বজরাপুরে চার ফুট মাটির নিচে মিললো প্রাচীণ এক বজরা

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ॥ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার এসবিকে ইউনিয়নের বজরাপুর গ্রামে কয়েকশ বছরের পুরানো একটি বজরা বা বৃহৎ আকারের নৌকার সন্ধান পাওয়া গেছে। নৌকাটি চার ফুট মাটির নিচ থেকে খনন করে পাওয়া গেছে। বিশাল আকৃতির কাঠের এই নৌকা দেখতে প্রতিদিন কৌতুহলী মানুষের ভিড় বাড়ছে।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, বজরাপুর গ্রামের নজের আলীর ছেলে মনছের আলী তিন দিন আগে বজরাপুর বাওড় থেকে ধান ক্ষেতে পানি দেওয়ার জন্যে নালা খনন করছিলেন। খুঁড়তে খুঁড়তে তার কোদালের মাথায় নৌকার কাঠের কিছু অংশ উঠে আসে। এ খবর চাউর হয়ে পড়লে গ্রামের মানুষ সমষ্টিগতভাবে খনন করতে থাকেন। তিন দিন ধরে খননের পর গতকাল বধুবার পুরো নৌকার কাঠামো স্পষ্ট হয়।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য পূর্ণিমা রানী জানান, এই গ্রামের নাম বজরাপুর। হয়তো কোন এক সময় এই গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র অবলম্বন ছিল বজরা। সেই নাম অনুসারে গ্রামটির নামকরণ করা হয়েছে ‘বজরাপুর’। তিনি আরো জানান, খবর শুনে তিনিও বজরাপুর বাওড় এলাকার হালদারপাড়ায় গিয়ে বৃহৎ নৌকাটি দেখে এসেছেন। তিনি এটি সংরক্ষণের দাবি করেন।
গ্রামবাসী পূজা রানীর ভাষ্যমতে বজরাপুর গ্রাম একটি প্রাচীন জনপদ। এই গ্রামটি কপোতাক্ষ নদের সংযোগস্থলে গড়ে ওঠে। গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ জমিদার ও আধুনিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। ফলে এই নৌকাটি বজরাপুর গ্রামের নামকরণ ও গ্রামের মানুষের জীবন যাপনের সাক্ষ্য বহন করে। বিশ^বিদ্যালয় পড়–য়া পূজা রানী নৌকাটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে গবেষণা কাজে লাগানো যায় কিনা সেই দাবি রাখেন।
খননকাজে যুক্ত বজরাপুর গ্রামের ইসমাইল মল্লিক জানান, নৌকাটি লম্বায় প্রায় একশ ফুট ও চওড়া ২০ফুট হবে। নৌকার বেশির ভাগ অংশ বাঁওড়ের মধ্যে ঢুকে আছে। নৌকাটি শাল কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বজরাপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, গ্রামের কৃষক মনছের আলীর জমিতে পাওয়া নৌকাটি বহুকালের পুরানো। কাঠগুলো পচে নষ্ট হয়ে গেছে। লম্বা কাঠগুলো কিছুটা ভালো আছে। মাটির চার ফুট নিচে এই নৌকাটি পাওয়া গেছে। স্মরণকালের মধ্যে এত বড় নৌকা এ অঞ্চলে চলাচল করেনি বা দেখাও যায়নি।
তিনি আরও জানান, নৌকাটি দেখতে প্রতিদিন শ শ মানুষ ভিড় করছেন। তবে এখনো প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে আসেননি।
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাস জানান, পুরানো নৌকা পাওয়ার বিষয়টি তিনি প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরকে জানাবেন যাতে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. গোলাম ফেরদৌস জানান, এ ধরণের নিদর্শন প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।