উত্তর কোরিয়ার কয়লা চালানে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে ২০০৬ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে উত্তর কোরিয়ার ওপর বিভিন্ন পর্যায়ের অবরোধ আরোপ করে আসছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অর্থায়ন বন্ধ করতে ১৫ সদস্যের দেশ নিয়ে গঠিত এ পরিষদ ২০১৭ সালে দেশটির কয়লা রফতানিও নিষিদ্ধ করে। যদিও বিভিন্ন সময় দেশটি এসব নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরই জের ধরে নতুন করে ছয়টি সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে চীনভিত্তিক কয়েকটি সংস্থা এবং অবৈধভাবে উত্তর কোরিয়ার কয়লা রফতানিতে অভিযুক্ত চারটি জাহাজ রয়েছে। খবর রয়টার্স ও সিএনবিসি।
সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানুচিন বলেন, উত্তর কোরিয়া কয়লা রফতানিতে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা অব্যাহত রেখেছে। এ উপার্জন দেশটির ব্যাপক ধ্বংস কর্মসূচির আওতায় অস্ত্রগুলোর অর্থায়নে সহায়তা করছে। উত্তর কোরিয়ার সরকার প্রায়ই কয়লাসহ খনি শিল্পগুলোয় জোরপূর্বক জেলবন্দিদের নিয়োগ করে। এ ধরনের অবৈধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার জন্য দেশটির সরকার তাদের নিজের নাগরিকদের শোষণ করে।
এ বছরের শুরু দিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে দেয়া স্বাধীন পর্যবেক্ষক দলের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, উত্তর কোরিয়া অবৈধ উপায়ে পণ্য বিশেষ করে কয়লা ও বালি রফতানির মাধ্যমে লাখ লাখ ডলার আয় করেছিল। যদিও বরাবরের মতো উত্তর কোরিয়া এ প্রতিবেদনকে উড়িয়ে দিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক এ পদক্ষেপের মাধ্যমে সংস্থাগুলোর মার্কিন সম্পদগুলো স্থগিত করে দেয়া হবে এবং আমেরিকানদের তাদের সঙ্গে কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
এ পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, চীন তার আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা পালন করেছে এবং চীনা সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে একতরফা নিষেধাজ্ঞা দেয়া দেশগুলোর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে।
গত সপ্তাহে বেইজিংয়ে ঝাও আরো বলেন, চীনা সংস্থা ও ব্যক্তিদের বৈধ, আইনি অধিকার এবং স্বার্থকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করে যাবে বেইজিং।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, কাল্ম ব্রিজ, এশিয়া ব্রিজ, লাকি স্টার ও স্টার ১৮ নামের কালো তালিকাভুক্ত জাহাজগুলো উত্তর কোরিয়ার বন্দর থেকে সরাসরি কয়লা বোঝাই করে পুরো অঞ্চলজুড়ে সেগুলো পরিবহন করা হয়েছিল। কালো তালিকাভুক্ত হওয়া শিপিং সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে চীনভিত্তিক ওয়েইহাই হুইজিয়াং ট্রেড লিমিটেড, অলওয়েজ স্মুথ লিমিটেড ও গুড সিবলিংস। এর মধ্যে অলওয়েজ স্মুথ লিমিটেড ও গুড সিবলিংস ব্রিটেনেও নিবন্ধিত। এছাড়া কালো তালিকাভুক্ত সংস্থার তালিকায় হংকংভিত্তিক সিলভার ব্রিজ শিপিং কো-এইচকেজি, ভিয়েতনামভিত্তিক থিনহ কুং কো লিমিটেড এবং উত্তর কোরিয়া ও ভিয়েতনামে কাজ করা কোরিয়া ডাইজিন ট্রেডিং কর্পোরেশনও রয়েছে।
উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সাল থেকে তিনবার বৈঠক করেছেন। তবে তারা পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বন্ধ এবং উত্তর কোরিয়ার ওপর দেয়া মার্কিন ও জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটানোর পথ উন্মুক্ত করতে পারেননি।