ক্রিকেটে অম্ল-মধুর একটি বছর কাটালো বাংলাদেশ

0

ইমাম হোসাইন সোহেল॥ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ২০২১ সালটা কেমন কাটিয়েছে? প্রশ্নটা করলে যে কেউ চোখ বন্ধ করে বলে দেবে, খুবই ব্যর্থ। কথায় বলে শেষ ভালো যার সব ভালো তার। সারা বছর যেমনই কাটাক, বছরের শেষের অংশটা বাংলাদেশের মোটেও ভালো কাটেনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজ- দুটিতেই চরমভাবে ব্যর্থ বাংলাদেশ। কিন্তু পুরো বছরের পারফরম্যান্স বিচার করলে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স তুলনামূলক অনেক ভালোই কেটেছে। সে হিসেবে বলতেই পারি, ক্রিকেটে অম্ল-মধুর একটি বছর কাটিয়েছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে আশার খবর হলো ২০২১ সালে ওয়ানডেতে ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি ম্যাচ জেতেনি আর কোনো দল। বছরের শেষটা হলো একটি সুখবর এবং একটি দুঃসংবাদের মধ্য দিয়ে। সুখবর হলো, আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের তালিকায় মনোনীত হয়েছেন সাকিব আল হাসান। দুঃসংবাদ হলো, যুব এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে ভারতের কাছে হেরে যেতে হয়েছে বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলকে।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি জয়
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দাপটে ২০২১ সালে খুব বেশি ওয়ানডে খেলা হয়নি। ২০২১ সালে ওয়ানডে হয়েছে সব মিলিয়ে মোট ৭৩টি। যেখানে সবচেয়ে বেশি ১৫ ম্যাচ খেলেছে শ্রীলঙ্কা। তাদের পরে রয়েছে ১৪ ম্যাচ খেলা আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশ খেলেছে ১২টি ম্যাচ। এছাড়া ২০২১ সালে ন্যুনতম ১০টি ওয়ানডে খেলেছে ওমান ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এ বছর খেলা ১২ ওয়ানডের মধ্যে ৮টিতে জিতেছে বাংলাদেশ দল। হেরেছে বাকি চার ম্যাচ। মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে তিনটি ও ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার কাছে পরাজয় এক ম্যাচে। এর বাইরে জিম্বাবুয়ে সফরে তিনটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজে তিনটি ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জিতেছে দুই ম্যাচে। সবচেয়ে বেশি ১৫টি ম্যাচ খেলা শ্রীলঙ্কা হেরেছে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ। তারা পরাজয়ের তেতো স্বাদ পেয়েছে ১০টি ম্যাচে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবি
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলতে গিয়েছিলো ওমান এবং আরব আমিরাতে। বিশ্বকাপের আগে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪-১ এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ জয় বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস যেন তুঙ্গে তুলে দিয়েছিল। তামিম ইকবাল দলে না থাকার পরও কোচ-অধিনায়ক থেকে শুরু করে বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজমেন্টের অনেকেই সেমিফাইনালে খেলার প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছিলেন। কিন্তু বাছাই পর্বে যে বাংলাদেশকে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে পারে, সে হিসাব-নিকাশ করেনি কেউ। কারণ, বাছাই পর্বের দলগুলোকে হয়তো গোনায়ও আনেনি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। পাপুয়া নিউগিনি না হয় নবাগত, স্কটল্যান্ড এবং ঘরের মাঠে ওমানও যে চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, সেটা ধারণাতেই আনেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। ফল যা হওয়ার তাই হলো। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই স্কটল্যান্ডের কাছে মানতে হলো লজ্জাজনক হার। ৬ রানের ওই হারের পর সুপার টুয়েলভে খেলাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে যায়। যদিও পরের দুই ম্যাচে ওমান (২৬ রানে) এবং পাপুয়া নিউগিনিকে (৮৪ রানে) হারিয়ে গ্রুপ রানারআপ হিসেবে সুপার টুয়েলভে উঠতে সক্ষম হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। তবে গ্রুপ রানারআপ হওয়ার কারণে হিসেব উল্টে যায় বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের আগে হিসেব ছিল আফগানিস্তান, বাছাই পর্বে অন্য গ্রুপ থেকে উঠে আসা একটি সহজ দল এবং নিউজিল্যান্ড, ভারত কিংবা পাকিস্তান- এই তিন দলের একটি হারাতে পারলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হতো বাংলাদেশের। কিন্তু গ্রুপ ‘বি’ থেকে রানারআপ হওয়ায় গ্রুপ-১ এ শক্তিশালী দলগুলোর সামনে পড়ে