রিজেন্ট এয়ারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন পাইলটরা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥২০২০ সালের মার্চ থেকে সব ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে দেশের বেসরকারি এয়ারলাইন্স রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। দেনার দায়ে জর্জরিত এয়ারলাইন্সটি কর্মীদের বিনাবেতনে ছুটি দেয়। তিন মাস পরে আবারও ফ্লাইট চালুর কথা বললেও এখনও কোনও সম্ভাবনা নেই এয়ারলাইন্সটির। এমন পরিস্থিতিতে বকেয়া বেতন, ট্রেনিংয়ের খরচ, অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দাবিতে কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন রিজেন্ট এয়ারের পাইলটরা। সদুত্তর না পেলে মামলাসহ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেবেন তারা।
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুতে সাময়িক ভাবে ফ্লাইট বন্ধের কথা বললেও গত দেড় বছরে বারবার তারিখ দিয়েও চালু হয়নি প্রতিষ্ঠানটি। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটি পাইলটসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনও বেত-ভাতা দেয়নি। অবৈতনিক ছুটির কথা বলা হলেও কবে চালু হবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এমন পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন এয়ারলাইন্সটির কর্মীরা। গেল বছর বেতন ভাতার দাবিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করেছিলেন রিজেন্টের পাইলটরা, তবে কোনও সুফল পাননি তারা। হতাশ হয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাইলটরা।
২২ জুন রিজেন্ট এয়ার কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে এয়ারলাইন্সটির পাইলটরা। নোটিসে অবিলম্বে পাইলটদের বকেয়া বেতন ও সিমুলেটর ট্রেনিংয়ের খরচ দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পাইলটদের প্রশিক্ষণ খরচ, এনওসি ( অনাপত্তিপত্র) দিতেও বলা হয়েছে।
রিজেন্টের পাইলটদের অভিযোগ, রিজেন্ট নিয়মিত বেতন ভাতা দেয়নি। পাইলটদের লাইসেন্স কার্যকর রাখতে নিয়মিত ফ্লাইংয়ের পাশাপাশি, প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। সেই ব্যবস্থা করছে না রিজেন্ট, যার ফলে পাইলটরা তাদের দক্ষতা হারাচ্ছেন। লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে নিজ খরচেই ট্রেনিং করছেন অনেক পাইলট।
পাইলটদের পক্ষে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন ব্যারিস্টার মহিন এম রহমান। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পাইলটদের যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত দাবিগুলো রিজেন্টের কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। তারা যে অন্যায়ভাবে বেতন, ভাতা দিচ্ছে সেটি সমাধান করতে বলা হচ্ছে। রিজেন্ট পাইলটদের কাছ থেকে ব্ল্যাংক চেক নিয়ে রেখেছে, যা আইনগতভাবে বৈধ নয়। এভাবে তারা পাইলটদের জিম্মি করে রেখেছে। একজন পাইলট চাইলেও অন্য কোনও এয়ারলাইন্সে যেতে পারছে না। পাইলটদের ক্যারিয়ার ধ্বংস হওয়ার পথে। এজন্য আমরা নোটিশ দিয়েছি। তাতেও যদি রিজেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা না নেয়, আমরা পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেবো।
রিজেন্টের পাইলট ক্যাপ্টেন তারেক হাদি বলেন, রিজেন্ট কর্তৃপক্ষ বারবার শুধু তারিখ পরিবর্তন করেছে কিন্তু এখনও ফ্লাইট শুরু করতে পারেনি। গত বছরের মার্চের পর কোনও বেতনও দেয়নি। পাইলটদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক, সেগুলোও সম্পন্ন করেনি রিজেন্ট। আবার কোন পাইলট অন্য প্রতিষ্ঠানে যেতে চাইলেও যেতে পারছে না, তারা এনওসি (অনাপত্তিপত্র) দিচ্ছে না।
রিজেন্ট এয়ার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ২০১০ সালের ১০ নভেম্বর। দেনার দায়ে জর্জরিত হয়ে পড়ায় এয়ারলাইন্সটি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বকেয়া পরিশোধ করতে পারছে না। শুধু বেবিচকের বিভিন্ন ফি বাবদ ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত এয়ারলাইন্সটির বকেয়া ২৩৬ কোটি টাকা।