খুলনায় ভুয়া চিকিৎসক ও ভেজাল গুড় বিক্রেতার দণ্ড

0

 

খুলনা ব্যুরো॥বিএমডিসির সনদ ব্যতীত ডাক্তার উল্লেখ করা (মিথ্যা বিজ্ঞাপন), মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ এবং ভেজাল গুড় উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের অভিযোগে খুলনায় দু’ব্যক্তিকে দন্ড দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ভেজাল গুড় উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের অভিযোগে মো. আকবর আলীকে (২৮) তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদন্ড এবং বিএম আলম নামক একজন ভুয়া চিকিৎসককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বুধবার আলাদাভাবে খুলনা জেলা প্রশাসন এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে উল্লিখিত দু’টি অভিযান পরিচালিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নগরীর দৌলতপুর দেয়ানা মুকুল ভান্ডার এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলীর ছেলে আকবর আলী নিজ বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল গুড়ের কারখানা গড়ে তুলেছেন। তিনি বিষাক্ত কেমিক্যাল, খাবার অনুপযোগী রং এবং মিষ্টির গাদ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল কথিত গুড়।
গোপন খবরের ভিত্তিতে এ তথ্য পেয়ে বুধবার সকাল ১০টার দিকে খুলনা জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অপ্রতিম কুমার চক্রবর্ত্তী’র নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে ভেজাল গুড় তৈরির বিষয়টি প্রমাণিত হয়। সেখান থেকে ২২ কেজি ভেজাল পাটালি গুড় জব্দ করে তা বিনষ্ট করা হয়। এ অভিযোগে আকবর আলীকে গ্রেফতার করে তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী শেখ মো. নাজমুল হুদা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আকবর আলী ভেজাল খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯-এর ৪৩ ধারার অপরাধ করেছে। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় এবং সে অপরাধ স্বীকার করায় আদালত তাকে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড প্রদান করেন। তাকে খুলনা জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযানে কনজুমার রাইটস সোসাইটির প্রতিনিধি এ সালাম মন্টু এবং দৌলতপুর থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের খুলনা জেলা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও বাজারে তদারকি করা হয়। এ সময় স্থানীয় পথের বাজার এলাকায় বিএমডিসির সনদ ব্যতীত ডাক্তার উল্লেখ করা (মিথ্যা বিজ্ঞাপন) ও প্রচুর পরিমাণ মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করায় মেসার্স আলেয়া মেডিকেল নামক ফার্মেসির মালিক বিএম আলমকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অভিযানের নেতৃত্বদানকারী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের খুলনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর আলম বলেন, বিএমডিসির সনদ ব্যতীত ডাক্তার উল্লেখ করা বেআইনী। এছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করাও আইনসম্মত নয়। এ কারণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুসারে উল্লিখিত জরিমানা করা হয়।
তিনি বলেন, অভিযানে ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা, ব্যবসায়ীদের ক্রয়-বিক্রয় রশিদ সংরক্ষণ ও মূল্য তালিকা প্রদর্শন করতে অনুরোধ জানানো হয় এবং সচেতন করতে লিফলেট, প্যামপ্লেট বিতরণ করা হয়। অভিযানে ফুলতলা থানা পুলিশ ও ক্যাব প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। জনস্বার্থে এ তদারকি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।