সবার নজর কাড়ছে নতুন ধান ব্লাক রাইস

0

 

ওসমান গণি, রাজগঞ্জ (যশোর)॥ দিগন্ত জুড়ে বিস্তৃত ধানক্ষেত। মাঝখানে এক টুকরো জমিতে সবুজের মাঝে কালচে রঙের ধান। প্রথম বারের মতো ব্লাক রাইস নামের এ ধান চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের রাজগঞ্জ বাজার সংলগ্ন মনোহরপুর গ্রামের তবিবর রহমান নামের এক কৃষক। তিনি চলতি বোরো মৌসুমে ক্ষেতে এ ধান লাগিয়ে সবার নজর কেড়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ব্লাক রাইস ধানগাছ প্রথমে সবুজ থাকলেও ধান পাকার সঙ্গে সঙ্গে কালো হতে শুরু করে। চালের রংও কালো হয়। এ চাল অত্যন্ত দামি এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। ব্লাক রাইস চাষ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতুহলের কমতি নেই। এক নজর দেখার জন্যে প্রতিদিন দলে দলে লোকজন এসে তার ভিড় করছেন। ফলে এমন একটি ধান চাষ করতে পেরে আনন্দের যেন শেষ নেই চাষি তবিবর রহমানের।
সরজমিনে দেখা যায়, চারপাশে সবুজ ধান ক্ষেতের মাঝখানে কালো রঙের ধানের আবাদ। এ ধান দেখতে ভিড় করছেন এলাকার মানুষ। ধানের নাম শুনে স্থানীয় লোকজন কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ধান গাছে হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে দেখার পর অনেকেই জানতে চাইছেন ধানটা কোন দেশের ? চাষের পদ্ধতি কেমন ? ফসল তুলতে কতদিন সময় লাগে ? খরচ কেমন ? চাল কোথায় বিক্রি হয় ? রান্নার পর ভাতের রং কেমন হয় ? খুঁটে খুঁটে এমন সব প্রশ্নের জবাব খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন সাধারণ দর্শনার্থীরা।
কৃষক তবিবর রহমান জানান, অনলাইন থেকে বীজ সংগ্রহ করে শখের বশে চলতি বোরো মৌসুমে এক বিঘা জমিতে ব্লাক রাইস আবাদ করেন। পরীক্ষামূলকভাবে কালো রঙের ধানের চাষ শুরু করেছি। ভালো ফলন পেলে আগামীতে আরো বেশি জমিতে ব্লাক রাইসের আবাদ করবো। তবে ব্লাক রাইস চাষাবাদ অন্যান্য আধুনিক ধান চাষের মতোই। এতে অতিরিক্ত সার বা পানির প্রয়োজন হয়না। প্রয়োজন হয় না আলাদা কোন পরিচর্যারও। প্রথমবার ব্লাক রাইস চাষ করে বাম্পার ফলন পাবেন বলে আশা চাষি তবিবর রহমানের।
এছাড়া ঝাঁপা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হানুয়ার গ্রামের মৃত শহর আলী গাজীর ছেলে শাহজাহান গাজী তার ১০ কাঠা জমিতে নতুন জাতের ব্লাক রাইস চাষ করেছেন। তিনিও বাম্পার ফলনের আশা করছেন।
স্থানীয় চাষি আব্দুস সাত্তার জানান, এই ব্লাক রাইসের ভাত খেলে হার্ট, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস রোগ সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায় এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এজন্যে তিনিও আগামী মৌসুমে ব্লাক রাইসের চাষ করবেন।
এ ব্যাপারে মণিরামপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা তবিবুর রহমান জানান, এ উপজেলায় এটাই প্রথম। রাজগঞ্জ বাজার সংলগ্ন মনোহরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মালেক গাজীর ছেলে কৃষক তবিবর রহমান এক বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে এ ধানের আবাদ করেছেন। ধানটি কালো। চাল ও ভাত কালো হয়। অত্যন্ত পুষ্টিকর এ ব্লাক রাইসে মানব দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে।