‘টিপ নিয়ে তোলপাড়’ জানতেন না সেই পুলিশ সদস্য

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ কপালে টিপ পরা নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় এক প্রভাষককে হেনস্তার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ। নাজমুল তারেক নামের ওই ব্যক্তি ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগের কনস্টেবল পদে কর্মরত। তবে শনিবারের (২ এপ্রিল) ওই ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে যে সারাদেশে তোলপাড় হয়েছে তা জানতেন না অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য। সাধারণ বাটন ফোন ব্যবহার ও টেলিভিশন না দেখায় বিষয়টি তার কাছে অজানাই থেকে যায়। পরে তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তিনি জানতে পারেন বিষয়টি নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় হচ্ছে। সোমবার (৪ এপ্রিল) এসব তথ্য জানান পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার।
তিনি বলেন, ২ এপ্রিল ঘটনা ঘটার পর অভিযুক্ত পুলিশ সসদ্যকে খুঁজে বের করতে আমাদের সময় লেগেছে প্রায় দুদিন। ডিএমপি কমিশনার, আইজিপি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ঘটনার যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দেন। পুরো তেজগাঁওয়ে কর্মরত পুলিশের সব সদস্যকে নিয়ে আমরা একযোগে তদন্তে নামি। সবার নিরলস প্রচেষ্টায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই। খুঁজে পেতে দুদিন লাগার বিষয়ে ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল তেজগাঁও বিভাগে কর্মরত নন। তিনি ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগে কর্মরত। আজ (সোমবার) সকালে তাকে আমরা শনাক্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, তিনি (অভিযুক্ত পুলিশ) জানিয়েছেন, টিপ পরা নিয়ে সারাদেশে তাকে নিয়ে তোলপাড় হয়েছে সেটি তিনি জানতেন না। ঘটনার পরদিন তিনি অফিসও করেছেন। তিনি বাটন মোবাইল ফোনসেট ব্যবহার করেন। এছাড়া দুদিন টেলিভিশনে খবর না দেখার কারণে ঘটনা সম্পর্কে জানতেন না তিনি। এমনকি তার কোনো সহকর্মী এ বিষয়ে তাকে কিছু জানাননি।
অভিযুক্ত নাজমুল তারেক কনস্টেবল জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগে কর্মরত তিনি। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ, ডিজিটাল ও অ্যানালগ সব পর্যায়ে তদন্ত করে কনস্টেবল নাজমুলের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছি। তার মোটরসাইকেল নম্বর ধরেও নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আমাদের প্রাথমিক কাজ ছিল অভিযুক্তকে শনাক্ত করা। যেহেতু জিডিতে অভিযুক্তের নাম, পদবি ও মোটরসাইকেলের নম্বর পরিপূর্ণ ছিল না। শুধু সংক্ষিপ্ত বিবরণী ছিল। তবে আমরা চেষ্টা করে পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি। তার গ্রামের বাড়ি যশোরে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। পাশাপাশি ওই শিক্ষকের জিডিরও তদন্ত চলছে- যোগ করেন ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার। এর আগে গত শনিবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে উত্ত্যক্তের শিকার হন তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। তিনি অভিযোগ করেন, হেঁটে কলেজের দিকে যাওয়ার সময় হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন- ‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দেন তাকে। ওই মধ্যবয়সী ব্যক্তির গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল। ঘটনার প্রতিবাদ জানালে একপর্যায়ে তার পায়ের ওপর দিয়েই ওই পুলিশ সদস্য বাইক চালিয়ে চলে যান বলে অভিযোগে করেন ড. লতা সমদ্দার। পরবর্তীসময়ে এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি।