লকডাউনেও সড়ক দুর্ঘটনা

0

কঠোরতম লকডাউনের মাঝেও থেমে নেই সড়ক দুর্ঘটনা। জুলাই মাসের ১৪ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত ১৫ দিনের তথ্য সংকলন করে একটি সংস্থা বলছে, গত ঈদুল আজহার ছুটিতে বাংলাদেশে সড়কপথে যাতায়াতের সময় দুর্ঘটনায় অন্তত ২৭৩ জন নিহত হয়েছে। এই সময়ে ২৪০টি সড়ক দুর্ঘটনায় আরো অন্তত ৪৪৭ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তাদের তথ্যে বলা হয়েছে, প্রায় ৩৬ শতাংশ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও অটোরিকশা। প্রায় ২৯ শতাংশ দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ড ভ্যান। এর আগে ঈদুল ফিতরের সময় ঈদের ছুটি শুরুর দিন ৭ মে থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার সময় ২১ মে পর্যন্ত ১৫ দিনে ৩১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৩ জন নিহত এবং ৬২২ জন আহত হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার ও শনিবার পাবনায় নছিমনের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে প্রাণ গেছে ভাই-বোনসহ তিনজনের। আর যশোরের মণিরামপুরে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে নিহত হয়েছে মোটরসাইকেল আরোহী এক কলেজছাত্র। এ ছাড়া নওগাঁর ধামইরহাট, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এবং ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে আরো তিনজন। এদিকে, গতপরশু বাঘারপাড়ায় নিহত হয়েছে এক শিশু।
সাধারণ ছুটি বা লকডাউনে দেশে গণপরিবহন বন্ধ ছিল। ৯০ শতাংশ যাত্রীর যাতায়াত বন্ধ থাকলেও সেই তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। কেন? করোনাকালে লকডাউন চলাকালে কেন সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ যাবে? ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা এবং শারীরিক, মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনগণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। এসবের সঙ্গে রয়েছে বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি। সাম্প্রতিককালে দেখা যাচ্ছে দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল।
আমরা মনে করি, এখন ব্যক্তিগত যানবাহনের চালকদেরও প্রশিক্ষণের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার সময় এসেছে। বহু অনিয়ম ঘটে রাস্তায়। সেদিকেও দৃষ্টি দেওয়া দরকার। সড়কের এই নিরাপত্তাহীনতা কি চলতেই থাকবে? আমরা কোনো মতেই এমন অনিরাপদ সড়ক চাই না। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে বলে আমরা মনে করি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।