বদির দুর্নীতি মামলা: অভিযোগ গঠন বাতিলের শুনানি ২ সপ্তাহ মুলতবি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ প্রায় ১৪ বছর আগে সম্পদের তথ্য গোপন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির করা আবেদনটি দুই সপ্তাহ মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সোমবার (৮ নভেম্বর) আবদুর রহমান বদির পক্ষে তার আইনজীবীর করা সময় আবেদন মঞ্জুর করে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এই আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য নির্ধারিত দিনে গত ২ নভেম্বর আব্দুর রহমান বদির মামলাটি আমলে নেওয়ার আদেশের কপি এফিডেভিট আকারে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে আসামিপক্ষকে মঞ্জুরিপত্র ও অনুমতিপত্রের (পারমিশন ও সেংশন লেটার) মধ্যে পার্থক্য কী তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। আদালতে ওইদিন বদির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা জুথি ও অ্যাডভোকেট শাকিলা পারভীন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি ও মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ। এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে করা দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আদালত। কিন্তু আসামিপক্ষ হাইকোর্টের করা আবেদনে দাবি জানিয়ে বলছেন, এই মামলায় মঞ্জুরিপত্র নেই। তার জন্য আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে চার্জ গঠনের (কগনিজেন্স) আদেশের কপি চেয়েছেন। আর ৪৫ দিনের মধ্যে কেন বিষয়টি শুনানি করতে পারেননি, সেটির কারণ হলফ আকারে জানাতে বলেছেন আদালত।
এছাড়া অভিযোগটি ২০২০ সালের ১১ অক্টোবরে আমলে নেওয়ার পরও এতদিন কেন মামলাটি শুনানির জন্য আসলো না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। বর্তমানে মামলার কী অবস্থা সেটিও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। তিনি জানান, আসামিপক্ষ বলছেন, চার্জশিট দাখিলের অনুমতিপত্র সেটা সেংশন লেটার না। তখন মঞ্জুরিপত্র ও অনুমতিপত্রের (পারমিশন ও সেংশান লেটার) মধ্যে পার্থক্য কী তাও জানাতে বলেছেন আদালত। তারই ধারাবাহিকতায় দুর্নীতির মামলায় অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে শুনানির নির্ধারিত দিনে সোমবার (৮ নভেম্বর) হাইকোর্টের এক ভার্চুয়াল বেঞ্চ সময় মঞ্জুর করে মামলায় শুনানি দুই সপ্তাহ মুলতবির আদেশ দেন। গত ১ সেপ্টেম্বর সাবেক এমপি বদির পক্ষে প্রথমে অভিযোগ গঠন বাতিলের আবেদন করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ আর হাসানুজ্জামান। পরে সম্পূরক আবেদন করেন শামসুর রহমান। পরে দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর আবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে। এর আগে ৫৬ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ গোপন ও ৭৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর দুদক চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বদির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর ২০১৭ সালে এ মামলার কার্যক্রম সচল হয়। মামলায় ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তার অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন চট্টগ্রামের বিচারিক আদালত। ওই আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিভিশন করেন বদি। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।