কিশোর অপরাধ বাড়ছে রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে

0

মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হওয়ার আগেই কিশোরদের একটা অংশের বেপরোয়া আচরণ এখন পাড়া-মহল্লায় আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা মহামারিকালেও থেমে নেই কিশোর অপরাধের ঘটনা। এরা নিজ নিজ এলাকায় দিনদুপুরেই ছিনতাই, বখাটেপনা, ইভটিজিং করে। ইদানিংকালে শহর গ্রাম সব এলাকায় মাদকাসক্ত বখাটে কিশোরদের কারণে সব সময় আতঙ্ক নিয়ে পথ চলতে হচ্ছে নারীদের। অনেক বখাটে মা বয়সীদেরও অসম্মান করতে দ্বিধা করে না।
কিশোরদের এভাবে অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠার প্রধান কারণ সামাজিক মূল্যবোধের অবয়। কিশোর অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজে নানা অসংগতি রয়েছে। নিজেদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কিশোররা। তাদের আচরণে পরিবর্তন হচ্ছে। কিশোর বয়সে হিরোইজম ভাব থাকে। আবার কিশোরদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের ‘গ্যাং কালচার’ গড়ে উঠছে। কিশোর বয়সে ইতিবাচক চর্চার দিকে না গিয়ে নেতিবাচক চর্চার দিকে চলে যায়। আবার যখন তারা দেখে যে, অপরাধ যারা করছে তারা সমাজে বেশি লাভবান হচ্ছে, সেটা কিশোররা অনুসরণ করে। তাদের ওপর পারিবারিক ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, পারিপার্শ্বিক নানা কারণে অনেক আগে থেকেই অপরাধী তালিকায় নাম এসেছে অল্প বয়সীদের। তারা মনে করে, দুর্বল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পাশাপাশি পারিবারিক শিার অভাবও এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। সন্তানের শিা ও চরিত্র গঠনের প্রতি অভিভাবকদের যতটা মনোযোগ দেওয়া দরকার, তা প্রায়ই দেওয়া হয় না। আবার মাদক বিক্রেতা থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ পর্যন্ত অনেকেই নিজের সামান্য লাভের জন্য কিশোরদের অপরাধজগতে টেনে নেন। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোরদের ব্যবহার করেন।
এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী? মুক্তির উপায় কী? সমাজ বাস্তবতার দিকে তাকালে দেখা যাবে, এখন এলাকাভিত্তিক সামাজিক কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে না, খেলার মাঠ কমে এসেছে। সামাজিকভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকায় কিশোররা সাইবারজগতে ঢুকছে। অপরাধ ও সমাজ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিবার ও সামাজিক পর্যায়ে সঠিক পরিচর্যা ও পর্যবেণ কিশোর অপরাধ কমাতে অনেক সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীকেও কঠোর হতে হবে। তবে রাজনৈতিক প্রশ্রয় বন্ধ হলে কিশোরদের অপরাধী হবার পথ বন্ধ হবে। তাই, বিষয়টি রাজনীতিকদের গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে।