ছুটছে শেয়ারবাজার, প্রতিদিনই হচ্ছে রেকর্ড

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশের শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা নতুন মাত্রা পেয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই বড় উত্থান হচ্ছে শেয়ারবাজারে। ফলে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক রেকর্ড।
আগের দুই কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবারও দেশের শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন হয়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৬ হাজার ৬০০ পয়েন্টের কাছাকাছি চলে গেছে।২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি ৫ হাজার ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করা ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসই-এক্স গত মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো ৬ হাজার ৫০০ পয়েন্টের মাইলফলক স্পর্শ করে। এ মাইলফলক স্পর্শ করার পর সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আরও বেড়েছে।বৃহস্পতিবার সূচকটি ৬০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৯৬ পয়েন্টে উঠেছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসে (ব্যাংক বন্ধ থাকায় রবি ও বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়নি) ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ১৭১ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে ডিএসই’র অপর দুই সূচকেরও। এর মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৮৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এটি ডিএসই-৩০ সূচকের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ অবস্থান। অন্যদিকে ডিএসই’র শরিয়াহ্ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৩৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এটিও এ সূচকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান।
মূল্যসূচক রেকর্ড অবস্থানে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বীমা, বস্ত্র, প্রকৌশল এবং ওষুধ ও কেমিক্যাল খাতের কোম্পানিগুলো। বীমা খাতের তালিকাভুক্ত ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ৩৩টির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ১০টির। বাকিগুলোর মধ্যে সাতটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে এবং একটির শেয়ার লেনদেন হয়নি।
বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ৪৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ছয়টির এবং চারটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রকৌশল খাতের ৪২ কোম্পানির মধ্যে ৩২টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ১০টির দাম কমেছে। ওষুধ ও কেমিক্যাল খাতের ৩১ কোম্পানির মধ্যে ২২টির দাম বেড়েছে এবং ৭টির দাম কমেছে। বাকি দুটির মধ্যে একটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে এবং একটির লেনদেন হয়নি।
বীমা, বস্ত্র, প্রকৌশল এবং ওষুধ ও কেমিক্যাল খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ায় ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ২৪২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৩টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে শুধু মূল্যসূচক নয়, ডিএসই’র বাজার মূলধনও ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩২৬ কোটি টাকায়। এর আগে কখনো ডিএসই’র বাজার মূলধন এমন উচ্চতায় ওঠেনি।
একের পর এক রেকর্ড সৃষ্টির মধ্যে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। বাজারটিতে দিনভর লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২ হাজার ৩১৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৯৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
বড় অঙ্কের এ লেনদেনের দিনে টাকার পরিমাণে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১২৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ৭৫ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৬১ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জিপিএইচ ইস্পাত।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- মালিক স্পিনিং, সাইফ পাওয়ার টেক, বেক্সিমকো ফার্মা, আইএফআইসি ব্যাংক, ফু-ওয়াং সিরামিক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এবং ম্যাকসন স্পিনিং।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩২৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৫টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।