দিঘলিয়ায় খাল খননের নামে বৃক্ষ নিধনের ঘটনায় তোপের মুখে ঠিকাদার ও প্রকল্প পরিচালক

0

জামাল হোসেন,খুলনা॥ খুলনার দিঘলিয়ায় খাল খননের নামে নির্বিচারে গাছ নিধনের ঘটনায় সরেজমিনে তদন্তে এসে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন ঠিকাদার ও প্রকল্পের উপপরিচালক। রোববার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে গাছ কাটা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সাসটেইনেবল পোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রি ও ঠিকাদার মোহাম্মদ আরিফ রহমান। এ সময় এলাকাবাসী ক্ষতি পূরণের দাবিতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
এদিকে নির্বিচারে গাছ নিধনের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
সাসটেইনেবল পোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রি এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা এলাকাবাসীর কোন ক্ষতি করে কাজ করতে চাই না। কোন সুযোগও নেই গাছ কাটার। এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে যদি কোন কাজ করা যায় এটাই মঙ্গল।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনজুরুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঠিকাদার কর্তৃক হুমকি ও এলাকাবাসীর ক্ষতিপূরণের দাবিতে রোববার রাতে দিঘলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ইবনুল হাসান মিনার।
দিঘলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছ ও ঘরবাড়ির ক্ষতি করে খাল খনন করা যাবে না। আর যে গাছ-পালার ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া লাগবে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী ও ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উপজেলার ব্রহ্মগাতি গ্রামের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত নাককাটি খালটি খননের জন্যে মৎস্য অফিসের তত্ত্বাবধায়নে ‘শরীফ এন্ড ফিলামেন্ট’ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। ৪ এপ্রিল থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে কাজ সমাপ্তির কথা রয়েছে। খালের দৈর্ঘ্য ৪.৪ কিলোমিটার। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরুর আগে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনজুরুল ইসলামের মাধ্যমে এলাকায় মাইকিং করে নাককাটি খালের উভয়পাড়ের ব্যক্তি মালিকানার জমির বিভিন্ন প্রজাতির জীবন্ত গাছ , ঘরবাড়ি ও মৎস্য ঘের সরিয়ে ফেলার ঘোষণা দেন। তিন দিনের সময় সীমা ঁেবধে দিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ নির্দেশনা প্রদান করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এসকেভেটর বা ভেকু মেশিন চালিয়ে ইতোমধ্যে স্থানীয়দের বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫ হাজার জীবন্ত গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। মৎস্য ঘেরের ভেড়িবাঁধ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ কাজে স্থানীয়রা বাধা দিলে তাদেরকে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, খাল খননের নামে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলামের মাইকিংয়ের ফলে ইতোমধ্যে নাককাঠি খালের উভয় পাড় থেকে বিভিন্ন প্রজাতির জীবন্ত প্রায় ( ছোট-বড়) ৫ হাজার কাজ কর্তন করা হয়েছে । দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে উভয়পাড় থেকে ১৮ থেকে ২০ হাজার জীবন্ত বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কর্তন করে ফেলা হবে। এর ফলে স্থানীয়রা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম মাইকিংয়ে প্রচারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খালের উভয়পাড় থেকে গাছ সরিয়ে ফেলার অনুরোধ জানিয়েছি।