প্রসঙ্গ যশোরে আক্রান্তের রেকর্ড

0

যশোরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় প্রতিদিন বাড়ছে। বাড়তে বাড়তে তা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। গতকাল যশোরের পত্রিকাগুলো এই রেকর্ডের খবর দিয়েছে। একদিনে ৪৬ জন শনাক্ত হবার খবরটি নিশ্চয় যশোরবাসীর জন্য উদ্বেগ উৎকণ্ঠার। এর আগের রেকর্ড ছিল ৩৩ জন তার মধ্যে যশোর সদরের ছিল ১২ জন। এবার শনাক্ত ৪৬ জনের ২০ জনই যশোর সদরের। সিভিল সার্জনের তথ্যানুযায়ী যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে পরীা করা ১৪১টি নমুনা পরীায় এই ৪৬ জন শনাক্ত হয়েছে। বিষয়টি শুধু উদ্বেগের নয়, রীতিমতো শঙ্কার। কারণ মাত্র ১৪১ জনকে পরীা করে যদি ৪৬ জন করোনা আক্রান্ত পাওয়া যায় তাহলে হাজার নমুনা পরীার ফলাফল কী হবে সে প্রশ্ন এসেই যায়।
আমরা জানি, যশোর জেলায় এ মুহূর্তে জনসংখ্যা ৩২ লাধিক। যার মধ্যে যশোর শহরে প্রায় ৮ লাখ। ২০১১ শুমারীর যা ছিল সাড়ে ২৭ ও ৬ লাখের কিছু বেশি। যাহোক বর্তমানের জনসংখ্যার নিরাপত্তাই আমাদের আলোচ্য বিষয়। আমরা গত তিন মাস যাবৎ প্রতিদিন যশোর, খুলনা অথবা ঢাকা থেকে আসা নমুনা পরীার ফলাফলে দেখছি। শনাক্ত বা আক্রান্তের তালিকায় যশোর কমন হয়ে আছে। সম্প্রতি দেখছি আক্রান্তের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। সর্বশেষ বুধবার রেকর্ড হলো। একই সময়ে জেলায় শনাক্ত হওয়া আক্রান্তের সংখ্যা চারশ’ ছাড়িয়েছে। ফলে বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখার অবকাশ নেই। জেলা স্বাস্হ্যবিভাগ ও জেলা প্রশাসন কেউ হালকা ভাবে নেয়ওনি। তারা ইতোমধ্যেই শহর ও গ্রামের বহু এলাকা রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন করেছে এবং জনগণকে ঠেকানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু জনগণ নিজেই বেপরোয়া চলছে। জনগণের এই বেপরোয়া চলাচলই আমাদের আতঙ্কের কারণ। আমাদের ধারণা গত তিনমাসের বেপরোয়া চলাচল ও ঈদের আগে ভয়ংকর মাখামাখি আজকের রেকর্ডের মূল কারণ। আর তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগছে যশোরের এই বিপুল সংখ্যক মানুষের পরীা হলে আক্রান্তের সংখ্যা কোথায় দাড়াবে? আর জরুরি ভিত্তিতে এ শনাক্ত করা না হলে এরা কতদূর পর্যন্ত সংক্রমিত করে ফেলবে। একমাস পর যশোরের অবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকবে। আমরা মনে করি, বিষয়টি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে, কারণ পরিস্থিতির দায়তো তাদের বহন করতে হবে। আমরা আশা করি কর্মকর্তারা সংক্রমণ পরিস্থিতির গণঅবনতির আগেই সামাল দেয়ার চেষ্টা করতে অধিকহারে পরীার ব্যবস্থা করবেন। কারণ, যত পরীা তত শনাক্ত, যত শনাক্ত ততই চিকিৎসা, সাবধানতা, ততই মঙ্গল। বাঁচার পথও ততই প্রসস্ত হবে। আমরা চাই কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবেন।