যুগে যুগে স্বৈরতন্ত্রের পতন, আন্দোলন এবং পরাশক্তির ভূমিকা

0

সুজায়েত শামীম সুমন ।। যুগে যুগে জনতার সফল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসকের পতনের বেশকিছু ঘটনায় পরিলক্ষিত হয়েছে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে পরাশক্তির ভূমিকা। মূলত পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন এবং সময়ের সাপেক্ষে তাদের সরাসরি হস্তক্ষেপের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্র প্রধানকে কেবল ক্ষমতা ছাড়তে হয়নি; বরণ করতে হয়েছে করুণ পরিণতি। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার বেশ কিছু দেশে এমনটি ঘটতে দেখা গেছে। কোথাও আবার ঘটেছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু যেটাই হোক না কেনো; এমন কোন রাষ্ট্রের উদাহরণ নেই যেখানে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবাধিকার, সু শাসন এবং রাষ্ট্রের সকল নাগরিক সুখে শান্তিতে থাকার পরও সাম্রজ্যবাদী শক্তির প্রবেশ ঘটেছে বা গণতন্ত্রের নামে তারা সরকার উৎখাতে ভূমিকা রেখেছে। মূলত যেখানে ভিন্নমত পোষণকারীদের ওপর চলতে থাকে দিনের পর দিন নির্যাতন, ক্রমাগত ঘটতে থাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বহুদলীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে শ্বাসরোধ করে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়; সেখানেই অনুপ্রবেশ ঘটে পরাশক্তির।
এ প্রসঙ্গে কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরার পূর্বে বিশ্ব জুড়ে সমাদৃত বিশেষ একটি গবেষণার কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন। হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক এরিকা চেনোওয়েথের গবেষণার আলোকে গেলো বছর বিবিসি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল; যেটির শিরোনাম ছিল – “একজন স্বৈরশাসককে ক্ষমতা থেকে সরাতে কত মানুষকে রাস্তায় নামতে হয় ।” সেই গবেষণায় বলা হয় কোন জনগোষ্ঠীর মাত্র ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ যদি গণবিক্ষোভে যোগ দেন; তাতেই তারা সফল হতে পারেন।
এরিকা চেনোওয়েথ এবং তাঁর সহযোগী গবেষক মারিয়া স্টেফান ১৯০০ সাল হতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বে যেসব প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে, সেগুলো বিশ্লেষণ করে চমকপ্রদ একটি তথ্য তুলে ধরেছেন। তাঁর মতে সহিংস আন্দোলনের চাইতে অহিংস গণআন্দোলনের সাফল্যের সম্ভাবনা দ্বিগুণ। কেননা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, পোস্টার সাঁটানো, কর্মবিরতি, লিফলেট বিতরণ, অবস্থান ধর্মঘট সহ অহিংস আন্দোলনে অনেক বেশি লোকের সমাগম ঘটে।
উদাহরণ হিসেবে সার্বিয়ার স্লোবোদান মিলোসেভিচের বিরদ্ধে বুলডোজার বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বিক্ষোভকারীদের ওপর সৈন্যরা কেন গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল; সে প্রশ্নের উত্তরে সৈন্যরা বলেছিল – তারা গুলি চালাতে পারেনি কারণ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে তাদের পরিচিতজনরা ছিলেন। তবে প্রফেসর এরিকা চেনোওয়েথ তাঁর গবেষণাকালে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিক্ষোভের আয়োজন করা এবং আন্দোলনে ভাঙন সৃষ্টির ক্ষেত্রে শাসকগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দেয়া বা নিজেদের প্রোপাগান্ডা চালানোর বিভিন্ন উদাহরণ খুঁজে পেয়েছেন।
যুগে যুগে স্বৈরাচারের পতনের বিশ্লেষণে দেখা গেছে এ ধরণের শাসকদের উত্থান শুরু হয় সামরিক অভ্যুত্থান থেকে কিংবা ভোটে জনপ্রিয়তা পাওয়ার মধ্য দিয়ে। পরবর্তীতে প্রশাসনিক সকল ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটিয়ে তথাকথিত নির্বাচনের আয়োজন করে তারা ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করে। অনিয়ম এবং দুর্নীতি বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থের অবিশ্বাস্য রকমের অপচয় ঘটতে দেখা যায় একনায়কতন্ত্র শাসন ব্যবস্থায়। বিশেষ করে রাষ্ট্রের বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা কর্মচারিদের বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে তোলা হয় ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে। এবং খুব স্বাভাবিক ভাবেই রাষ্ট্রের এ সমস্ত অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা সাধারণ মানুষের ঘাড়ে চেপে বসে। তৈরি হয় শ্রেণী বৈষম্য। বিশেষ করে সামাজিক ভারসাম্য বিনষ্ট হতে শুরু করলে জনগণের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে রাষ্ট্র জুড়ে। অপরদিকে শাসকগোষ্ঠী পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুরু করে দমন পীড়ন, রাজনৈতিক মামলা, বিচারিক হয়রানি, বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুমসহ নানা অপকৌশলা।
