‘ক্ষমতা নবায়নের’ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে খুলনাবাসী শাসক দলকে লালকার্ড দেখিয়েছে : মহানগর বিএনপি

0

খুলনা ব্যুরো ॥ আওয়ামী লীগের ‘ক্ষমতা নবায়নের’ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে খুলনাবাসী শাসক দলকে লালকার্ড দেখিয়েছে বলে দাবি করেন খুলনা বিএনপি নেতারা। প্রহসনের ডামি নির্বাচনে ভোটদান থেকে বিরত থাকায় খুলনাবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা বলেছেন, জনগণকে সাথে নিয়ে চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে। নেতৃবৃন্দ অফিস-আদালত, দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে বিএনপি ঘোষিত ৪৮ ঘন্টার হরতাল সর্বাত্মকভাবে সফল করায় নগরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
রোববার (৭ জানয়ারি) বিএনপি মিডিয়া সেল প্রদত্ত বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, বিএনপিসহ ৬২টি রাজনৈতিক সংগঠনকে নির্বাচন থেকে দূরে রেখে সরকার একটি একদলীয় নির্বাচন আয়োজন করেছিল। জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ দেশে ও বহির্বিশ্বে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখানোর জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল। নিজ দলীয় নেতা ও গৃহপালিত কতিপয় দলকে নির্বাচনে নামিয়ে বিপুল অর্থ ব্যয়ের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিল। পাশাপাশি বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন নজিরবিহীন ব্যয়বহুল দুই হাজার তিন শ কোটি টাকা খরচ করেছে। যার আসন প্রতি ব্যয় ছিল সাত কোটি টাকা। অথচ ২০১৮ সালের নিশিরাতের নির্বাচনে ব্যয় ছিল সাত শ কোটি টাকা এবং ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনে ব্যয় ছিল ২৬৫ কোটি টাকা। বিপুল অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি শাসক দল তাদের দলীয় ক্যাডারদের নামিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাধ্যতামূলক ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। এছাড়া বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা, কর্মসৃজন প্রকল্প, টিসিবি কার্ডধারীসহ বিভিন্ন ভাতাভোগীদেরকে ভোট কেন্দ্রে না গেলে সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়েছিল। ভোটের আগে তাদের এই হুমকির মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল আশঙ্কাজনক হারে।
অপরদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা বানোয়াট মামলায় আসামি বানিয়ে কারাবন্দী কিংবা ঘরবাড়ি ছাড়া করে, তাদের পরিবার পরিজন ও সাধারণ ভোটারদের হুমকি ধামকি দিয়েও নিকৃষ্ট স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতার রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ ভোটারদের কেন্দ্রে টানতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। খুলনার প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের নেওয়ার জন্য নৌকার পোস্টার সংবলিত ইজিবাইক ও রিকশা চলাচল করতে দেখা গেলেও দিনের বেশির ভাগ সময় অধিকাংশ কেন্দ্র ছিল ফাঁকা। কেন্দ্রের সামনে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দিনভর নৌকার ব্যাজ পড়ে অবস্থান নিলেও দিন শেষে প্রতীয়মান হয়েছে তাদের সবাই প্রহসনের এই ভোটে অংশ নেয়নি। কারণ তারা সবাই ভোট দিলে কাস্টিংয়ের হার বেশি হতো। খুলনার মানুষ এই প্রহসনের নির্বাচনকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান ও বর্জন করেছে।
বিবৃতিতে বিএনপি নেতারা বলেন, সরকার নিজের ক্ষমতার মসনদকে নিরঙ্কুশ করতে একতরফা প্রহসনের ভোটের নামে নাটক মঞ্চস্থ করে দেশকে চরম ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, অর্থনৈতিক মুক্তিলাভ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মুক্ত মত প্রকাশের অধিকারসহ গণমানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে আগামীর সংগ্রামে বর্তমানের মতো শরিক থাকার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিদাতারা হলেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আবু হোসেন বাবু, সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী প্রমুখ।