নিত্যপণ্যের বাজারে অসহায় সাধারণ মানুষ

0

 

রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক চাপ সামাল দিতে রাষ্ট্রযন্ত্র ও সরকারি লোকজন বেশি ব্যস্ত। দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সময় দেয়ার মতো সময় যেন কারো নেই। এ মুহূর্তে পণ্যমূল্যের চাপে নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত, এমনকি মধ্যবিত্তের একটি বড় অংশের দিন আর চলছে না। অথচ দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি উত্তরণের কোনো সুনির্দিষ্ট পথরেখা প্রণয়ন করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে সরকার।
বাজারে একসাথে ডিম, আলু, পেঁয়াজ, চিনি থেকে শুরু করে শীতকালীন সবজির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ডিম ও আলু আমদানির অনুমতি দেয়ার পর এ দুই পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে। এটি ইঙ্গিত দেয়, সমস্যাটি পণ্যের জোগান বা উৎপাদন খরচের নয়। মূলত বাজারে শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অস্বাভাবিক হারে দাম বাড়ছে। আলু ও ডিম ব্যবসায়ীরা যখন অস্বাভাবিক মুনাফা তুলে নিচ্ছেন, তখন পেঁয়াজ কারবারিরাও সুযোগ নিচ্ছেন। তাদের দেখাদেখি সবজি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
যেকোনো পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়লে সরকারি দু-একটি সংস্থা উচ্চবাচ্য করে। কিন্তু কী কারণে এত দাম বাড়ল, কারা এ জন্য দায়ী- এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার কোনো প্রয়াস নেই। দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হয় না। তাই হঠাৎ কোনো পণ্যের দাম বাড়িয়ে একটি পক্ষ বাজার থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ পায়। এ জন্য কোনো জবাবদিহির মধ্যে পড়তে হয় না, শাস্তি হয় না। তাদের দেখাদেখি অন্যান্য সুযোগসন্ধানী আরেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। সব মিলিয়ে এভাবে আমাদের দেশে সাম্প্রতিক সময়ে বাজারের স্বাভাবিক শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায়ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেই সরকার। সরকার অসহায়ের মতো বাজারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন হলে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ে মানুষের ওপর। এ পরিস্থিতিতে যে কেউ নানা সুযোগ নিতে পারে। সেই সুযোগ কেউ কেউ নিচ্ছেন। সরকারের উচিত তাদের থামানো ও নিয়ন্ত্রণ করা।