বাস্তবতা হলো যে কোন রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ব্যাহত হওয়া এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপার বৃদ্ধি পেলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, জাতিসংঘসহ বিশ্ব মোড়লেরা সেদিকে দৃষ্টিপাত করেন। পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোসহ নানাভাবে স্বৈরশাসকের ওপর চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রাখে। কিন্তু সেই চাপ বা কূটনৈতিক বার্তাকে পাত্তা না দিয়ে স্বৈরশাসকরা নিজেদের ছোট্ট গোন্ডির আধিপত্যের ঘোরে এতটাই অহঙ্কার অনুভব করেন যে, বিশ্ব রাজনীতি এবং অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি উপলব্ধি করেও ক্ষমতার মসনদ থেকে নামতে চান না। বাস্তবতা অনুভব করে তারা বিচলিত হলেও সেটি প্রকাশ না করে বরং পাল্টা হুঙ্কার ছুড়ে দেয়। যেমনটি করতেন ইরাকের রাষ্ট্রপতি ও বাথ পার্টির প্রধান সাদ্দাম হোসেন। একনায়তান্ত্রিক শাসন, অহেতুক বক্তব্য, হুঙ্কার, নিজ দেশের জনগণের চাপা ক্ষোভসহ নানা কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষেপে উঠতে শুরু করে পশ্চিমা বিশ্ব। এবং ২০০৩ সালে ক্ষমতাচ্যুত হবার মধ্য দিয়ে তাঁর দীর্ঘ ২৪ বছরের শাসনামলের অবসান ঘটে।
জনবিচ্ছিন্ন এবং বেপরোয়া শাসননীতির কারণে ইরাকের জনগণ তার বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে, যা তাঁর শাসনামলের শেষ দশ বছরে পরিলক্ষিত হয়। যদিও তিনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করে আলোচিত হয়েছিলেন, পক্ষান্তরে আবার সমালোচিত হন বিলাসী খরচের জন্য। ২৪ বছরে তিনি ৭০ টিরও বেশি প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর একনায়কতন্ত্র শাসন ব্যবস্থা দেখতে দেখতে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে ইরাকী জনগণ। এবং সেই সুযোগে মার্কিনীরা মরণাস্ত্র অনুসন্ধানের নামে ইরাকে অনুপ্রবেশ করে।
প্রসঙ্গক্রমে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার একনায়ক হিসেবে পরিচিত গাদ্দাফির কথা বলা যায়। দীর্ঘ ৪২ বছর তিনি এক হাতে শাসন করেছেন। দেশ-বিদেশে সুনামের পাশাপাশি তাকে নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। এদিকে মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলীর পর হোসনী মোবারক ছিলেন সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শাসক। ১৯৮১ সালের ৬ অক্টোবর সেনাবাহিনী এক সদস্য কর্তৃক তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সা’দাত নিহত হওয়ার পর হোসনী মোবারক ক্ষমতায় আসেন। ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার দায়ে বিশ্বজুড়ে তিনি নিন্দিত এবং গণজাগরণের মাধ্যমে লাঞ্ছিত হয়ে তাকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়।
চিলির স্বৈরশাসক অগাস্তো পিনোশের পতন ঘটেছিল ১৯৯০ সালে গণআন্দোলনের মুখে। তিনি ১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। তাঁর ১৭ বছরের শাসনামলে গুমের ঘটনায় ১ হাজার ৪৬৯ ব্যক্তি নিখোঁজ হন। এই ব্যক্তিদের মধ্যে ১ হাজার ৯২ জন বন্দী হওয়ার পর নিখোঁজ হয়েছিলেন।
অপরদিকে জিম্বাবুয়েতে ১৯৮০ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা রবার্ট মুগাবে পরবর্তীতে পরিণত হন স্বৈরশাসকে, যার ৩৭ বছরের শাসনের অবসান ঘটে রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। জিম্বাবুয়ের সেনাপ্রধান জেনারেল চিওয়েঙ্গা মুগাবের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। তারপর থেকে ক্রমাগত সমর্থন হারাতে থাকেন মুগাবে। যদিও এর নেপথ্যে পরাশক্তির ভূমিকার কথা বলা হয়ে থাকে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ৩ দশক ধরে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার পর ২০১৭ সালের নভেম্বরে জনতার আন্দোলন এবং পরিশেষে সেনা অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যূত হন রবার্ট মুগাবে। জরাজীর্ণ অবস্থায় পরিণত হওয়া দেশটির অর্থনীতির চাকা সচল হতে শুরু করে রবার্ট মুগাবের পতনের পর। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে বিশে^র বিভিন্ন দেশে বসবসরত জিম্বাবুয়ের পরিশ্রমী নাগরিকরা। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরো ত্বরান্বিত করেছে।
