রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া ফুল মানুষকে দিচ্ছে যেন চোখের ও মনের শান্তি!

0

 

শিমুল হাসান,লোহাগড়া (নড়াইল) ॥ বেশ কয়েকদিন ধরে দেশে বিরাজ করছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রাণীকূল অতিষ্ঠ। চাতক পাখির মতো প্রাণীকূল বৃষ্টির অপেক্ষায় আকাশে তাকিয়ে। বিভিন্ন এলাকায় মসজিদ ঈদগাহসহ গ্রামের মাঝে মানুষ বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহর কাছে বিশেষ নামাজ ও দোয়া অব্যাহত রখেছে। প্রচন্ড গরমে জীবন অতিষ্ঠ হলেও প্রকৃতি তার অপরূপে দিচ্ছে কিছুটা স্বস্তি। গ্রীষ্মকালের রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া ফুল মানুষকে দিচ্ছে যেন চোখের ও মনের শান্তি। সবুজ গাছগাছালির মধ্যে যেন প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি আগুনরাঙা এ কৃষ্ণচূড়া।
লোহাগড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশে দেখা মেলে আগুনরাঙা রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া ।  পথিককে ছাঁয়া দেবার পাশাপাশি রক্তরাঙা কৃষ্ণচূড়া ফুল দেয় যেন মন ও চোখের অনাবিল শান্তি। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে বৈশাখের আকাশে কৃষ্ণচূড়া তার রূপ মেলে ধরেছে। চলতে পথে দেখা যায়, বাজারের পাশে, প্রধান সড়কের পাশে, বিভিন্ন শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সামনে বা প্রবেশ গেটে, কখনো বা বাগানের মাঝে, বাসাবাড়ির উঠানে শোভা পাচ্ছে আগুনরাঙা রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া গাছ। কৃষ্ণচূড়া গাছের ডালে ডালে ফুটেছে ফুল। প্রফুল্ল করছে মনকে।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, দিঘলিয়া- তালবাড়িয়া সড়কে দিঘলিয়া বাজার সংলগ্ন দিঘলিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে, লোহাগড়া পৌর এলাকার গোপিনাথপুর গ্রামে ব্যাপারীপাড়া মসজিদের পাশে, কুন্দসী ব্রিজ পার্শ্ববতী নবগঙ্গা নদীপাড়ে, উপজেলা পরিষদের ভেতরে, ছয়লেনের মধুমতি সেতু পার হতে গেলেই চোখে পড়বে রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া ফুল।
জানা যায়, কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস মাদাগাসকার দ্বীপে। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এটি ‘গুলমোহর”নামেও পরিচিত। বাংলাদেশ , ভারত ও পাকিস্তানে এ গাছ ব্যাপক আছে। কৃষ্ণচূড়ার মধ্যম আকৃতির পত্র ঝরা বৃক্ষ। বীজ থেকে এর চারা হয়। শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম  delonix  regia। এটি সেভিসি (sabaceae) গোত্রের উদ্ভিদ। প্রজাতিভেদে ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। আবার অনেক বড় গাছে ফুল ফোটে না তেমনটিও দেখা যায়। আবার ছোট গাছে ফুল ফোটে। এপ্রিল থেকে জুলাই মাস জুড়ে কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতির শোভাবর্ধন করে। বসন্তে শুরু, বর্ষায় শেষ এই ফুলের সৌন্দর্য।
তরুণ সমাজকর্মী ও লোহাগড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র রাজিয়া সুলতানা বিউটি বলেন, গ্রীষ্মের সময়ে কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করা অনেক স্বস্তির। তপ্ত রোদে আগুনের মতো জ্বলে থাকে এই ফুল। সবুজের মাঝে যেন উজ্জ্বল লাল প্রশান্তি। উষ্ণ আবওহাওয়ায় কৃষ্ণচূড়া ফুল হয়। বাংলাদেশে লাল কৃষ্ণচূড়া বেশি হলেও ইদানিং ছাদ বাগানে হলুদ কৃষ্ণচূড়ারও দেখা মেলে। কৃষ্ণচূড়া গাছে বসে থাকা পাখির কিচিরমিচির শব্দ পথিককে দেয় যেন বাড়তি প্রশান্তি।
গান, কবিতায় কৃষ্ণচূড়া নিয়ে কত কথা রয়েছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কৃষ্ণচূড়া নিয়ে লিখেছেন ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে, আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে…।’ প্রকৃতির রূপ রক্ষায় বেশি বেশি কৃষ্ণচূড়াড়া গাছ লাগানো উচিৎ বলে মনে করেন বোদ্ধামহল।