পদ্মাসেতু হয়ে যশোর-ঢাকা রুটে ৫টি ট্রেনের দাবিতে সমাবেশ, রেলমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পদ্মাসেতু রেল প্রকল্পের আওতায় যশোর-ঢাকা যাতায়াতে একাধিক ট্রেন যোগাযোগ চালুর দাবি জোরালো হচ্ছে যশোরে। বিশেষ করে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী যশোর জংশন থেকে পদ্মাসেতু রেল হয়ে চারটিসহ ঢাকায় ৫টি ট্রেন যাতায়াতের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে। বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে  রোববার বেলা ১১টায় যশোর রেলওয়ে জংশনে এ উপলক্ষ্যে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ দাবি না মানলে রেললাইন অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন। সমাবেশ শেষে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যশোর জেলা প্রশাসক ও স্টেশন মাস্টারের মাধ্যমে রেলমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
যশোর জংশনে বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির এই কর্মসূচিতে পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বপ্নের পদ্মাসেতু রেল প্রকল্পে যশোরবাসীর সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। এতদিন যশোর থেকে তিনটি ট্রেন চিত্রা এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ঢাকায় যাতায়াত করতো। কিন্তু পদ্মাসেতু রেল প্রকল্পের মাধ্যমে যশোরের জন্য মাত্র একটি ট্রেন রাখা হয়েছে। খুলনা-ঢাকার ট্রেন যশোর জংশন থেকে অন্তত ১০ কিলোমিটার দূরে পদ্মবিলা জংশন হয়ে ঢাকায় যাবে। পদ্মবিলায় গিয়ে যশোরবাসীর পক্ষে এই ট্রেনে যাতায়াত বাস্তবতা বিবর্জিত। পাশাপাশি কোটচাঁদপুর, সাফদালপুর এবং মোবারকগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাওয়ার কোনো ট্রেনই থাকছে না। এই সব সমস্যা চিহ্নিত করে আমরা রেল যোগাযোগ উন্নয়নের স্বার্থে ছয় দফা দাবি ঘোষণা করছি।
দাবিগুলো হলো, বেনাপোল থেকে ঢাকায় দুটি ট্রেন, দর্শনা থেকে যশোর হয়ে ঢাকার দুটি ট্রেন ও খুলনা থেকে যশোর ঈশ্বরদী যমুনা সেতু হয়ে অন্তত একটি ট্রেন বহাল রাখতে হবে। ঢাকায় অফিস ধরার মতো সময়ে যশোর জংশন থেকে ট্রেন দিতে হবে। আন্তঃনগর ট্রেনে সুলভ বগি এবং ফুল, মাছ ও সবজিবাহী বগি (ভেন্ডার) যোগ করতে হবে। ট্রেনের ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নামাতে হবে। নিবন্ধনের বাইরেও টিকিট প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং সিনিয়র সিটিজেনদের টিকিট প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার রাখতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে দর্শনা থেকে খুলনা পর্যন্ত ডাবল লাইন স্থাপন করতে হবে।
বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক কৃতী খেলোয়াড় কাওসার আলীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিনের পরিচালনায সমাবেশে বক্তব্য দেন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হারুণ অর রশিদ, শ্রমিক নেতা মাহবুবুর রহমান মজনু, যশোর কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাক হোসেন শিম্বা, সংগ্রাম কমিটির নেতা আমিনুর রহমান হিরু, ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, জিল্লুর রহমান ভিটু, ইঞ্জিনিয়ার নুরুল ইসলাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন, তসলিমুর রহমান, ইলাহদাদ খান, আমিনুল ইসলাম শাহীন, শহিদুল ইসলাম লাল্টু, বিথীকা সরকার, শরিফুজ্জামান আগা খান প্রমুখ। দাবি উপস্থাপন করেন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান মিলন।
দাবি সংবলিত বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, যশোর-ঢাকা ট্রেনের এই ন্যায়সঙ্গত দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়িত না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেবেন। প্রয়োজনে কাফনের কাপড় পরে রেললাইনে আত্মাহুতি দেবেন।