যায় বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৭১ রান করে জয়ের সম্ভাবনা জানিয়ে তুললেও ক্যাচ মিসের মহড়া দিয়ে জয় বঞ্চিত হতে হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের। দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে (৮ উইকেটে) পরাজয়ের পর তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রায় জিতে যাচ্ছিল টাইগাররা। কিন্তু ক্যারিবীয়দের ১৪২ রানের জবাবে বাংলাদেশ থেমে যায় ১৩৯ রানে। পরাজয় মাত্র ৩ রানে। শেষ দুই ম্যাচে তো করুণ পরিণতি। ইনজুরির কারণে ছিটকে যান সাকিব আল হাসান। দলের ওপর এর প্রভাবও পড়ে ভালোভাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অলআউট হয়ে যায় মাত্র ৮৪ রানে। জবাবে প্রোটিয়ারা ১৩.৩ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করে জেতে ৬ উইকেটের ব্যবধানে। শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অলআউট মাত্র ৭৩ রানে। মাত্র ৩৮ বল খেলে ২ উইকেট হারিয়ে ৮ উইকেটের ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
এক নজরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ৮ ম্যাচের ফল
প্রথম পর্ব
১ম ম্যাচ : স্কটল্যান্ড: ১৪০/৯, বাংলাদেশ: ১৩৪/৭, ফল: স্কটল্যান্ড ৬ রানে জয়ী।
২য় ম্যাচ : বাংলাদেশ: ১৫৩/১০, ওমান: ১২৬/৯, ফল: বাংলাদেশ ২৬ রানে জয়ী।
৩য় ম্যাচ : বাংলাদেশ: ১৮১/৭, পাপুয়া নিউ গিনি: ৯৭/১০, ফল: বাংলাদেশ ৮৪ রানে জয়ী।
সুপার টুয়েলভে
প্রথম ম্যাচ: বাংলাদেশ: ১৭১/৪, শ্রীলঙ্কা : ১৭২/৫, ফল: ৫ উইকেটে শ্রীলঙ্কার জয়।
দ্বিতীয় ম্যাচ: বাংলাদেশ: ১২৪/৯, ইংল্যান্ড: ১২৬/২, ফল: ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী।
তৃতীয় ম্যাচ: ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৪২/৭, বাংলাদেশ: ১৩৯/৫, ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ রানে জয়ী।
চতুর্থ ম্যাচ: বাংলাদেশ: ৮৪/১০, দক্ষিণ আফ্রিকা: ৮৬/৪, ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে জয়ী।
পঞ্চম ম্যাচ: বাংলাদেশ: ৭৩/১০, অস্ট্রেলিয়া: ৭৮/২, ফল: অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজ
ওয়ানডেতে প্রত্যাশিত জয়
বছরের প্রথম মাসেই ছিল ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজ। সফরে ক্যারিবীয়রা অংশ নেয় ৩ ম্যাচের ওয়ানডে এবং ২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে। ২০ জানুয়ারি শুরু হয় ওয়ানডে সিরিজ। প্রথম ম্যাচে সাকিব আল হাসান, হাসান মাহমুদ আর মোস্তাফিজুর রহমানের সাঁড়াসি বোলিংয়ে ক্যারিবীয়দের ১২২ রানে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। জবাবে ৩৩.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। টাইগারদের জয় ৬ উইকেটে। দ্বিতীয় ম্যাচেও ক্যারিবীয়দের ব্যাটিং বিপর্যয়। প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৪৮ রানে অলআউট তারা। মিরাজ নেন ৪ উইকেট। জবাবে তামিমের হাফ সেঞ্চুরিতে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৩.২ ওভারে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে টাইগাররা। তামিমের ৬৪, সাকিবের ৫১, মুশফিকের ৬৪ এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অপরাজিত ৬৪ রানের ওপর ভর করে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ২৯৭ রান। তামিম-মুশফিক-রিয়াদের একই স্কোর কিছুটা কাকতালীয়ই বটে। জবাবে ৪৪.২ ওভারে ১৭৭ রানে অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জয় ১২০ রানের ব্যবধানে।
টেস্টে অপ্র্যতাশিত হার
ওয়ানডে সিরিজের পর টেস্ট সিরিজ। এই সিরিজে উল্টো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৪৩০ রান করেও শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় হার মানতে বাধ্য হয় টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে ১৭১ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ২২৩ রান। জয়ের জন্য ক্যারিবীয়দের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৯৫ রানের। অসম্ভব লক্ষ্য। কাইল মায়ার্সের অতিমানবীয় অপরাজিত ২১০ রানের ওপর ভর করে ৩ উইকেটে জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও একের পর এক ক্যাচ মিস এবং দুর্বল নেতৃত্বকেই এই হারের জন্য দায়ী করা হয়। চট্টগ্রামে অপ্রত্যাশিত হারের পর ঢাকায় দাঁড়াতেই পারেনি টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে তুলে নেয় ৪০৯ রান। বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায় ২৯৬ রানে। প্রথম ইনিংসেই ক্যারিবীয়রা এগিয়ে যায় ১১৩ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে সফরকারীদের ১১৭ রানে অলআউট করে দিলে বাংলাদেশের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৩১ রানের। এই রানও করতে পারেনি বাংলাদেশ। অলআউট হয়ে যায় ২১৩ রানে। পরাজয় মেনে নিতে হয় মাত্র ১৭ রানের ব্যবধানে।
