ভর্তি বিড়ম্বনা যেন না হয়

0

পরীক্ষা গ্রহণ ছাড়াই এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সকলকে পাস করিয়ে দেয়ার বিষটি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠছে, পরীক্ষা হলে সবাই কি পাস করতো ? চলছে আরও কিছু প্রশ্ন তোলা যায়। আরও অনেক প্রশ্ন তার বাস্তবতা মূলত করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীা বাতিল করে সবাইকে উত্তীর্ণ গণ্য করা হয়েছে। শিার্থীদের মূল্যায়নের ভিত্তি ধরা হয়েছে জেএসসি ও এসএসসির ফল। পরবর্তী শ্রেণিতে ভর্তির েেত্র ওই দুই পরীার ফলই বিবেচনায় নেওয়া হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘গত্যন্তরহীন পরিস্থিতি’ প্রসূত সিদ্ধান্ত বলে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন অভিভাবকরা। দ্বিমত যাই থাক, সরকারকে একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হতো।
তবে এ সিদ্ধান্তের নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয়তো দেখা যাবে। পরবর্তী পরিস্থিতি যতটা সহজ মনে করা হচ্ছে, তা না-ও হতে পারে। এখন শিার্থী-অভিভাবকরা পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দুশ্চিন্তায়। জানুয়ারিতে ভর্তি পরীা গ্রহণ করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) গুচ্ছপদ্ধতিতে ভর্তির কথা বলেছে। তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাধিক উপাচার্য এখনো কেন্দ্রীয় ভর্তির ব্যাপারে মত দিয়েছেন। ১৫ অক্টোবর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসির বৈঠক আছে। তারপর পরিস্থিতি বোঝা যাবে।
ভিন্ন ধরনের বাস্তবতাও রয়েছে। এবারের এইচএসসি ও সমমানের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন পরীার্থীর সবাই পাস। এতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেশ খুশি। কারণ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সীমিত। তাই তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অন্যবারের তুলনায় দ্বিগুণ শিার্থী ভর্তি হবে বলে তারা আশা করছে। বিষয়টির বিরূপ দিকটির কথা ভেবে দেখা যায়। এবার জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। ওই দুই পরীার একটিতে যারা অপোকৃত খারাপ ফল করেছে, তাদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। মেডিক্যালে ভর্তি পরীায় বিজ্ঞানের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। যেসব শিার্থী বিদেশে পড়তে যায়, তাদেরও বিষয়ভিত্তিক ভালো নম্বরের প্রয়োজন হয়। যারা এসএসসিতে তেমন ভালো করেনি তারা এইচএসসির ফল দিয়ে তা পূরণের প্রস্তুতি নিয়েছিল। তারা এবার সমস্যায় পড়বে। কারণ তাদের এইচএসসির ফলও অনেকটা এসএসসির মতো হবে। এ কারণে অনেকেই উচ্চশিার কাক্সিক্ষত বিষয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না। বিদেশে যেতে ইচ্ছুক শিার্থীরা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। সে সংশয় রয়েছে। কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের পদ্ধতিতে ভর্তি পরীা নেবে এটাও বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে শিার্থীদের। বিভাগ পরিবর্তন করে যারা এইচএসসিতে ভর্তি হয়েছিল তাদের পৃথকভাবে মূল্যায়ন করার প্রয়োজন রয়েছে। অন্যথায় এবার ভর্তি পরীা নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে শিার্থীদের। অভিভাবকরাও চিন্তিত। আমরা আশা করি, শিা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা বসে সঠিক উপায় বের করবেন, যাতে শিার্থীরা বিড়ম্বনায় না পড়ে। মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে যাতে সঠিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয় সেদিকটা বিশেষভাবে ভাবতে হয়।