করোনায় পুঁজিবাজারে ধস

0

দেশের পুঁজিবাজারে বড় দরপতনের ধারা অব্যাহত। রবিবার বড় পতনের পর গত সোমবার লেনদেনের শুরুতে শেয়ার কেনা বাড়লেও পরে বিক্রি বেড়ে যায়। করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণার পর শেয়ার বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায় বলে খবরে প্রকাশ। অব্যাহত বিক্রির চাপে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১৯৬ পয়েন্ট। সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪০৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। দাম বেড়েছে ১০টি কম্পানির, কমেছে ৩৩৩টির, আর ১২টি কম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারের তথ্য পর্যালোচনা করে একটি পত্রিকায় বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাস চিহ্নিত হওয়ার পর পুঁজিবাজারে সাত কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে, যাতে পাঁচ দিন বড় পতন হয়েছে আর দুই দিন উত্থান হয়েছে। শেয়ার বিক্রির অব্যাহত চাপে ছয় বছর পেছনে ফিরেছে পুঁজিবাজার। মূল্যসূচক কমার সঙ্গে বাজার মূলধন আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মূলধন তিন লাখ কোটি টাকার নিচে নেমেছে। ওদিকে গত সোমবার অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রাখতে সামর্থ্য অনুযায়ী সব ব্যাংক ভূমিকা রাখার চেষ্টা করবে। পুঁজিবাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক যে সার্কুলার জারি করেছিল, তাতে প্রতিটি ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে। সেই আলোকে ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে। যদিও বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, এই বাজারে শুধু তহবিল সাপোর্ট দিয়ে ওপরে তোলা কঠিন। তাঁদের মতে, এখানে ১০ হাজার কোটি টাকাও যদি দেওয়া হয়, খুব কম সময়ে সেটা শেষ হয়ে যাবে। তাই বাজারে দরকার বাস্তবসম্মত ও কার্যকর নীতি-সহায়তা। যার ফলে বিনিয়োগকারীরা এমন বার্তা পাবেন যে তাঁরা মনে করবেন এই বাজার সামনে যাবেই।
করোনার চাপ অনেক দেশ কাটিয়ে উঠেছে, বাংলাদেশও কাটিয়ে উঠবে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তাঁরা বলছেন, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বাজারে আস্থাহীনতা আছে। তার সঙ্গে করোনার প্রভাব পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বলে অভিজ্ঞজনদের ধারণা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বাজার অবশ্যই আবার ঘুরে দাঁড়াবে। একটু অপো করতে হবে। কারণ আশপাশের দেশগুলোতেও বাজারে এভাবে মূল্য পতনের পর আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সূচক অনেক বেড়েছে। আমাদের দেশের পুঁজিবাজারেরও সেই শক্তি আছে এবং এটা দীর্ঘ মেয়াদে ভালো অবস্থানে যাবে। তাই উদ্বিগ্ন না হয়ে শেয়ার ধরে রেখে অপো করার পরামর্শ দিচ্ছেন বাজার বিশ্লেষকরা। বাজারে আস্থা ফেরাতে পারলেই শঙ্কা কেটে যাবে বলে আমরা মনে করি।