প্রতারণা বন্ধে কঠোর হতে হবে

0

ডেসটিনি ও যুবকসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ও সমিতির নামে টাকা আত্মসাতের আলোচিত ঘটনার পরও ঘটছে প্রতারণা। সহজ-সরল মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার ঘটনা দেশের জেলা, উপজেলাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাঝেমধ্যেই খবর হচ্ছে। আশ্বাস-প্রলোভন দিয়ে সহজ-সরল মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের খবর আসে গণমাধ্যমে। ঢাকার একটি পত্রিকায় প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, নরসিংদীতে শাহ সুলতান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান অন্তত পাঁচ হাজার সদস্যের ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
এদের প্রতারণার কৌশলটি ছিল অন্যদের চেয়ে আলাদা। প্রথমে তারা সবাইকে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে সমবায় সমিতির সদস্য করে। এরপর ধর্মপ্রাণ মানুষকে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ করে। এ পদ্ধতিতে সুদমুক্ত বিনিয়োগে বেশি পরিমাণে লাভ হবে বলেও আশ্বস্ত করে তারা। তাদের সাজানো গোছানো কথায় বিশ্বাস করে বিনিয়োগ করলেও হাজার হাজার সদস্য পাননি সেই মুনাফা।
বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে মানুষের টাকা আত্মসাতের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না, বরং দিন দিন বাড়ছে। সমবায় প্রতিষ্ঠানের নামের শেষে ব্যাংক শব্দটি ব্যবহার করে, মাল্টিপারপাস কম্পানি বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং ব্যবসার নামেও হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। সরকারের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতামূলক অভিযান না থাকায় বেশি মুনাফার লোভে প্রতারকদের ফাঁদে পা দিচ্ছে মানুষ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এই ঘটনাগুলো দিন দিন ব্যাপক আকার ধারণ করছে। তাঁরা মনে করেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে যাদের সম্পৃক্ততা আছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা যদি নেওয়া যায় তাহলে এ প্রবণতা কিছুটা হলেও কমে আসবে। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর উচিত, এগুলোকে শক্ত হাতে দমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের প্রতারণামূলক ব্যবসা খুলে বসতে না পারে। প্রতারণার কবল থেকে সাধারণ মানুষকে বিরত রাখতে প্রয়োজনে সারা দেশে জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন জোরদার করার উচিৎ। কারণ, সবাই জানে
সরকারের নিয়ন্ত্রণের চেয়ে বড় বিষয় জনগণের সচেতনতা। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে অবশ্যই সবার আগে তৎপর হতে হবে। খুঁজে বের করতে হবে প্রতারকদের। আইনের কঠোর প্রয়োগে দ্ষ্টৃান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে তাদেরই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।