ইসরায়েলি বর্বরতার শিকার ফিলিস্তিনি শিশু ও নারীদের বিষয়ে নিরবতা কেন?

0

 

এবার ইসরায়েলি হামলার অন্যতম শিকার ফিলিস্তিনি শিশু ও নারীরা। অব্যাহত দমনপীড়ন হত্যার শিকার হয়ে ফিলিস্তিনিরা যখন এর জবাব দেয়; তখন সেটিকে তাদের ওপর একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে হাতিয়ার বানায় ইসরায়েল। এবার গাজায় হামাসের হামলার বাহানায় বেসামরিক লোকজনের ওপর মারাত্মক সব যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে শত শত ঘরবাড়ি বোমা মেরে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১০ সহস্রাধিক বেসামরিক মানুষ হত্যা করলেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
গাজা নিয়ে ইসরায়েল পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছে। পুরো এলাকাটি মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবর, সেখানকার প্রতি ইঞ্চি জমিন বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। একবার বিমান হামলার শিকার হয়নি এমন এলাকা নেই। মনে রাখতে হবে এগুলো কোনো দুর্গ নয়, সাধারণ মানুষের বসতি। প্রতিদিন কয়েক শ’ করে বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারাচ্ছেন।
আক্রমণের শুরুর দিকে গাজার একটি হাসপাতালে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েল। গত বৃহস্পতিবারও খবর পাওয়া গেছে, একটি শিশু হাসপাতালে দুই দফায় হামলা চালানো হয়। এ ধরনের অমানবিক হামলার পর হামাসসহ প্রতিপক্ষকে এর দায় চাপিয়ে দিতে চায় ইসরায়েল। এবারের সামরিক অভিযানে সবচেয়ে বড় শিকার শিশুরা। ফিলিস্তিনিদের সমূলে নিঃশেষ করে দিতে শিশুদের নিশানা করা হয়েছে কি-না সেই সন্দেহ ক্রমে দৃঢ় হচ্ছে।
গাজার দক্ষিণ অংশকে ইসরায়েল নির্যাতন ও বন্দিশিবির হিসেবে ব্যবহার করছে। এখানে বিপুল যুদ্ধবন্দী, রাজনৈতিক বন্দী, শরণার্থী বা জাতিগত বা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সশস্ত্র পাহারায় আটক বা বন্দী রাখা হয়। পর্যবেক্ষকরা ইঙ্গিত দিচ্ছেন, এ এলাকাকে ইসরায়েল নাৎসিদের মতো কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে এগুচ্ছে। প্রথমে নিরাপত্তার কথা বলে সেখান থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেয়া হয়। পরে আবার বিমান হামলা চালিয়ে অবশিষ্ট মানুষকে নৃশংসভাবে তাড়িয়ে দিচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ভোরে বিমান হামলা চালানোর পর জেনিন শরণার্থী শিবিরের আশপাশের অবকাঠামো ইসরাইল বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে।
গাজাকে ফিলিস্তিনিশূন্য করে এলাকাটিকে একটি বন্দিশিবির বানানোর উদ্যোগে এগিয়ে চলছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে প্রকাশ্যে ঘৃণ্য অপরাধ আর কোথাও এভাবে হতে পারেনি।
হামাসের এবারের রকেট হামলা ছিল দীর্ঘ দমনপীড়ন ও ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের প্রতিক্রিয়া। বিশ্ব সম্প্রদায় ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ আমলে না নিয়ে পীড়িতদের প্রতিক্রিয়াকে অপরাধ সাব্যস্ত করতে চায়। এটি কোনোভাবে ন্যায্য আচরণ নয়। বিশ্ব সম্প্রদায়কে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। ফিলিস্তিনিদের নির্মূলে যে নির্মমতা ইসরাইল চালাচ্ছে; এর বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে বিশ্ব সম্প্রদায়কে। ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের বিচার চাইতে হবে।