নিউজিল্যান্ড সফরে ভরাডুবি
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পর বাংলাদেশের মিশন ছিল নিউজিল্যান্ড সফর। মার্চ-এপ্রিলে বাংলাদেশ ৩টি করে ম্যাচের ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড সফরে যায়। বরাবরের মতই দুই সিরিজেই ভরাডুবি ঘটে টাইগারদের। তামিম ইকবালের নেতৃত্বে শুরুতেই ওয়ানডে সিরিজ। ২০ মার্চ ডানেডিনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৩১ রানে অলআউট বাংলাদেশ। জবাবে ২১.২ ওভারেই ২ উইকেট হারিয়ে (৮ উইকেটের ব্যবধানে) জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ২৩ মার্চ ক্রাইস্টচার্চে। এই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটাররা একটু সাহস দেখাতে পেরেছিলো। তামিম ইকবালের ৭৮ এবং মোহাম্মদ মিঠুনের ৭৩ রানের ওপর ভর করে ২৭১ রান সংগ্রহ করেছিল টাইগাররা। কিন্তু ডেভন কনওয়ের ৭২ এবং টম ল্যাথামের অপরাজিত ১১০ রানের ওপর ভর করে কিউইরা ম্যাচ জিতে নেয় ৫ উইকেটের ব্যবধানে। তৃতীয় ম্যাচে আবারও প্রথম ম্যাচের মত একই দশা। ডেভন কনওয়ের ১২৬, ড্যারিল মিচেলের অপরাজিত ১০০ রানের ওপর ভর করে কিউইরা সংগ্রহ করে ৩১৮ রান। জবাবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অপরাজিত ৭৬ রান করলেও বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায় ১৫৪ রানে। অর্থ্যাৎ অন্য ব্যাটাররা দাঁড়াতেই পারেনি। শেষ ম্যাচে ১৬৪ রানে হারের পাশাপাশি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো ৩-০ ব্যবধানে। এরপর শুরু হলো টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তামিম ইকবাল আগেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে সরে দাঁড়ালেন। ২৮ মার্চ প্রথম ম্যাচে সেই ডেভন কনওয়ের টর্নেডো ব্যাটিংয়ে ২১০ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে যেতে পারলো ১৪৪ রান পর্যন্ত। প্রথম ম্যাচে পরাজয় ৬৬ রানে। বৃষ্টিবিঘ্নিত দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ১৭.৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তুললো ১৭৩ রান। বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬ ওভাওে ১৭১। ৭ উইকেটে করে ১৪২ রান তোলে বাংলাদেশ। ডিএল মেথডে পরাজয় ২৮ রানে। ১ এপ্রিল অকল্যান্ডে শেষ ম্যাচটিও ছিল বৃষ্টি বিঘ্নিত। যে কারণে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমিয়ে আনা হয় ১০ ওভারে। নিউজিল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৪১ রান। জবাবে ৯.৩ ওভারে বাংলাদেশ অলআউট ৭৬ রানে। টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগাররা।
শ্রীলঙ্কার সফরে টেস্ট সিরিজে পরাজয়
এপ্রিল এবং মে মাসে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সফর বিনিময় করে বাংলাদেশ। প্রথমে শ্রীলঙ্কা গিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলে আসে টাইগাররা। যেটা ছিল বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। এরপর শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশে আসে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে। ওয়ানডে সিরিজ ছিল আইসিসি ওয়ার্ল্ড সুপার লিগের অংশ। এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা গিয়ে প্রথমে টেস্ট সিরিজ খেলে আসে বাংলাদেশ। ২১ এপ্রিল পাল্লেকেলেতে শুরু হয় প্রথম টেস্ট। প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের ৯০ রানের পর ওয়ানডাউনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত খেলেন ১৬৩ রানের অনবদ্য এক ইনিংস। মুমিনুলও খেলেন ১২৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৬৮ রানে। লিটন করেন ৫০ রান। ৭ উইকেটে বাংলাদেশ ৫৪১ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। শ্রীলঙ্কাও কম যায়নি। অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নের ২৪৪ রান এবং ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ১৬৬ রানের ওপর ভর করে তারা ৮ উইকেটে ৬৪৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ২ উইকেট হারিয়ে ১০০ রান করার পরই ম্যাচ শেষ হয়ে যায়। তামিম করেন ৭৪ রান। ফলাফল, ম্যাচ ড্র। একই মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিংয়ে দৈন্যদশা বাংলাদেশের ব্যাটারদের। শ্রীলঙ্কা প্রথমে ব্যাট করে সংগ্রহ করে ৪৯৩ রান। জবাবে বাংলাদেশ অলআউট ২৫১ রানে। ২৪২ রানে এগিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কানরা দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রানে। বাংলাদেশের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৩৭ রানের। কিন্তু টাইগাররা অলআউট হয়ে গেলো ২২৭ রানে। বাংলাদেশের পরাজয় ২০৯ রানের বড় ব্যবধানে।
ঘরের মাঠে ওয়ানডেতে প্রত্যাশিত সিরিজ জয়
টেস্ট সিরিজ শেষ হওয়ার পর মে মাসে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে প্রথম ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে তোলে ২৫৭ রান। জবাবে শ্রীলঙ্কা অলআউট ২২৪ রানে। ৩৩ রানে জয় বাংলাদেশের। দ্বিতীয় ম্যাচেও বাংলাদেশ প্রথমে সংগ্রহ করে ২৪৬ রান। বৃষ্টির কারণে শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য বেধে দেয়া হয় ৪০ ওভারে ২৪৫ রান। লঙ্কানরা ৯ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৪১ রান। বাংলাদশের জয় ১০৩ রানে। তৃতীয় ম্যাচে এসে হেরে যায় বাংলাদেশ। লঙ্কানরা প্রথমে ব্যাট করে সংগ্রহ করে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান। জবাবে বাংলাদেশ ৪২.৩ ওভারে অলআউট হয়ে যায় ১৮৯ রানে। ৯৭ রানে হেরে যায় তামিম ইকবাল বাহিনী।
জিম্বাবুয়ে সফরে প্রথম ট্রেবল অর্জন এবং শততম টি-টোয়েন্টি জয়
এবারের জিম্বাবুয়ে সফরে তিন ফরম্যাটের সিরিজেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি – এই তিন সিরিজে জয় তুলে নিয়ে প্রথম একই সফরে তিন ফরম্যাটে সিরিজ জয়ের দেখা পেলো বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের সিরিজ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাহমুদউল্লাহর অপরাজিত ১৫০ রানের ওপর ভর করে ৪৬৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে অলআউট ২৭৬ রানে। ১৯২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১ উইকেটে ২৮৪ রানে ইনিংস ঘোষণা করেন মুমিনুল হক। সাদমান এবং নাজমুল হোসেন শান্ত দু’জনই করেন সেঞ্চুরি। ৪৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৫৬ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ২২০ রানের বড় জয় তুলে নেয় টাইগাররা। ওই টেস্ট ম্যাচটাই ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচ। এরপর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। প্রথম ম্যাচে ২৭৬ রান করার পর জিম্বাবুয়ে অলআউট হয়ে যায় ১২১ রানে। বাংলাদেশের জন্য ১৫৫ রানের ব্যবধানে। দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিকরা প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তোলে ২৪০ রান। জবাবে বাংলাদেশ ৪৯.১ ওভারে জয় তুলে নেয় ৩ উইকেটের ব্যবধানে। শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ে সংগ্রহ করে ২৯৮ রান। জবাব দিতে নেমে তামিমের অসাধারণ সেঞ্চুরির (১১২) ওপর ভর করে ২ ওভার হাতে রেখেই ৫ উইকেটের ব্যবধানে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। বাংলাদেশ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ১৫২ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ জিতে নেয় ৮ উইকেটের ব্যবধানে। এই ম্যাচ জয়ের মধ্য দিয়ে ওয়ানডে এবং টেস্টেও পর শততম টি-টোয়েন্টিতেও জয়ের দেখা পেলো বাংলাদেশ। শততম ওয়ানডেতে ভারতকে, টেস্টে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছিল টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ে হারিয়ে দেয় ২৩ রানে। জিম্বাবুয়ের ১৬৬ রানের জবাবে বাংলাদেশ অলআউট ১৪৩ রানে। শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ে সংগ্রহ করে ১৯৩ রানের বিশাল স্কোর। বাংলাদেশ ৪ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়।
অস্টেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ও সিরিজ জয়
জিম্বাবুয়ে সফর শেষ করে এসে বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ ম্যাচ করে মোট ১০ ম্যাচের ২টি সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। প্রথমে অস্ট্রেলিয়া। যাদের বিপক্ষে এর আগে কখনোই টি-টোয়েন্টি জেতেনি। সিরিজ তো দুরে থাক। কিন্তু খর্বশক্তির অস্ট্রেলিয়াকে পেয়ে বাংলাদেশ জয় তুলে নেয় ৪-১ ব্যবধানে। প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি ঐতিহাসিক সিরিজও জিতে নেয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। নিয়মিত দলের ৭-৮জন বাংলাদেশে আসেনি অসিদের। নেতৃত্বের ভার দেয়া হয় ম্যাথ্যু ওয়েডের কাঁধে। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথম ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে করে ১৩১ রান। জবাবে অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয়ে যায় ১০৮ রানে। বাংলাদেশ জিতে গেলো ২৩ রানের ব্যবধানে। এই জয়ের মধ্য দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম জয় পেলো বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেট হারিয়ে করেছিল ১২১ রান। ৫ উইকেট হারিয়েই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান তোলে স্কোরবোর্ডে। অস্ট্রেলিয়া ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ১১৭ রান। বাংলাদেশের জয় ১০ রানে। সে সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় করে নেয় টাইগাররা। এরপর চতুর্থ ম্যাচে এসে স্বান্তনার জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ম্যাথ্যু ওয়েডের দল। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের করা ৮ উইকেটে ১২২ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয়ে যায় ৬২ রানে। বাংলাদেশ ৬০ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও প্রথম সিরিজ জয়
অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ পরাজয়ের পর বাংলাদেশ সফরে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে আসলো নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের জন্য যে সব ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছিল তাদের কেউ ছিল না বাংলাদেশে সফরকারী দলে। এই দলটিকে পেয়ে কিউইদের বিপক্ষেও প্রথমবারেরমত টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচ জয় এবং সিরিজও জিতে নেয় বাংলাদেশ। এবার টাইগারদের জয়ের ব্যবধান ছিল ৩-২।
সংক্ষেপে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজ
প্রথম ম্যাচ: নিউজিল্যান্ড ৬০, বাংলাদেশ: ৬২/৩, ফল: ৭ উইকেটে বাংলাদেশের জয়।
দ্বিতীয় ম্যাচ: বাংলাদেশ ১৪১/৬, নিউজিল্যান্ড ১৩৭/৫, ফল: ৪ রানে বাংলাদেশের জয়।
তৃতীয় ম্যাচ: নিউজিল্যান্ড ১২৮/৫, বাংলাদেশ ৭৬/১০, ফল: নিউজিল্যান্ড ৫২ রানে জয়ী।
চতুর্থ ম্যাচ: নিউজিল্যান্ড ৯৩/১০, বাংলাদেশ ৯৬/৪, ফল: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।
পঞ্চম ম্যাচ: নিউজিল্যান্ড ১৬১/৫, বাংলাদেশ ১৩৪/৮, ফল: নিউজিল্যান্ড ২৭ রানে জয়ী।
পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজ
বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর নিঃশ্বাস ফেলারও ফুরসত ছিল না। না বাংলাদেশের না পাকিস্তানের। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায়ের পরপরই নিজেদের দেশে ফেরত না গিয়ে আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশ সফরে চলে আসে পাকিস্তান। প্রথমেই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। উড়তে থাকা পাকিস্তানের সামনে টি-টোয়েন্টিতে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। তিন ম্যাচেই হলো শোচনীয় পরাজয়।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজ
প্রথম ম্যাচ: বাংলাদেশ ১২৭/৭, পাকিস্তান ১৩২/৬, ফল: পাকিস্তান ৪ উইকেটে জয়ী।
দ্বিতীয় ম্যাচ: বাংলাদেশ ১০৮/৭, পাকিস্তান ১০৯/২, ফল: পাকিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী।
তৃতীয় ম্যাচ: বাংলাদেশ ১২৪/৭, পাকিস্তান ১২৭/৫, ফল: পাকিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী।
শুরু হলো বাংলাদেশের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এবং শোচনীয় পরাজয়
৩-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজের হারের পর শুরু হলো ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় আসরে প্রথম সিরিজ বাংলাদেশের। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩৩০ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ করে মাত্র ১৫৭ রান। প্রথম ইনিংসে ৪৪ রানের লিড নিয়েও বাংলাদেশকে হারতে হলো ৮ উইকেটের ব্যবধানে। ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্টের অর্ধেকেরও বেশি সময় ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। বাকি সময়েও বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ও ৮ রানের ব্যবধানে। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান করেছিল ৩০০ রান। বাংলাদেশ ৮৭ রানে অলআউট হওয়ার পর ফলোঅনে পড়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৫ রান করে অলআউট হয়ে যায়। শেষ দিন আর মাত্র ২৫ মিনিট উইকেটে থাকতে পারলেই ম্যাচ ড্র করা সম্ভব ছিল বাংলাদেশের।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান টেস্ট সিরিজ
প্রথম ম্যাচ: বাংলাদেশ: ৩৩০/১০ ও ১৫৭/১০, পাকিস্তান: ২৮৬/১০, ২০৩/২, ফল: পাকিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী।
