শিক্ষা দ্রুত ফিরুক নিজস্ব নিয়মে

0

করোনাভাইরাস মহামারিতে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর প্রাণ ফিরল স্কুল-কলেজে। সশরীরে শুরু হলো ক্লাস। শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা শেষ হলো। ১২ সেপ্টেম্বর রবিবার শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাল দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। সাজানো হয়। কিভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলবে, কিভাবে ক্লাস নেওয়া হবে তার একটি নির্দেশনা আগেই দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষকে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখা, প্রতিষ্ঠানের সব কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ, আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, ওয়াশরুম নিয়মিত পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে, নির্দেশনা অনুযায়ী সবারই প্রথম দিনে স্কুলে ফেরা হয়নি। একেক দিন একেক শ্রেণির ক্লাস হবে। এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থী, পঞ্চম, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির প্রতিদিন এবং প্রথম থেকে চতুর্থ ও ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে সপ্তাহে এক দিন ক্লাস নেওয়া হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিন ফুট দূরত্ব রেখে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। শ্রেণি অনুযায়ী আলাদা আলাদা দিন শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে আনা হবে। হাত ধোয়া ও তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে স্কুলগুলোকে। এ ছাড়া পাঠদান চলবে সংক্ষিপ্ত পাঠক্রমের মাধ্যমে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ, প্রস্থান ও অবস্থানের সময় স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের মতো কোনো বিষয় যেন না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। স্কুল-কলেজে কেউ মাস্ক ছাড়া ঢুকতে পারবে না। নতুন রুটিন তৈরি করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আপাতত অ্যাসেম্বলি বা সমাবেশ বন্ধ থাকবে এবং প্রতিদিন নির্ধারিত চেকলিস্ট অনুযায়ী তথ্য পাঠাতে হবে।
দেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই দেখা গেছে স্কুলের গেটে দুই পাশে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিক্ষক আর কর্মচারীরা। শিক্ষার্থীরা প্রবেশের সময় তাদের তাপমাত্রা মাপা হয়েছে। সবাইকে স্বাগত জানানো হয়েছে একটি করে লাল গোলাপ দিয়ে। আবার দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন একটি কক্ষ অপরিষ্কার থাকায় রাজধানীরই একটি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত বছরের এপ্রিল থেকেই টেলিভিশনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ক্লাস প্রচার শুরু হয়। এরপর বড় স্কুল-কলেজগুলো এবং পরে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও অনলাইনে ক্লাস শুরু করে। করোনা মহামারির আগে ‘অনলাইন ক্লাস’ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভাবনায়ই ছিল না। শিক্ষকরা এখন খুব সহজেই জুমসহ নানা মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন। অনলাইনে পরীক্ষাও নিচ্ছেন, যা বাংলাদেশের শিক্ষকদের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা। এতে অবশ্য স্কুলের নিয়মিত শিক্ষার ঘাটতি পূরণ হয়নি। তবে মেধাবীরা বইয়ের সাথে সংযুক্ত ছিলো। যা হোক আমরা চাই, ধীরে ধীরে শিক্ষা ব্যবস্থা দ্রুত ফিরে আসুক নিজস্ব নিয়মে।