স্বৈরশাসক পতনের দৃষ্টান্ত হিসাবে তিউনিশিয়া স্বৈরশাসক জিনে আল-আবেদিন বেন আলীর কথা উল্লেখযোগ্য। ২০২১ সালে এমনি একটি সফল বিপ্লবের উদাহারণ রয়েছে সুদানে। সেখানে আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন ওমর আল-বশির। একইভাবে আলজেরিয়াতে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকাকে।
আমাদের স্মরণকালের মধ্যেই ঘটেছে এসব সফল গণআন্দোলন। আর এই আন্দোলনের পথ ধরে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে এসেছে বড় রাজনৈতিক পরিবর্তন। সাম্প্রতিককালের জলন্ত উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। দক্ষিণ এশিয়ার এই রাষ্ট্রের পরিস্থিতি তথা সংকোট নিয়ে ক্রমাগত লিখে যাচ্ছিল বিশ্বের বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম। কিন্তু কেউ বুঝে উঠতে পারেনি শাসকগোষ্ঠীর ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে মানবীয় এক গণ অভ্যুত্থানের প্রস্তুতী নিতে শুরু করে দিয়েছিল মানসিক ভাবে প্রচন্ড সাহসী ও শক্তিশালী একদল তরুণ-তরুণী।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে শ্রীলঙ্কায় গণতান্ত্রিক শাসন চলছে। কখনো সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেনি। এর মধ্যে উত্থানপতন ছিল, সরকার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু রাজাপাকসের পরিবার প্রায় সব সময়ই ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকে গেছে। কিন্তু গেলো বছরের ৯ জুলাই দেশের মানুষ তার সাম্রাজ্য কেড়ে নিয়ে দেশ ছাড়া হতে বাধ্য করে। বৈশ্বিক মহামারী সহ নানা কারণে ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে দেউলিয়া হতে বসা দ্বীপরাষ্ট্র রাজাপাকসের পতনের মাত্র দেড় বছরের মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। খাদ্য ও জ¦ালানী সংকোট কাটিয়ে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন উর্ধ্বমুখী।
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে ইরানের গণ অভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ না করলে নয়। উত্তর-ঔপনিবেশিক যুগে চীন, কিউবা, আলজেরিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, এঙ্গোলা, মোজাম্বিক, গিনিবিসাউ সহ একাধিক দেশে সংঘটিত দীর্ঘ সশস্ত্র-লাড়াইয়ের বিপরীতে ইরানের গণবিপ্লব ছিল সর্বপ্রথম ব্যতিক্রম। দীর্ঘ সশস্ত্র-লড়াইয়ের বিপরীতে ইরানের গণঅভ্যুত্থান ঘটেছিল সমসাময়িক ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয়। ১৯৭৯ সালে আয়াতুল্লাহ খোমেনির ডাকে ইরানে বিপ্লব ঘটে যায়।
ইরান সাম্রজ্যের দ্বিতীয় ও পাহলভি পরিবারের সর্বশেষ সম্রাট মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভী ছিলেন একজন ভয়ংকর স্বৈরশাসক। তিনিও হিটলারের মতোই গড়ে তুলেছিলেন বিশেষ বাহিনী; যেটির নাম ছিল সাভাক বাহিনী। কেউ শাহের শাসনের বিরোধিতা করলে গুপ্ত বাহিনী তাকে খুন বা গুম করে ফেলত। ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সাভাকের নির্যাতন। এক কথায় শাহের শাসন ছিল ইরানিদের জন্য আতঙ্কের নাম। তার নির্যাতনে আয়াতুল্লাহ খোমেনি ফ্রান্সের এক ছোট গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে ইরানবাসীর করণীয় সম্বন্ধে নির্দেশনা দিতে থাকতেন। সে নির্দেশনা স্ফুলিঙ্গের মতো গোটা ইরানে ছড়িয়ে পড়ে এবং ১৯৭৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ইসলামিক বিপ্লবের ফলে শাহ পাহলভী ক্ষমতাচ্যুত হন।
পরিশেষে বলা প্রয়োজন; যে কোন রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে পরাশক্তির প্রভাব মঙ্গলজনক নয়। যদিও একনায়কতন্ত্র শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কোন না কোন পরাশক্তির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাবের ইতিহাস খুজেঁ পাওয়া গেছে একাধিক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক পর্যালোচনায়। এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা গেছে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও স্বেচ্ছাচারিতার মাত্রা বৃদ্ধি পেলেই ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগিয়ে যায়। মূলত সংশ্লিষ্ট দেশের জনগণ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ফুসে উঠতে শুরু করলে কার্যকর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় পরাশক্তি নামে খ্যাত বিশ্বের এক বা একাধিক রাষ্ট্র।