যশোরে এক রাতে দুই খুন

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোর সদর উপজেলায় শুক্রবার রাতে দুই জন খুন হয়েছেন। এদের মধ্যে চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের বাদিয়াটোলা গ্রামে কুয়েত প্রবাসী বিএনপি কর্মী মেহেরআলীকে গুলি ও নওয়াপাড়া ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামে জাহাঙ্গীর আলম মিঠুকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করা হয়।
নিহত কুয়েত প্রবাসী মেহের আলী সদর উপজেলার চূড়ামনকাটি ইউনিয়নের বাদিয়াটোলা গ্রামের বাসিন্দা ও ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে দুবৃর্ত্তরা তাকে নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্যা করে। স্বজনরা জানান, মেহের আলী গত ২৬ জুলাই কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। বিদেশ যাওয়ার আগে তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। গত দুইদিন ধরে মেহের আলী যশোর বাহাদুরপুর এলাকার আনোয়ার হোসেন নামে তার এক খালু শ্বশুরের বাড়িতে ছিলেন। ঘটনার দিন শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে তিনি তার বাড়িতে ফেরেন। এদিন বাড়িতে রাতের খাওয়া শেষে বাড়ির কলাপসিবল গেটে তালা মারতে যান। এ সময় আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা দুর্বৃত্তরা গেটের সামনে এসেই মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলির শব্দ শুনে স্বজনেরা দ্রুত উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের ছোট ভাই আবু আব্দুল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার ভাই মেহের আলীসহ আমরা তিন ভাই বিদেশে থাকি। বিদেশ যাওয়ার আগে ভাই বিএনপির রাজনীতি করতো। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্ন সময়ে জেলও খাটিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ভাইয়ের কাছে নেতাকর্মীরা চাঁদাও দাবি করতো। কিন্তু ভাই দিতে চাইতো না। তাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিলো। গত সোমবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সেইসব নেতাদের সাথে কথা-কাটাকাটি হয়েছে বলে শুনেছি। এসব রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছি। এই হত্যা পূর্বপরিকল্পিত। কেননা আমার ভাইয়ের বাড়ির চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। যারা মেরেছে, তারা আগে থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট করে দিয়েছে। তাকে হত্যার করার জন্য হত্যাকারীরা বাড়ির গেটের সামনে লুকিয়ে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল।
এদিকে অপর হত্যাকা- ঘটে সদর উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের আড়পাড়ার বিলপাড়া মাঠে। সেখান থেকে পুলিশ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাহাঙ্গীর আলম মিঠু (৩২) নামে এক টাইলস মিস্ত্রির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে। স্বজনেরা জানান, মিঠু দুই বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে বাড়ি ফেরেন। বাড়িতে এসে টাইলস্ মিস্ত্রির কাজ করতেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিঠুকে তার বন্ধু সুমন, বাপ্পি, ইব্রাহিম মোবাইল ফোনে চা খাওয়ার জন্য ডেকে নিয়ে যায়। রাত ৮টার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। পরে শনিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে আড়পাড়া পশ্চিমপাড়ার একটি কলা বাগানে এলাকাবাসী তার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান তারা। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহত টাইলস মিস্ত্রি জাহাঙ্গীর আলম মিঠু একই উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের আড়পাড়ার মোদাচ্ছের আলী পুত্র।