দ্বিতীয় ম্যাচ: পাকিস্তান ৩০০/৪ (ডি.), বাংলাদেশ: ৮৭/১০ ও ২০৫/১০, ফল: পাকিস্তান ইনিংস ও ৮ রানে জয়ী।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন আবাহনী
ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট আসর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) এ বছর আয়োজন করা হয় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। ঘরোয়া ব্যস্ত সূচি এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখেই ৩১ মে থেকে শুরু হয় ডিপিএলের ৪৩তম আসর। লিগের প্রথম পর্ব এবং সুপার লিগ পর্বে দারুণ লড়াই জমে উঠেছিল। জমজমাট লড়াই শেষে শেষ হাসি হাসলো আবাহনী লিমিটেড। মোট কথা ফরম্যাট বদল হলেও চ্যাম্পিয়নের নাম বদল হয়নি। আগের দুই আসরের মত এবারও শিরোপা জয়ের হ্যাটট্রিক করে ফেলে আবাহনী। লিগে নিজেদের শেষ ম্যাচে ৮ রানে প্রাইম ব্যাংকে হারিয়ে শিরোপা উল্লাসে মেতে ওঠে আবাহনী। প্রাইম ব্যাংক হয়েছে রানার্সআপ এবং প্রাইম দোলেশ্বর হয়েছে তৃতীয়। এ নিয়ে ডিপিএলে ২১তম শিরোপা জিতে নিয়েছে ধানমন্ডির ক্লাবটি।
জাতীয় ক্রিকেট লিগে সেরা ঢাকা বিভাগ
ঘরোয়া ক্রিকেট হলেও জাতীয় ক্রিকেট লিগের আন্তর্জাতিক মর্যাদা রয়েছে। প্রতিষ্ঠিত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট লিগ এটি। যে কারণে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) চেয়ে কোনো অংশে কম নয় জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল)। এবারের লিগে শেষ হাসি হেসেছে ঢাকা বিভাগ। ২০১৩-১৪ মৌসুম তথা ৭ বছর পর প্রথম জাতীয় লিগের শিরোপা জিতলো ঢাকা। সবমিলিয়ে এটা তাদের ৬ষ্ঠ শিরোপা। শিরোপা জয়ের জন্য শেষ ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে অবশ্যই জয়ের প্রয়োজন ছিল ঢাকার। চতুর্থ ও শেষ দিনে খুলনাকে ১৭৯ রানে হারিয়ে শিরোপা জয় করে ঢাকা। ঢাকার ছুঁড়ে দেয়া ৩৭৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে খুলনা অলআউট হয় ১৯৯ রানে। মার্চ মাসে শুরু হয়েছিল জাতীয় ক্রিকেট লিগ। দুই রাউন্ড হওয়ার পর করোনার কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়। করোনার পর আবার লিগ শুরু হলে শেষ পর্যন্ত জয়ের মুকুট পরলো ঢাকা। প্রথম স্তরে তারা সর্বোচ্চ ৩৫.২৯ পয়েন্ট অর্জন করে। শেষ ম্যাচে সিলেটের সঙ্গে ড্র করায় ৩১.৭৪ পয়েন্ট নিয়ে রানারআপ হয় রংপুর বিভাগ। এবারের লিগে বাজে ফল করায় দ্বিতীয় স্তরে নেমে গেছে খুলনা। ৬ ম্যাচে মাত্র ১ জয়, ২ ড্র এবং ৩ পরাজয়ে পয়েন্ট টেবিলে তারা ছিল তলানীতে, ১৯.৮২। খুলনা নেমে যাওয়ায় দ্বিতীয় স্তর থেকে প্রথম স্তরে উঠে এসেছে চট্টগ্রাম। দ্বিতীয় স্তরে ৬ ম্যাচে ২ জয়, ২ হার এবং ২ ড্রয়ে সর্বোচ্চ ৩১.৬০ পয়েন্ট পেয়েছে চট্টগ্রাম।
মাঠে গড়ালো বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল)
করোনাভাইরাসের কারণে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ২০২০-২১ মৌসুম মাঠে গড়ায়নি। তবে ১২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় ২০২১-২২ মৌসুমের খেলা। নবম আসরের প্রথম রাউন্ডে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দু’বারের চ্যাম্পিয়ন ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন এবং বিসিবি নর্থ জোন। অন্যদিকে রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় বিসিবি সাউথ জোন ও ইসলামী ব্যাংক ইস্ট জোন। ১৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় রাউন্ডের লড়াই। তৃতীয় ও শেষ রাউন্ড মাঠে গড়ায় ২৬ ডিসেম্বর। এই রাউন্ডের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হলো ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল এবং বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের ফাইনাল। ২ থেকে ৬ জানুয়ারি মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে এবারের আসরের ফাইনাল।
প্রথমবারের মতো নারী বিশ্বকাপে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের জন্য ঐতিহাসিক একটি দিন ছিল ২৭ নভেম্বর। এদিন প্রথমবারের মত নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। ২০২২ সালের মার্চ এবং এপ্রিলে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য ১০ দলের এই বিশ্বকাপে খেলবে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা। করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রণের প্রভাবে জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেতে শুরু হওয়া ৯ দলের বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব বাতিল ঘোষণা করে আইসিসি। যার ফলে আইসিসি বিশ্বকাপে খেলার জন্য তিনটি দল বাছাই করতে দ্বারস্থ হয়েছে র্যাংকিংয়ের। বাংলাদেশ ছিল র্যাংকিংয়ের ৫ নম্বর দল। সে