তবুও বাড়ছে সাইবার ক্রাইম

0

ডিজিটাল কার্যক্রমে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও এগিয়ে চলেছে। এখন স্মার্ট আগামীর স্বপ্ন দেখছে দেশ। সরকারের অগ্রাধিকারগুলোর অন্যতম দেশকে তথ্য-প্রযুক্তিতে এগিয়ে নেওয়া। এরই মধ্যে শহরের সীমা ছাড়িয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তির মোবাইল, ইন্টারনেট গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। তথ্য-প্রযুক্তির নানা বিষয় ক্রমেই মানুষের সহজলভ্য হচ্ছে। কিন্তু প্রদীপের নিচে যেমন অন্ধকার থাকে, তেমনি ভালোর বিপরীতে মন্দও থাকে। একইভাবে তথ্য-প্রযুক্তির দ্রুত সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে সাইবার ক্রাইম বা তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধের পরিমাণও দ্রুত বেড়ে চলেছে। ক্রমেই অধিক হারে নিরীহ মানুষ এ ধরনের অপরাধের শিকার হচ্ছে। এ ধরনের অপরাধের মধ্যে ইন্টারনেটে আপত্তিকর ছবি প্রচার, ব্ল্যাকমেইল, প্রতারণার ফাঁদ পাতার মতো সামাজিক অপরাধ থেকে শুরু করে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড সংগঠিত ও সংঘটিত করা পর্যন্ত বহু রকম অপরাধই রয়েছে। দিন দিন বাড়ছে এসব অপরাধের পরিধি।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক জরিপ রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশে সাইবার অপরাধের শিকার ৫০.২৭ শতাংশ ভুক্তভোগী বিভিন্ন ধরনের সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। এদের মধ্যে ৮০.৯০ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছর। ছবি বিকৃত করে অপপ্রচার, পর্নোগ্রাফি কনটেন্ট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার এবং অনলাইনে-ফোনে মেসেজ হুমকিতে এরা মানসিক হয়রানির শিকার হয়েছে। ‘বাংলাদেশে সাইবার অপরাধ প্রবণতা ২০২২’ শিরোনামের গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়্যারনেস ফাউন্ডেশন। গবেষণা জরিপে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর সাইবার বুলিংয়ের শিকার হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৫০.২৭ শতাংশ; গত বছর যা ছিল ৫০.১৬ শতাংশ। ব্যাপকভাবে সাইবার সচেতনতামূলক কার্যক্রম নেওয়া এবং জাতীয় বাজেটে সাইবার সচেতনতায় গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে গবেষণা প্রতিবেদনের আটটি সুপারিশ করা হয়েছে।
সাইবার অপরাধের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সাইবার অপরাধ দমনে সরকার নানা ধরনের উল্লেখযোগ্য উদ্যোগও নিয়েছে। সাইবার ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীতে গঠন করা হয়েছে সাইবার ইউনিট। ডিজিটাল আইন, সাইবার অপরাধ দমনে নানা ধরনের উদ্যোগ থাকা সত্ত্বেও যথাযথ সাইবার অপরাধ কেন বাড়ছে তা এখন বড় প্রশ্ন। আমরা মনে করি, শুধু আইন করে বা ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বসে থাকলে চলবে না ও আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধ, যথাযথভবে তদন্ত কার্যক্রম এবং বিচারে আইনের ব্যাখ্যা প্রদানে যতœশীল হওয়া প্রয়োজন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুধাবন করতে হবে।