যশোরে শিশুদের ‘ভাইরাল ফ্লু’ হাসপাতালে উপচে পড়া ভিড়

0

বিএম আসাদ ॥ যশোরে চলতি বর্ষা মৌসুমে শিশুদের মাঝে বিভিন্ন ভাইরাল ফ্লু মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, হুপিং কাশি, মেনিনজাইটিসসহ নানা ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন শত শত শিশু যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছে।

হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা ধারণক্ষমতার চার গুণেরও বেশি, ফলে অনেক শিশুকে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। হাসপাতালের হিসেবে গত ছয় মাসে ১২ হাজার ১২৩ জন শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা গ্রহণ করেছে। এরমধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তথ্যানুসারে, শিশু ওয়ার্ডে মাত্র ২৪টি বেডের বিপরীতে গতকাল শনিবার রোগীর সংখ্যা ছিল ৯১ জন। এই বিশাল রোগীর চাপ সামলাতে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। পরিসংখ্যানে আরও দেখা যায়, গতকাল একদিনেই শিশু বহির্বিভাগে ৬৩০ জন শিশুরোগী চিকিৎসা নিয়েছে। চলতি মাসের ১৯ দিনে ওয়ার্ডে মোট ৯০৯ জন শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। তবে গত ছয় মাসে ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং এই সময়ে মোট ১২ হাজার ১২৩ জন শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা গ্রহণ করেছে।

শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডাক্তার আম্বিয়া আক্তার সাথী জানান, বর্তমানে যে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের সুস্থ হতে এক থেকে দেড় সপ্তাহ সময় লাগছে। নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, হুপিং কাশি, মেনিনজাইটিসই এসবই ভাইরাসজনিত রোগ। ভাইরাসের ব্যাপক প্রভাবের কারণেই শিশুরা এত বেশি হারে আক্রান্ত হচ্ছে, যা এক কথায় ভাইরাল ফ্লু আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, বৃষ্টি ও ঠাণ্ডাজনিত আবহাওয়া এই ভাইরাল ফ্লুর মূল কারণ।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হুসাইন শাফায়াতও একই কথা বলেছেন। তিনি জানান, বর্ষাকালে বিভিন্ন ভাইরাসের প্রভাব বৃদ্ধি পায়, যা শিশুদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তিনি সতর্ক করে বলেন যে, এসব ভাইরাস ছোয়াঁচে এবং একজনের থেকে আরেকজনের মধ্যে দ্রুত সংক্রমিত হয়।

চিকিৎসকরা শিশুদের এই ভাইরাল ফ্লু থেকে রক্ষা করতে অভিভাবকদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। ডাক্তার আম্বিয়া আক্তার সাথী বলেন, শিশুদের বৃষ্টিতে ভেজানো যাবে না এবং ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে রক্ষা করে ঘরের ভেতর নিরাপদে রাখতে হবে। তিনি মনে করেন, অভিভাবকরা এ বিষয়ে সতর্ক থাকলে ফ্লু থেকে শিশুদের অনেকটাই রক্ষা করা সম্ভব।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হুসাইন শাফায়াতও সকল অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন, যেহেতু এসব ভাইরাস ছোঁয়াচে, তাই শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।