চৌগাছায় বাজার জামে মসজিদের জমি ক্রয়ে টাকা নয়-‘ছয়ের অভিযোগ

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছা বড় বাজার জামে মসজিদের নামে জমি ক্রয়ে কমিটির বিরুদ্ধে কোটি টাকা তছরুপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে টাকা নয়ছয় নয়, ভবিষ্যতের কথা ভেবে দলিলে টাকার অংক বেশি দেখানো হয়েছে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি তদন্ত করা জরুরি বলে বলে মনে করছেন মসজিদের মুসল্লীসহ এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাজার জামে মসজিদের নামে থাকা সম্পত্তি সরকার অধিগ্রহণ করে সেখানে চৌগাছা হাসপাতালের ১০০ শয্যায় উন্নিত করণের লক্ষে নতুন ভবন নির্মাণ করছে। মসজিদ ফান্ডে বিপুল পরিমাণ টাকা থাকায় কমিটির সভাপতি আব্দুল মুজিদ ও সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজা কচিসহ নেতৃবৃন্দ পুনরায় জমি কেনার সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা চৌগাছা-যশোর সড়কের পাশে পুরাতন উত্তরণ সিনেমা হলের জায়গাসহ আশে পাশের ২৯ শতক জমি ক্রয় করেন।
সূত্র জানায়, যে ৩টি দাগে এই জমি ক্রয় করা হয়েছে তা হলো উত্তরণ সিনেমা হলের জায়গা চৌগাছা জেএল ১১১ নং মৌজার এসএ ৪৭১, আরএস ১৮৭৬, খতিয়ান ভুক্ত এসএ দাগ-৮৬, আর এস দাগ ১৩২৪, জমির পরিমাণ ২ দশমিক ৬২৫ শতক, এসএ খতিয়ান ৪৭৪, আরএস খতিয়ান ২৭৫৪, এসএ দাগ ৯১, আরএস দাগ ১৩৪৪, জমির পরিমাণ ৩ দশমিক ৭৫ শতক, ও এসএ খতিয়ান ৪৭১, আরএস খতিয়ান ১৮৭৬, এসএ দাগ ৮৬, আরএস দাগ ১৩২৪, জমির পরিমান ২৩ শতক হিসেবে মোট ২৯ শতক। এই জমির মালিক হচ্ছেন মো. নজরুল ইসলাম, তার স্ত্রী মোছা. হাসিনা বেগম, ছেলে নিহত তরিকুল ইসলামের নাবালক সন্তান নাইমুর রহমান ও তাওসিফ রহমান এবং নিহত তরিকুলের স্ত্রী শরিফা খাতুন।
জমির মালিকদের নিকট হতে মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ গত ৬ আগস্ট চৌগাছা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মসজিদের নামে সমুদয় জমি কবলা দলিল মূলে রেজিস্ট্রি করেন। এ সময় মসজিদ কমিটি দুটি কবলা দলিলে জমির মূল্য যথাক্রমে ১ কোটি ৭৫ লাখ ও ৩ কোটি ৬৫ লাখ মোট ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা দেখিয়েছেন।
সূত্র মতে, বাস্তবে জমির মালিকরা মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে ৩ কোটি টাকা পেয়েছেন। এদিকে এ খবর প্রকাশের পর বাকি ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা কমিটির লোক ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে বাজারে ব্যাপকভাবে আলোচনা হচ্ছে। এ নিয়ে অনেকে বিষয়টি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। সত্যিকারভাবে যদি এই টাকা ভাগাভাগি হয়ে থাকে তা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান।
জমির একাংশের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তরিকুলের ব্যাংকের ঋণ ২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। একই সাথে তরিকুলের স্ত্রীকে ২৫ লাখ টাকা দিয়েছেন। মোট ৩ কোটি টাকা তারা পেয়েছেন। ব্যাংকের ঋণ শোধ করার জন্যে ও নাতিদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ৫ শতক জমি ১৬ লাখ টাকা করে ও ২৪দশমিক৩৭ শতক জমি ৯ লাখ টাকা করে বিক্রি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজা কচির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু বাজারের জমি তাই, মূল্যও বেশি, ভবিষ্যতে কেউ যাতে হক সেবা না করতে পারে সে লক্ষ্যে দলিলে জমির দাম বেশি উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকলেই জানেন। তবে মসজিদের কোনো টাকা নয়ছয় হয়নি, সকল হিসাব মিটিং করে রেজুলেশনে উল্লেখ করা আছে।
কমিটির সভাপতি আব্দুল মুজিদের মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে রিসিভ করেন ছেলে টিপু সুলতান। এ সময় তিনি বলেন, ‘বাবা বাইরে আছেন, কমিটির সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলেন’।