বাজারে ছোট-বড় সব ইলিশের পেটে ডিম পিঁয়াজের কেজিতে বাড়ল ৩৫ টাকা

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ প্রজণন মৌসুমে বাইশ দিন ইলিশ ধরা ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার দু সপ্তাহ পরও বাজারে ছোট-বড় সব ধরনের মাছে ডিম রয়েছে। মৎস্য কর্মকর্তারা মা ইলিশের ডিম ছাড়ার সময় নির্ধারণে আরও গবেষণার সুপারিশ করেছেন। এদিকে গত দু সপ্তাহের ব্যবধানে পিঁয়াজের কেজিতে বেড়েছে ৩৫ টাকা। বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। অপরদিকে আগাম শীতকালীন সবজির সরবরাহ স্থিতিশীল না হওয়ায় দাম ওঠানামা করছে। রোববার যশোরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

মা ইলিশের নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়ার জন্য সরকার গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট বাইশ দিন নদী ও সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার দু সপ্তাহ পরও বাজারে ইলিশের পেটে ডিম দেখা যাচ্ছে। রোববার যশোরের বড় বাজার মাছবাজারে শুধু বড় ইলিশের পেটে নয় ছোট ইলিশের পেটেও ডিম রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপকূলীয় বরগুনা জেলা মৎস্য অফিসার মো. মহসিন দৈনিক লোকসমাজকে জানান, তারাও দেখেছেন বড় মাছ ছাড়াও ছোট অন্তত ৪/৫ টায় কেজি ইলিশের পেটেও ডিম দেখা যাচ্ছে। ছোট ইলিশের পেটে ডিম দেখে তারাও বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নানান সমস্যা, পানি দূষণ ও নদীতে পলি জমার কারণে বায়োলজি চেঞ্জ হচ্ছে। ছোট ইলিশের পেটে ডিম হওয়ার কথা না। আমাদের বিজ্ঞানী গ্রুপ আছে তারা এ বিষয়ে রিসার্চ করেন। অবশ্য তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের সুপারিশ হচ্ছে আরও গবেষণা করে দেখা এটা কেন হচ্ছে।’

রোববার বাজারে খুচরা বিক্রেতা এরশাদ আলী ২ কেজি ওজনের ইলিশের কেজি ৩৮০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। এত বড় মাছের পেটেও ডিম রয়েছে। এক কেজি ওজনের একটু বেশি ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা। ৮০০/৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২৫০০/২৬০০ টাকা, ৫০০/৬৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ২০০০/২১০০ টাকা, ৪০০/৪৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১৪০০/১৫০০ টাকা, ৩টায় কেজি ইলিশ ১০০০/১২০০ টাকা, ৪/৫ টায় কেজি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭০০/৭৫০ টাকায়। বিক্রেতা এরশাদ আলী আরও জানান, সব ধরনের বড় ইলিশ ছাড়াও একেবারে ছোট ইলিশের পেটেও ডিম রয়েছে। ডিম ছাড়া ইলিশের সংখ্যা খুব কম দেখা যাচ্ছে।

এদিকে বাজারে পিঁয়াজের দাম আরও বেড়েছে। গত দু সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ৩৫ টাকা বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতা জয়দেব সাহা জানান, তিনি রোববার প্রতি কেজি দেশি পিঁয়াজ বিক্রি করেছেন ১১০ টাকায়, যা গত দু সপ্তাহ আগে ছিল ৭৫ টাকা।

পিঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা বড় বাজার কালীবাড়ি এলাকার ‘নিতাই গৌর ভাণ্ডার’-এর অন্যতম স্বত্বাধিকারী নিতাই সাহা জানান, কৃষকের ঘরে রাখা পিঁয়াজের মজুদ শেষ হয়ে এসেছে। এখন যা পেঁয়াজ আছে তা মজুতদারদের হাতে। তারা এখন পিঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। এ কারণে পিঁয়াজের দাম বাড়ছে। আপতত বিদেশ থেকে পিঁয়াজ আমদানি করা না হলে পিঁয়াজের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।

অপরদিকে বাজারে আগাম শীতকালীন সবজির সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে চাষিদের সবজির অনেক ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। বড় বাজার কাঁচামালের আড়তদার মো. আলাউদ্দিন বলেন, ভরা শীতের সবজি উৎপাদন না হওয়া পর্যন্ত বাজারে আগাম শীতকালীন সবজির সরবরাহ ওঠানামা করছে। এ কারণে এ সপ্তাহে কিছু সবজির দাম বেড়েছে।

খুচরা বিক্রেতা নাসির আলী জানান, রোববার বাজারে গাজর বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, টমেটো ১২০/১৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা,বরবটি ৮০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, উচ্ছে ৬০/৮০ টাকা, বেগুন ৬০/৮০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা।