পাইকগাছার শেফালী আজ স্বাবলম্বী

0

এইচএম শফিউল ইসলাম,কপিলমুনি (খুলনা)॥ পাইকগাছার সুন্দরবন সংলগ্ন গড়ুইখালী ইউনিয়নে বিশুদ্ধ খাবার পানির উৎস রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন স্বামী পরিত্যাক্তা শেফালী। তিনি উপজেলার বাসাখালী গ্রামের হত দরিদ্র খালেক সানার মেয়ে। পিতার অভাব- অনটনের কারণে এস এস সি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন নি শেফালী। পিতা অভাবের মধ্য তাকে বিয়ে দেন একই এলাকার মহসিন সানার সাথে। সেখানে ৩ সন্তানের মা হন শেফালী।
শেফালী জানায়, তার পিতার একটু জমি বিক্রি করে বিদেশে পাঠায় মহসিনকে। বিদেশে যাওয়ার পর প্রথম কিছুদিন স্বামী মহাসিন খোঁজ নিলেও পরবর্তীতে তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন । এক পর্যায়ে মহসিন তাকে তালাক দেন। তখন ৩টি সন্তান নিয়ে দুঃসহ জীবন কাটতে থাকে শেফালীর। কী করবে তার কুল- কিনারা পাচ্ছিলেন না। কারণ তার যেটুকু জমি ছিলো তা বিক্রি করে তিনি স্বামীকে বিদেশে পাঠান।
এদিকে উপকুলীয় জনগোষ্ঠীর নারীদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লবণাক্ততা মোকাবেলায় অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছা এবং সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগরসহ ৫টি উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়নের ১০১টি ওয়ার্ডে বাস্তবায়িত হয় বিশুদ্ধ পানি প্রকল্প। লবণাক্ততা মোকাবেলায় অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্যে নারীদের বিশুদ্ধ খাবার পানির সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকল্প এলাকা পাইকগাছায় স্থানীয় বাস্তবায়নকারী সংস্থা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে এলাকার উপকারভোগীদের জন্যে ৩ হাজার ২১২টি বসতবাড়ি ভিত্তিক বিশুদ্ধ খাবার পানির উৎস স্থাপন করা হয়। এসব উৎস সচল রাখার জন্যে জিসিএ প্রকল্প হতে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাজের পরিধি অনুসারে কমপক্ষে একজন নারী উদ্যোক্তা নির্বাচন করা হয়। শেফালী এখন সেসব উদ্যোক্তাদের একজন। এটা করে এখন তার সংসার চলছে বেশ।

শেফালী জানান, এক সময় আমার সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হতো। সবাই যখন পানি আপা বলে ডাকে তখন নিজের মধ্যে দারুণ একটা ভাললাগা কাজ করে। বর্তমানে সুন্দরভাবে সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলেদের ভালভাবে লেখাপড়াও করাচ্ছি।
পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন বলেন, সমাজে এমন ঘটনা বিরল।