বছরে ১৪০ কোটি লিটার ইথানল উৎপাদন করবে উত্তর প্রদেশ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ অব্যাহত লোকসানে থাকা চিনি খাতকে চাঙ্গা করে তোলার চেষ্টা করছে ভারতের উত্তর প্রদেশ। এ লক্ষ্যে চিনির পরিবর্তে ইথানল উৎপাদনে ঝুঁকেছে রাজ্যটির চিনিকলগুলো, যা তাদের মুনাফা বাড়িয়ে তুলছে। রাজ্যটির সরকারি সূত্র জানিয়েছে, এ অঞ্চলের চিনিকলগুলো বার্ষিক ১৪০ কোটি লিটার ইথানল উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
উত্তর প্রদেশের সুগার ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড সুগারক্যান ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, রাজ্যটির কমপক্ষে ২৫টি চিনিকল এরই মধ্যে ইথানল উৎপাদন শুরু করে দিয়েছে। কয়েক বছর ধরে ভারতে প্রচুর চিনি উৎপাদন হয়েছে। উদ্বৃত্ত চিনি বাজার ছেয়ে গেছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে পণ্যটির দাম নিম্নমুখী রয়েছে। তবে উত্তর প্রদেশে এবার চিনির পরিবর্তে ইথানল উৎপাদন বেশি হওয়ায় এ মন্দা ভাব অনেকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। কারণ ইথানল উৎপাদন চিনি উৎপাদনের তুলনায় অধিক লাভজনক। ফলে রাজটির চিনি খাতের ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা কমে এসেছে বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
উত্তর প্রদেশের সরকার অনুমান করছে ২০২১-২২ অর্থবছরের মধ্যে রাজ্যটির কমপক্ষে ৬০টি চিনিকলে ইথানল উৎপাদন শুরু হতে পারে।
ভারত বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ চিনি উৎপাদনকারী ও রফতানিকারী দেশ। কয়েক বছর ধরে পণ্যটির উৎপাদন ও রফতানি মোটামুটি স্থিতিশীল থাকা সত্ত্বেও দেশটির এ খাতটি লোকসানের মুখে পড়েছে। মূলত বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে চিনির চাহিদা কমছে। ফলে দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে উদ্বৃত্ত চিনির পরিমাণ বেড়ে গেছে, যা কমিয়ে দিয়েছে পণ্যটির দাম। দেশটির চিনি শিল্পের লোকসানের পেছনে এটাই প্রধান প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এ পরিস্থিতিতে চিনি খাত রক্ষায় উঠে-পড়ে লেগেছে দেশটি।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের আগে উত্তর প্রদেশের কোনো চিনিকল ইথানল উৎপাদন করত না। অথচ চলতি অর্থবছরে এসে ইথানল উৎপাদনকারী চিনিকলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫টি। আগামী দুই বছরের মধ্যে তা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে ৬০টিতে উন্নীত হতে পারে বলে অনুমান করছে রাজ্য সরকার। এছাড়া রাজ্যটির চিনি শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেছে উত্তর প্রদেশ সরকার।
সুগার ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে গত তিন বছরে উত্তর প্রদেশের আখচাষীদের সরকারের পক্ষ থেকে মোট সাড়ে ৯২ কোটি রুপি অর্থসহায়তা দেয়া হয়েছে।