কারণে কোনো জটিলতা ছাড়াই নিগার সুলতানাদের বিশ্বকাপ খেলার জন্য বাছাই করে নেয়া হয়। নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা হয়েছে এর আগে। কিন্তু ওয়ানডে বিশ্বকাপে কখনো খেলা হয়নি বাংলাদেশের। এবার নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে প্রথম খেলবে বাংলাদেশ দল। জিম্বাবুয়েতে অনুষ্ঠিত বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ২৬৯ রানে হারায় যুক্তরাষ্ট্রকে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে এই ম্যাচে দেশের হয়ে ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন শারমিন আক্তার সুপ্তা। ১৪১ বল খেলে ১৩০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। যদিও তৃতীয় ম্যাচে এসে থাইল্যান্ডের কাছে হোঁচট খেয়েছিল। তবুও, ২ জয়ে গ্রুপের শীর্ষেই ছিল নিগার সুলতানারা। র্যাংকিং অনুসারে বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজও।
টেস্ট স্ট্যাটাস পেল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলও
এপ্রিলে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটে বড় এক সুখবর দেয়আইসিসি। এখন থেকে টেস্ট খেলতে পারবেন সালমা খাতুন-জাহানারা আলমরা। আইসিসির এক বৈঠকে পূর্ণ সদস্য দেশের নারী দলকে টেস্ট স্ট্যাটাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছে ২০০০ সালে। প্রায় দুই দশক পার করে নারীরাও ক্রিকেটের কুলীন শ্রেণিতে নাম লেখালো। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে ওয়ানডে স্ট্যাটাস লাভ করার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক আঙিনায় যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের। সাত বছরের মাথায় এসে জেতে এশিয়া কাপের মতো বড় টুর্নামেন্ট। ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ায় টি-টোয়েন্টি ফরমেটের টুর্নামেন্টে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা উৎসবে মাতেন সালমা-জাহানারারা। এবার শুধু ওয়ানডে-টি টোয়েন্টিতে আটকে থাকা নয়, টেস্টও খেলবে বাংলাদেশের নারীরা।
জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করলো নারী ক্রিকেটাররা
বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব শুরুর আগে প্রস্তুতি নিতে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। স্বাগতিক জিম্বাবুয়েকে তিন ম্যাচেই হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ করে নিগার সুলতানা, জাহানারা-সালমারা। শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৭২ রানে অলআউট করে দিয়ে বাংলাদেশ মাত্র ১৮.২ ওভারে ৭ উইকেটের ব্যবধানে জয় তুলে নেয়। এর আগে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৯ উইকেটে এবং প্রথম ওয়ানডেতে ৪৮ রানে স্বাগতিকদের অলআউট করে দিয়ে ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপ ধরে রাখার মিশনে বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দল
বছরের শেষ অংশে এসে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে খেলতে গেলো বাংলাদেশ। ২০২০ সালের বিশ্বকাপ জয় করা দলের দুই সদস্য বাঁ-হাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান ও ডানহাতি পেসার তানজিম হাসান সাকিবকে রাখা হয়েছে ২০২২ বিশ্বকাপের দলেও। এর মধ্যে রাকিবুলকে দেওয়া হয়েছে দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। ডেপুটি হিসেবে থাকছেন বাঁ-হাতি টপঅর্ডার ব্যাটার প্রান্তিক নওরোজ নাবিল। যুব এশিয়া কাপে খেলতে ২০ ডিসেম্বর আরব আমিরাতে যায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এশিয়া কাপে ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশ মোকাবেলা করে শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং কুয়েতের। ২৪ ডিসেম্বর শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় এশিয়া কাপ। শেষ পর্যন্ত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই সেমিফাইনালে উঠে যায় রাকিবুল হাসানরা। কিন্তু ৩০ ডিসেম্বর শারজায় সেমিফাইনালে ভারতের কাছে বড় পরাজয়ই মানতে বাধ্য হলো বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ১০৩ রানের বড় ব্যবধানে হেরে যেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এশিয়া কাপের পরই যুবা ক্রিকেটাররা ওয়েস্ট ইন্ডিজ চলে যাবে বিশ্বকাপে অংশে নিতে। সেখানে ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী ইংল্যান্ড, কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ১৬ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরু করবে বাংলাদেশ। ২০ জানুয়ারি কানাডা ও ২২ জানুয়ারি আরব আমিরাতের মুখোমুখি হবে তারা। বিশ্বকাপ খেলতে ৩ জানুয়ারি ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবে বাংলাদেশ দল।
টেস্টে টাইগার যুবাদেরও হারিয়েছে আফগানিস্তান
সিনিয়রদের মত জুনিয়রদের টেস্টেও আফগানিস্তানের কাছে হেরে গেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রথমে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটা জিতেছিল দুই ম্যাচ হাতে রেখে। তবে শেষ দুই ম্যাচে ঠিকই টাইগার যুবাদের হারিয়ে দেয় আফগান যুবারা। জয়ের সেই ধারাবাহিকতা তারা ধরে রাখে টেস্টেও। সিলেটে চারদিনের একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে আফগান যুবারা। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের ১৬২ রানে গুটিয়ে দেয় আফগানরা। এরপর নিজেরা তোলে ২৮১ রান। ১১৯ রানের বড় ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে লড়াইয়ে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করে যুবারা। প্রান্তিক নওরোজ নাবিলের ৭৬ আর অধিনায়ক আইচ মোল্লার ৪০ রানে ভর করে দ্বিতীয় ইনিংসে ২২৮ রানে অলআউট হয় তারা। ফলে আফগানিস্তানের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ১১০ রানের। ৭ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় তারা।
তুষার ইমরানের বিদায়, জাতীয় দলের নির্বাচক রাজ্জাক
জাতীয় দলের হয়ে আবদুর রাজ্জাক রাজ সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৮ সালে। সর্বশেষ ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০১৪ সালে। ২০২১ সালের শুরুতেও ছিলেন ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত মুখ। আগের প্রিমিয়ার লিগেও ছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক। অথচ ঘরোয়া ক্রিকেটকে গুডবাই জানানোর আগেই আবদুর রাজ্জাককে জাতীয় ক্রিকেট দলের নির্বাচক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে দিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, হাবিবুল বাশার সুমনের সঙ্গী হলেন রাজ্জাক। বছরের শুরুতে ২৭ জানুয়ারি বিসিবির এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অন্যদিকে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সবচেয়ে সফল ব্যাটার তুষার ইমরান এবার ব্যাট-প্যাড তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। চোটের কারণে জাতীয় ক্রিকেট লিগে সর্বশেষ রাউন্ডের ম্যাচটি খেলতে পারেননি খুলনা বিভাগের অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ২১ নভেম্বর শুরু হয় জাতীয় লিগের শেষ ম্যাচ। ওই ম্যাচেই সাভারের বিকেএসপি মাঠে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় বলেন ৩৭ বছর বয়সী এ তারকা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫ টেস্টে ৮৯ ও ৪১ ওয়ানডে ৫৭৪ রান করেছেন তুষার। তবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৮২ ম্যাচে রেকর্ড ৩২টি সেঞ্চুরি ও ৬৩ ফিফটিতে ৪২.৭৫ গড়ে ১১৯৭২ রান করেছেন তিনি। এছাড়া লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এক সেঞ্চুরি ও ৩০ ফিফটিতে তার সংগ্রহ ৪৪৩৯ রান।

২০৩১ বিশ্বকাপের আয়োজক বাংলাদেশ-ভারত

২০২৪ সাল থেকে পরবর্তী আট বছরের জন্য বিশ্বকাপসহ বিভিন্ন ইভেন্টের আয়োজকের নাম প্রকাশ করেছে ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা আইসিসি। যাতে দেখা যাচ্ছে ২০৩১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজকের মর্যাদা পেয়েছে ভারত এবং বাংলাদেশ। ২০১১ সালের পর ২০ বছর বিরতি দিয়ে আবারও ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার মর্যাদা পাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১১ সালে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথ আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। ২০৩১ সালের বিশ্বকাপের আয়োজক হচ্ছে দুটি দেশ, বাংলাদেশ এবং ভারত। ২০১৪ সালে এককভাবে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক হয়েছিল বাংলাদেশ।
আবারও বিসিবি সভাপতি পাপন
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর অল্প কয়েকদিন আগে, ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ২জন মোট ২৫জন পরিচালক নির্বাচিত হন এই নির্বাচনে। এরপরদিন, ৭ অক্টোবর পরিচালকদের মধ্যে সর্ব সম্মতিতে আগামী চার বছরের জন্য বিসিবি সভাপতি মনোনয়ন করা হয় নাজমুল হাসান পাপনকে। ২০১২ সালে আ হ ম মোস্তফা কামাল আইসিসিতে চলে যাওয়ার পর তিনিই বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মোট ২৫জন পরিচালকের মধ্যে নতুন করে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন ৬জন।