পানির স্তর নেমে শরণখোলায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট

0

নজরুল ইসলাম আকন,শরণখোলা (বাগেরহাট) ॥ শরণখোলায় ৫৮৭টি পিএসএফের মধ্যে মাত্র ১৪৭ টি চালু রয়েছে । গ্রামাঞ্চলের প্রায় ৫ হাজার টিউবয়েলের মধ্যে তিন হাজার অকেজো হয়ে আছে । চলোমান অনাবৃষ্টির কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পিএসএফ সংশ্লিষ্ট অনেক পুকুরে পানি শূন্যতা দেখা দিয়েছে । এ ছাড়াও ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার ইউনিট ন্যানো ফিল্ট্রেশন প্রকল্পের তিন কোটি ৬৬ লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১৮ ন্যানো ফিল্টারের অধিকাংশই অকেজো হয়ে আছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানুষ ময়লা ও দূষিত পানি পান করে ডায়রিয়া ও কলেরাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে । প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে। স্থানীয়রা দ্রুত ন্যানো ন্যানোফিল্ট্রেশন ইউনিটগুলো চালুসহ নষ্ট পিএসএফ মেরামত ও পুকুর খনন করে পানি সংকট সমাধানের দাবি জানিয়েছেন ।
২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর শরণখোলা উপজেলায় শতভাগ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ১৮টি ন্যানো ফিল্টার প্লান্ট স্থাপন করে। প্রতিটি পানি শোধনাগার ইউনিটের(প্লান্ট) নির্মাণ খরচ হয়েছে ২০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। উপজেলার সাউথখালী ও ধানসাগর ইউনিয়নে পাঁচটি করে ১০টি এবং রায়েন্দা ও খোন্তাকাটা ইউনিয়নে চারটি করে ৮টি ইউনিট চালু করা হয়। প্লান্টগুলো সচল রাখার জন্য প্রকল্প এলাকায় ব্যবস্থাপনা কমিটি করে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতে এর অধিকাংশেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও তারা আমলে নিচ্ছেন না বলে ব্যবস্থাপনা কমিটির কারো কারো অভিযোগ। এছাড়া এ অঞ্চলের চলমান খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে অধিকাংশ পুকুরের পানির স্তর তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। সুন্দরবন তীরবর্তী গ্রামগুলোর প্রায় পুকুরই শুকিয়ে গেছে। স্থানীয় নদী খালের পানিও লবণাক্ত। ফলে দূরদূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে নারী পুরুষসহ শিশুদেরকে । পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে । জনসাধারণ শুকিয়ে যাওয়া পুকুর পুনঃখনন, রেইন হার্ভেস্টিং প্লান্ট স্থাপন,নষ্ট হয়ে যাওয়া পিএসএফ টিউবওয়েল ও ন্যানো ন্যানোফিল্ট্রেশন প্লান্ট দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ।
উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মহিউদ্দীন জানান, শরণখোলার অধিকাংশ পুকুরের পানি তলানিতে এসে পৌছেছে। পিএসএফ,টিউবওয়েলসহ পুকুর গুলে জরুরি পুনঃখনন করা দরকার । জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের স্থানীয় ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান জানান, ন্যানো ফিল্টার সচল রাখার ক্ষেত্রে স্থানীয় ফিল্টার ম্যানেজমেন্ট কমিটির গাফিলতি রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অতি খরায় শরণখোলাসহ উপকূলীয় এলাকায় প্রতিবছরই পানির সংকট তীব্র হয়েছে। পিএসএফসহ অন্যান্য পানি শোধনাগারগুলো দ্রুত সংস্কার করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি ।