দুদকের মামলায় ভিন্নমত, জ্যেষ্ঠ বিচারপতির এজলাস ত্যাগ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দুদকের একজন কর্মকর্তাকে কোর্টে সার্বক্ষণিক রাখার বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চে দুই বিচারপতি ভিন্নমত দিয়েছেন। এর ফলে ওই বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এজলাস ত্যাগ করেছেন। দুই বিচারপতির ভিন্ন ভিন্ন মতের কারণে ওই দ্বৈত বেঞ্চের বিচারকাজ এখন বন্ধ আছে। যদিও দুপুরের পর প্রধান বিচারপতি ওই বেঞ্চ ভেঙে দিয়েছেন। জানা গেছে, দুর্নীতির মামলায় দুদকের আইনজীবীর উপস্থিত থাকা নিয়ে দুই বিচারপতি একমত না হওয়ায় এজলাস ছেড়ে চলে যান একজন বিচারপতি। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মুজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এমন ঘটনা ঘটে। বৃধবার (১৭ নভেম্বর) বিএনপির সাবেক চিফ হুইপ জয়নাল আবদীন ফারুকের স্ত্রী কানিজ ফাতেমার মামলায় দুদকের কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় প্রসঙ্গ ক্রমে বিষয়টি আলোচনায় আসে। ওইদিন শুনানির সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কো-অর্ডিনেটর উপস্থিত ছিলেন। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার দুদকের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, এই আদালতে দুদকের অনেক মামলার শুনানি হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের একজন কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক কোর্টে রাখা যায় কি না সেটি দেখা যেতে পারে। এ নিয়ে দুই বিচারপতি ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) কোর্টের কার্যক্রম শুরু হলে শুনানিতে দুদকের আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম জানান, দুদকে জনবল সংকট রয়েছে। তার পরেও আমরা আলোচনা করে চেষ্টা করবো কোর্টে সার্বক্ষণিক একজন অফিসার রাখা যায় কি না।
এ সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘দুদকের মামলা যারা ঠিকমতো তদন্ত করতে পারছেন না তাদের কোর্টে এনে বসিয়ে রাখুন।’ তখন বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি এস এম মুজিবুর রহমান বলেন, ‘দুদকের কী আর কাজ নেই, একজন অফিসার এখানে এসে বসে থাকবেন।’ এরপর কনিষ্ঠ বিচারপতির প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে এজলাস ছেড়ে চলে যান জ্যেষ্ঠ বিচারপতি। এদিন সকাল পৌনে ১১টার দিকে (১০টা ৪৭ মিনিটে) এ ঘটনা ঘটে। এরপর ওই দুই বিচারপতি আর একসঙ্গে বেঞ্চে বসেননি। এ সময় দুদকের আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সরকারি জমি আত্মসাতের ঘটনায় বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য জয়নুল আবদীন ফারুকের স্ত্রী কানিজ ফাতেমার বিরুদ্ধে করা মামলা কেন বাতিল করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর ওই রুল জারি কারেন আদালত। একই সঙ্গে তিন মাসের জন্য মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ওই রুলের শুনানির জন্যে মামলাটি কার্যতালিকায় কজলিস্টে ছিল।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানার ইয়ারপুর মৌজার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ সরকারি খাসজমি থেকে ভুয়া দানপত্র দলিলের মাধ্যমে শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ সম্পত্তি আত্মসাৎ করার ঘটনা প্রমাণ পায়। এ ঘটনায় জেলা দুর্নীতি দমন ব্যুরোর পরিদর্শক মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ১৯৯৯ সালের ৩০ মে কানিজ ফাতেমাসহ আটজনকে আসামি করে সেনবাগ থানায় মামলা করেন। মামলায় ঘটনার তারিখ উল্লেখ করা হয় ১৯৯৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। মামলাটি তদন্ত করে দুদকের উপ-পরিচালক নিরাপদ স্বর্ণকার ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি সবার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ১৯ মার্চ বিশেষ দায়রা জজ আদালত, নোয়াখালী সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলায় জামিনে আছেন কানিজ ফাতেমা।