সম্রাট পাপিয়াদের শেকড় উৎপাটন হোক

0

আমাদের দেশ মতাসীন রাজনৈতিক দলের চারদিকে মাছির ভনভন থাকা অস্বাভাবিক নয়। তবে অবাক করার বিষয় হলো দীর্ঘকাল চোখে ধুলো দিয়ে নেতা পরিচয়ে দল ভাঙিয়ে অপকর্ম চালিয়ে যাওয়া। রাজনীতির নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ার দৃষ্টান্ত এই সমাজে একেবারে কময় ন। ’৭১ পরবর্তী বা পাক আমলেও এমন ঘটনা কমন ঘটেনি। তবে এনামুল হক এনু, রূপম, শামীম, সম্রাট কিংবা পাপিয়াদের উপাখ্যান খোলাসা হয়ে পড়লে সমাজে মৃদু ভূকম্পন অনুভূত হয় বৈকি। এ শাসন সক্রিয় থাকলে অপকর্মকারীদের মুখোশ একে একে খুলে পড়তে বাধ্য। যেমন এ মুহুূর্তে উন্মোচিত হয়েছে একজন পাপিয়ার মুখোশ। ছাত্রলীগ দিয়ে শুরু, পরে যুবলীগের নেত্রী হয়ে ওঠা। কিন্তু তলে তলে দুরভিসন্ধি এবং উচ্চাভিলাষের পরাকাষ্ঠা। নারী হওয়ায় যে সামাজিক সুবিধা মেলে, তাকে পুঁজি করে অবৈধ লজ্জাকর রুচিহীন ঘৃণ্য সাম্রাজ্য বিস্তার পাপিয়াদের মতো অর্থলোভী ও নীতিহীনদের মজ্জাগত। কিন্তু শেষরা যে হয় না আইনের হাতে পাকড়াও হওয়া তারই প্রমাণ। সরকারের শুদ্ধি অভিযান যে থেমে যায়নি, তারই একটি উদাহরণ পাপিয়া পর্ব।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলই শাসকের ভূমিকায় থাকে। তবে সবার ওপরে দেশ ও দেশের মানুষ। তাই নাগরিকদের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ শাসকদলকে দলের বিধিবদ্ধ তথাকথিত সীমানা থেকে বেরুতে হয়। উত্তীর্ণ হতে হয় দলনিরপে অবস্থানে, যেখানে থাকে না অন্ধ দলপ্রীতি ও অন্যায়কে প্রশ্রয়দানের প্রথাগত বাধ্যবাধকতা। নীতিবর্জিত অথচ রাজনৈতিক তকমা লাগানো প্রবল প্রতাপশালীদের বিরুদ্ধে চলমান অভূতপূর্ব অভিযানে একে একে বাঘা সব ‘ডন’ আটক হয়ে চলেছে। আইনের শাসনে বিশ্বাসী দেশপ্রেমিক যে কোন নাগরিকের কাছেই বিষয়টি স্বস্তিকর। ুদ্র ব্যক্তিস্বার্থ নয়, গোটা দেশের মানুষের জন্য যারা রাজনীতি করেন, এমন নেতানেত্রীর সংখ্যা কম হলেও স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পালনেরকালে সবাই চান আমাদের মাতৃভূমি হোক অপরাধী মুক্ত। চান অপরাধ জগতের অধিবাসীদের হাতে হাতকড়া পড়–ক। এ মুহূর্তে অন্তত তেমনটি লক্ষ্যণীয়। এর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধন্যবাদ পাবার দাবিদার। দুর্নীতিবিরোধী চলমান অভিযানের প্রেক্ষাপট দেশবাসীর জানা। প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীও আকারে-ইঙ্গিতে একাধিকবার সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। কিন্তু ওই যে কথায় বলে চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী! বেপরোয়াদের অবস্থা হয়েছে তাই। জাতির প্রত্যাশা, এই অভিযান আরও জোরদার হবে এবং সম্রাট পাপিয়া , এনু, রূপম, শামীমদের শেকড় উচ্ছেদ হবে। অপরাধী দুর্নীতিবাজের জন্য দেশের অর্জন তথা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিকে ভূলুণ্ঠিতে হতে দেয়া যায় না।