ভরা মৌসুমে চাল ও আমদানির পরও পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম কমছে না

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ।। কুরবানি ঈদের পরে চাহিদা কম থাকায় খামারিরা আগেভাগে তুলনামূলক কম দামে মুরগি বিক্রি শুরু করেছেন। বাজারে মুরগি গত সপ্তাহের থেকে প্রতি কেজিতে ৩০ থেকে ২০ টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ হওয়ার পরও এ সপ্তাহে বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে আরও ৫ টাকা বেড়েছে।
এ ছাড়া ভরা মৌসুমে চালের দাম কমার পরিবর্তে সরু চালে এ সপ্তাহে প্রতি কেজিতে আরও ২ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভালোমানের সবজি কিনতে গেলেও ৮০ টাকার নিচে মিলছে না। শুক্রবার যশোরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া যায়।
শুক্রবার যশোরের বড় বাজারে খামারের সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে এই মুরগি বিক্রি হয়েছিল ৩৪০ টাকা দরে। শুধু সোনালি নয় খামারের ব্রয়লার মুরগিরও দাম কমেছে প্রতি কেজিতে ২০ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা দরে। গত সপ্তাহেও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ২২০ টাকায়। বিক্রেতা ইমরান হোসেন জানান, আর মাত্র ৯ দিন পর কুরবানি ঈদ। ঈদে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের ঘরে ঘরে পর্যাপ্ত গবাদিপশুর মাংস মজুত থাকায় মুরগির চাহিদা কম থাকে। এ কারণে লোকসান কমাতে আগেভাগে দাম কমিয়ে খামারিরা মুরগি বেঁচে দিচ্ছেন। ক্রেতা আকবর আলী জানান, কুরবানি ঈদের পরে অন্তত দেড় মাস মুরগি বিক্রি হবে না ভেবে খামারিরা এখনই দাম কমাতে বাধ্য হয়েছেন।
এদিকে বাজারে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লেও দেশি পেঁয়াজের দাম কমেনি, বরং এ সপ্তাহে কেজিতে আরও ৫ টাকা বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতা জয়দেব সাহা জানান, তিনি শুক্রবার দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। যা গত সপ্তাহেও ছিল ৭৫ টাকা।
আড়তদার বাগান চন্দ্র সাহা জানান, স্বাদ কম থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজের প্রতি মানুষের এমনিতেই আগ্রহ কম, তার ওপর দাম বেশি। মানুষ কেজিতে ৫ টাকা বেশি হলেও ভালো স্বাদের কারণে দেশি পেঁয়াজ কিনছেন। বাগান চন্দ্র সাহা জানান, তিনি শুক্রবার তার আড়তে ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি প্রতি কেজি মানভেদে ৭০/৭২ টাকা আর দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭২/৭৫ টাকায় বিক্রি করেছেন।
ভরা মৌসুমে বাজারে চালের দাম কমার পরিবর্তে গত দু সপ্তাহ ধরে সরু চাল বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতা সাখাওয়াত হোসেন জানান, তিনি শুক্রবার সরু বাংলামতি চাল বিক্রি করেছেন প্রতি কেজি মানভেদে ৭৬ থেকে ৭৮ টাকায়, এ চাল গত সপ্তাহেও প্রতি কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছিল ৭৪ থেকে ৭৬ টাকা। সরু চাল মিনিকেটও প্রতি কেজিতে ২ টাকা বেড়ে শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছিল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা। তাছাড়া অন্যান্য চালের দাম বেশ কিছুদিন ধরে একই জায়গায় স্থির রয়েছে। শুক্রবার কাজললতা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি মানভেদে ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা, বিআর-৬৩ চাল বিক্রি হয়েছে ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা, বিআর-২৮ চাল বিক্রি হয়েছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা ও মোটা নূরজাহান চাল বিক্রি হয়েছে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা।
বর্ষাকাল চলে আসার আগ মুহূর্তেও বাজারে ভালোমানের গ্রীষ্মকালীন সবজি ৮০ টাকার নিচে মেলেনি। শুক্রবার খুচরা বিক্রেতা নাসির আলী ভালোমানের সজনেডাটা প্রতি কেজি ১২০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, সম্প্রতি তীব্র তাপপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত ও ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে কৃষকের অনেক সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এ কারণে সরবরাহ কমে দাম বেড়েছে।