কয়রায় কপোতাক্ষে পোনা ধরে সংসারের খরচ মেটান নারীরা

0

কয়রা (খুলনা) সংবাদদাতা ॥ স্বামী রোজগার করে না, বাধ্য হয়ে বাড়ির সামনে কপোতাক্ষ নদে মাছের পোনা ধরে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। নিজেই নদীতে জাল পাতি, নিজেকেই নৌকা বাইতে হয়। ছেলেটা যখন সময় পায় আমার সাথে কাজ করে। কপোতাক্ষ নদে নৌকায় মাছ ধরার সময় এসব কথা বলেন কয়রা উপজেলার দক্ষিণ ভাগবা গ্রামের সন্যাসী বাইনের স্ত্রী শান্তনা বাইন ( ৩২)।
একই গ্রামের জহুরুল ইসলাম গাজীর স্ত্রী জহুরা খাতুন বলেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে এই নদে নেট জাল টেনে মাছের পোনা বিক্রি করে আমাদের সংসার চালাচ্ছি। আমাদের নিজস্ব কোনো জায়গা নেই। এই নদ আমাদের সবকিছু। কাক ডাকা ভোরে উঠে নদে নামি। মাছের পোনা ধরে বিক্রি করে বাজার করি। শুধু শান্তনা, জহুরা নয় তাদের মতো একাধিক নারী প্রতিদিন কপোতাক্ষ নদে নৌকায় করে নেট জাল টেনে জীবনযাপন করছেন।
রাত ৯ টার দিকে বানিয়াখালী খেয়াঘাট সংলগ্ন নদের চরে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন জায়গায় আলো জ্বলছে। এ সময় নদীতে নেট জাল টেনে মাছ ধরছিলেন বালিয়াখালী গ্রামের জগদীস ম-লের স্ত্রী সুপ্রিয়া ম-ল ( ৫০)। তিনি বলেন, আমি সারাবছর নেট জাল টেনে নদে মাছ ধরি। সন্ধ্যা থেকে এ পর্যন্ত ২০টা পোনা ধরা পড়ছে। তিনি আরও বলেন, বাড়ি বসে না থেকে নদে নেট জাল টানলে কয়টা টাকা আয় হয়। সংসারের কাজে ব্যয় করতে পারবো।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অভাব ও দারিদ্র্যতার কারণে একাধিক নারী-পুরুষ কপোতাক্ষ নদে নেট জাল টেনে মাছের পোনা ধরে বিক্রি করে সংসার চালান। গভীর রাতেও একদল মানুষ নদে নেট জাল টেনে মাছে পোনা ধরেন। এভাবে তারা তাদের জীবন যাপন করছেন। লবণাক্তার কারণে উপকূলীয় এলাকার নারীরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিশিত রঞ্জন মিস্ত্রি বলেন, দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে উপকূলীয় অঞ্চলের নারীদের অধিকাংশই নদে মাছ ধরে জীবিকা অর্জন করছেন। তাদের জন্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা কেউ কখনও ভাবিনি। আমার দাবি তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সরকারি-বেসরকারি সংস্থার এগিয়ে আসা উচিত।