ঝিনাইদহে ঋণদান সমিতির নামে সুদের কারবারে নিঃস্ব মানুষ

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ॥ সুদখোর রফিকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ঋণ গ্রহীতারা ফুঁসে উঠেছেন। উচ্চহারে সুদের ভারে কাহিল শ শ নারী -পুরুষ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। এ ঘটনায় জেলা সমবায় অফিস থেকে তদন্তের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
রফিকুল ইসলাম রফি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের কেসমত গড়িয়ালা গ্রামের কেসমত আলী বিশ্বাসের  ছেলে। বিষয়খালী বাজারে তার ‘রান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি’ রয়েছে। মূলত এই সমবায় সমিতির আড়ালে তার চলে রমরমা সুদে কারবার। তার কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মানুষ স্বাবলম্বী হওয়ার পরিবর্তে নিঃস্ব হচ্ছে। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগে মহারাজপুর ইউনিয়নের কেশবপুর, কয়ারগাছি, রামপেড়ে, খুনকার পাড়া ও গড়িয়ালা গ্রামের ১২জন নারী- পুরুষ উল্লেখ করেছেন, সুদখোর রফি রান সমবায় সমিতির মাধ্যমে চড়া হারে সুদ আদায় করে থাকেন। কখনো কখনো এই সুদের হার ১৫ থেকে ৭০% হয়। ফলে ঋণ নিয়ে মানুষ আর শোধ করতে পারেন না। কয়ারগাছি গ্রামের কেয়া মহিলা সমিতির হালিমা তার কাছ থেকে দুই বছর মেয়াদী ৪২ হাজার টাকার ঋণ নিয়ে ১১ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু এখনো খাতায় বাকি রয়েছে এক লাখ কুড়ি হাজার টাকা। এই ঋণ প্রদানের সময় হালিমা খাতুনের কাছ থেকে ব্লাঙ্ক চেক ও তিন’শ টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্প গ্রহণ করেন রফি। টাকা না দিলে ফাঁকা চেকে ইচ্ছামতো টাকার অংক বসিয়ে আদালতে মামলা করে ঋণ গ্রহীতাদের ভিটেছাড়া করা হয়। এমন একাধিক মানুষ এরকম হয়রানিমূলক মামলায় ঝুলছে।
বিষয়খালী গ্রামের শামীম হোসেন অভিযোগ করেন, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে রফির বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার পর সুদখোর রফি ঋণ গ্রহীতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্ণা দিচ্ছেন। মামলা মিটিয়ে সুদের টাকা মওকুফ করার প্রলোভন দেখাচ্ছেন। তিনি এখন ডিসঅ্যাবিলিটি ইনকুইজিশন অ্যাকটিভিটিজ (দিয়া) নামে একটি এনজিও’র অনুমোদন নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
রান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি এবং ডিসঅ্যাবিলিটি ইনকুইজিশন অ্যাকটিভিটিজ-র পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, উচ্চহারে সুদ গ্রহণের কথা সমবায় সমিতির ম্যানুয়ালে রয়েছে। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এই মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ব্লাঙ্ক চেক ও তিনশ টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ঋণ গ্রহীতাদের সম্মতিতে গ্রহণ করা হয়।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমবায় অফিসার জাফর ইকবাল জানান, রফির উচ্চহারে সুদ গ্রহণের বিষয়টি তদন্ত করতে একজন পরিদর্শক পাঠানো হচ্ছে। আগামীকাল রোববার দুইপক্ষের শুনানী গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, রফি যে চিহ্নিত সুদখোর তা এলাকার মানুষ তাকে জানিয়েছেন। তদন্তে ফেঁসে গেলে তাকে ছাড়া হবে না বলে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।