপ্তাহের থেকে উচ্ছের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে রোববার বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা, টমেটোর কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা, পটলের কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা, বরবটির কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা, ঢেঁড়সের কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা, শসার কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা, লাউয়ের পিসে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। বড় বাজার এইচএমএম রোডের কাঁচামালের আড়তদার শাহাবুদ্দিন মাতব্বর জানান, এ সপ্তাহে টানা বৃষ্টিতে সবজির ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কমে দাম বেড়েছে।

অপরদিকে বাজারে খামারের লেয়ার মুরগির কেজিতে এ সপ্তাহে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, সোনালি মুরগি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। মুরগি বিক্রেতা নূর মোহাম্মদ জানান, ঈদের পর বিয়েসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠান চলতে থাকায় খামারের মুরগির দাম বাড়তি ছিল। বর্তমানে ক্রেতা চাহিদা কমে যাওয়ায় দামও নিম্নমুখী। এছাড়া বাজারে আলুর কেজি ২৫ টাকা, পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচের কেজি ৪০ টাকা, ডিমের হালি ৪০ টাকা ও গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে।

রোববার বড় বাজারে ক্রেতা আব্দুস সামাদ জানান, যেভাবে চালের দাম বাড়ছে তাতে করে এখনই সরকারের তদারকি সংস্থাগুলোকে সুযোগ সন্ধানিদের লাগাম টেনে ধরতে হবে। অন্যথায় চালের দাম বেড়ে সাধারণ মানুষের আরও ভোগান্তি বাড়বে।