মনিরামপুর পুলিশের সাবেক ২১ কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

0

স্টাফ রিপোর্টার, লোকসমাজ ॥ প্রায় এক যুগ আগে মনিরামপুর উপজেলার জয়পুর গ্রামের জামায়াত কর্মী আনিছুর রহমানকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিচারবহির্ভুত হত্যার অভিযোগে মঙ্গলবার আমলী আদালতে মামলা হয়েছে। মনিরামপুর থানার তৎকালীন ওসি আলী আজম এবং আরও ২০ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন নিহতের পিতা জামায়াত কর্মী ইব্রাহীম মোল্লা। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুর রহমান অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি যশোরের বিশেষ পুলিশ সুপারকে আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী রুহিন বালুজ।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, মনিরামপুর থানার তৎকালীন এসআই শংকর চন্দ্র মাতব্বার, এসআই নিশিকান্ত সরকার, এসআই মাহমুদ আল ফরিদ ভুঁইয়া, এসআই জামিরুল ইসলাম, এসআই রজমান, এসআই তাসনিম আলম, এসআই রবিউল ইসলাম, এসআই শিকদার মতিয়ার রহমান, এসআই শাহ হোসেন, এসআই মহসিন আলী, এসআই বাবর আলী, এসআই সেলিম, এএসআই আশরাফুল, এএসআই জাকির, এএসআই আব্দুল্লাহ, এএসআই ইকরামুল, এএসআই ফারুক, এএসআই কামাল, এএসআই প্রসেনজিত কুমার মল্লিক, এএসআই ইমলাক হোসেন, জয়পুর গ্রামের মৃত জব্বার সরদারের ছেলে হাবিবুর রহমানের, মৃত মোজাহার সরদারের ছেলে আব্দুল মজিদ, মৃত নওশের আলী মহলদারের ছেলে মোমতাজ আলী, ইয়াবুব্বর আলী মোল্লার ছেলে হোসেন আলী মোল্লা, আকবার আলী সরদারের ছেলে আজিজুর রহমান রাজিব, মৃত আব্দুস সামাদ বিশ্বাসের ছেলে আসাদুজ্জামান বাবু, মৃত আব্দুস সালাম দফাদারের ছেলে ইসলাম, মৃত ইয়াকুব্বর সরদারের ছেলে আব্দুল মান্নান সরদার, এমরান মোড়লের ছেলে সিরাজুল ইসলাম, মৃত আক্কাস আলী গাজীর ছেলে মিকাইল হোসেন, ঢাকুরিয়া গ্রামের হারান সরদারের ছেলে ইনতাজ আলী, মনিরাপুরের অনিল ঘোষের ছেলে বিপ্লব ঘোষ বাপ্পি ও মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আনিসুর রহমান।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহীম মোল্লা জামায়াতের সক্রিয় কর্মী। ২০১৩ সালের ২২ মার্চ গভীর রাতে একদল পুলিশ তার বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় পুলিশ ইব্রাহীম মোল্লার ছেলে আনিছুরকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। উল্লিখিত পুলিশ কর্মকর্তারা যাওয়ার সময় ইব্রাহীম মোল্লাকে থানায় গিয়ে দেখা করতে বলেন। পরে ওই রাতে ইব্রাহিম মোল্লা স্বজনদের সাথে নিয়ে থানায় গেলে ‘আনিছুরের বিরুদ্ধে নাশতকার অভিযোগ আছে’ এ কথা বলে তার কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। কিন্তু তিনি তাদের টাকা দিতে না পারায় তারা তাকে গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেন। ফলে নিরুপায় হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন ইব্রাহীম মোল্লা ও তার স্বজনেরা। পরদিন সকালে লোকমুখে ইব্রাহীম মোল্লা জানতে পারেন, স্থানীয় জামতলা কাঁচা রাস্তার উপর আনিছুরের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে আছে। এ সংবাদ পেয়ে ইব্রাহীম মোল্লা ঘটনাস্থলে গেলে উল্লিখিত আসামিরা তাকে লাশের কাছে যেতে বাধা দেন। এরপর পুলিশ তড়িঘড়ি করে আনিছুরের লাশ গাড়িতে তুলে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। কিন্তু ওই সময় আসামিদের ভয়ে এ ঘটনায় মামলা করতে সাহস পাননি। তবে বর্তমানে পরিবেশ অনুকূলে হওয়ায় তিনি আদালতে এই মামলা করেছেন।