শীতের শুরুতেই আক্রান্ত শিশুরা হাসপাতালে শয্যা সংকট

0

বি এম আসাদ ॥ দিনে গরম এবং রাতে ঠান্ডা, আবহাওয়ার এই তারতম্যের কারণে যশোরে শিশুদের মাঝে নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে শত শত শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালগুলোতে রোগীর ভিড় বাড়ছে।

যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যার কয়েকগুণ বেশি রোগী থাকায় অনেক শিশুকে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

এছাড়াও, হাসপাতালের বহির্বিভাগেও শিশু রোগীদের, প্রচন্ড ভিড লক্ষ্য করা গেছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে ৫৫০ জন শিশু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এদিন মোট ১ হাজার ৬৫০ জন রোগীর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ছিল ৫৫০ জন।

এর আগের দিন পর্যায়ক্রমে ৫৬৫ জন এবং ৪০০ জন শিশু বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নেয়। জরুরি বিভাগেও প্রচুর সংখ্যক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে, যাদের অধিকাংশই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।

এদিকে, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের অবস্থা ভয়াবহ। এদিন হাস্পাতালের ১৪টি ওয়ার্ডের ২৭৮টি বেডের বিপরীতে মোট রোগী ছিল ৫৪২ জন। তার মধ্যে ২৪টি বেডের শিশু ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ছিল ৮১ জন, যা বেডের তুলনায় প্রায় চার গুণ। বেড না পেয়ে অতিরিক্ত রোগীরা ওয়ার্ডের মেঝেতে নিজেদের বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছে।

শিশু ওয়ার্ডের রেজিস্ট্রার ডা. মো. আফসার আলী জানিয়েছেন, শিশু রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। যে সব রোগী আসছে, তারা বেশিরভাগই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। কিছু সংখ্যক ডায়রিয়া রোগীও রয়েছে।

আক্রান্ত হওয়ার কারণ হিসেবে এক শিশু বিশেষজ্ঞ জানান, পরিবেশ বা আবহাওয়া দায়ী। সন্ধ্যার পর রাত ১০টা পর্যন্ত গরম আবহাওয়া অনুভূত হচ্ছে, আবার রাত যত গভীর হচ্ছে ততই ঠান্ডা পড়ছে। এই গরম ও ঠান্ডার তারতম্যের কারণে শিশুরা নিউমোনিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

রোগীর অভিভাবকরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে শিশুরোগীদের জন্য যে সংখ্যক বেড রয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। তারা কেবল চিকিৎসাটুকু ফ্রি পাচ্ছেন, কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটি ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে এবং বাকি সব ওষুধ নিজেদের কিনতে হচ্ছে। তারা শিশুদের চিকিৎসার জন্য ভালো পরিবেশ সৃষ্টি এবং হাসপাতালে বেড সংখ্যা বৃদ্ধি করার আহ্বান জানিয়েছেন।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হুসাইন শাফায়াত জানিয়েছেন, আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। রাতে ঠান্ডা এবং গরম দু’ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করার ফলেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।