বাগেরহাটে ধর্ষণ ও দুই শিশু হত্যার দায়ে এক জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা ॥ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দাদীকে ধর্ষণ ও দুই নাতীকে হত্যা মামলায় বাচ্চু মৃধা (৫৮) নামের এক আসামিকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. নূরে আলম আসামির উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন। একই সাথে দন্ডাদেশপ্রাপ্ত বাচ্চু মৃধাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া এই মামলার অপর আসামি খোকন খানকে বেসকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
দন্ডপ্রাপ্ত বাচ্চু মৃধা মোরেলগঞ্জ উপজেলার পায়লাতলা এলাকার মৃত বাকের মৃধার ছেলে। খালাসপ্রাপ্ত খোকন খান একই উপজেলার সমাদ্দারখালী এলাকার মৃত আছমত খানের ছেলে।
হত্যার শিকার মিরাজুল (৯) ও মো. ইমন ওরফে রিয়াজুল ইসলাম (৭) মোরেলগঞ্জ উপজেলার পায়লাতলা গ্রামের লোকমান হোসেন বাবুর ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার পায়লাতলা গ্রামের ফরহাদ মৃধার বসতঘরের বারান্দায় দাদীর সাথে মিরাজুল ও রিয়াজুল ঘুমিয়ে ছিল। রাত ১১ টার দিকে বাচ্চু মৃধাসহ কয়েকজন এসে তাদের দাদীকে ধর্ষণ করেন। তাদের ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে বিষয়টি টের পেয়ে মিরাজুল ও রিয়াজুলের ঘুম ভেঙ্গে যায়। দাদীকে মেরে ফেলছে বলে চিৎকার করে তারা। তখন আসামিরা মিরাজুল ও রিয়াজুলকে হত্যা করে বাড়ির পাশে ডোবায় ফেলে দেন। তাদের দাদীকেও মারধর করে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যান হত্যাকারীরা। পরের দিন হত্যার শিকার দুই শিশুর বাবা লোকমান হোসেন বাবু বাদী হয়ে বাচ্চু মৃধাসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মোরেলগঞ্জ থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৫ সালের ১০ জুলাই মোরেলগঞ্জ থানার পুলিশ আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। পরবর্তীতে ২০ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত চাঞ্চল্যকর এই মামলায় বাচ্চু মৃধাকে আমৃত্যু কারাদন্ড প্রদান করেন। মামলার অপর আসামি খোকন খান খালাস পেয়েছেন।
এদিকে খোকনকে খালাস প্রদানের ফলে আদালতের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী লোকমান হোসেন বাবু। তিনি বলেন, ‘বাচ্চুর সাথে খোকনও হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ছিল। খোকনকে কেন আদালত খালাস দিল আমি জানিনা।’ তার শাস্তির জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান তিনি।
মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন শেখ মনিরুজ্জামান ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন রনজিৎ কুমার মন্ডল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রনজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, ‘এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা রায়ে খুশি।’