বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তার প্রস্তাব চীনের

0

লোকসমাজ ডেস্ক। বেড়ে চলা বিদ্যুৎ সংকটের কারণে বাংলাদেশের বহু অঞ্চলের বাড়িঘর এবং কারখানাগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে চীন। মূলত জ্বালানি সরবরাহের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তির দেশটি। বুধবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া।

নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা করে যে, তারা দেশের শতভাগ বিদ্যুৎ চাহিদা পূর্ণ করেছে তারা। কিন্তু এর কয়েক মাসের মাথায় এখন দেশটি নিজেদের ন্যূনতম বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতেও ব্যর্থ হচ্ছে।

বেশি দামের কারণে সরকার স্পট বাজার থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি বন্ধ করায় এবং আমদানি কমাতে ও ক্রমহ্রাসমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের জন্য তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করার পর এই সংকট আরও গভীর হয়েছে।

চলতি বছরের জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে বাংলাদেশে রেশনিং করা হচ্ছে বিদ্যুৎ। কিন্তু এরপরও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে এবং জ্বালানি সংকট দেশের শিল্পকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এমনকি উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে শ্রমিকদের আয় কমেছে এবং কিছু কোম্পানির পক্ষে ব্যবসা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

গত অক্টোবরের শেষ দিকে চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সাংবাদিকদের বলেছিলেন, (বাংলাদেশে) পরিস্থিতির অবনতি হলে বেইজিং পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক। তিনি বলেছিলেন, ‘যদি কোনও জরুরি পরিস্থিতি হয়, আমি মনে করি, বরাবরের মতো, চীন চুপ করে বসে বসে দেখবে না। আমরা কিছু ব্যবস্থাও নেব।’

লি জিমিং আরও বলেন, বাংলাদেশের সরকারি সংস্থাগুলো তাকে জ্বালানি তেলের জরুরি সরবরাহের সম্ভাবনা সম্পর্কে খতিয়ে দেখতে বলেছে। তার ভাষায়, ‘তিনি (এ সম্পর্কে) চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বার্তা পাঠিয়েছেন। আমি মনে করি উভয় পক্ষই এটি নিয়ে কাজ করছে।’

চীনের দিকে বাংলাদেশের ঝুঁকে পড়ার সম্ভাবনা এমন এক সময়ে সামনে আসলো যখন দক্ষিণ এশীয় কিছু দেশ অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে দেশটির ওপর ক্রমবর্ধমানভাবে নির্ভরশীল হয়ে উঠছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ চলতি সপ্তাহে চীন সফর করছেন। তার সফরের লক্ষ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড অবকাঠামো (বিআরআই) প্রকল্পের পুনরুজ্জীবন এবং নগদ অর্থের সংকটে থাকা পাকিস্তানের জন্য আরও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা। এছাড়া সংকট-বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কাও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে তহবিল ছাড়ের প্রচেষ্টায় বেইজিংকে তার ঋণ পুনর্গঠন করতে রাজি করানোর চেষ্টা করছে।