বাবর-বরকত-ফুয়াদের জামিন আবেদন নাকচ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খোন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. সাজ্জাদ হোসেন বরকত এবং এইচএম ফুয়াদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে হয় বরকত ও রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের শুনানি। রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. মাহবুবুল হাসান চার্জ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। আগামী ১৭ই এপ্রিল চার্জ গঠনের পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত। একইসঙ্গে খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের আইনজীবী ডিভিশন চাইলে আদালত কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. মাহবুবুল হাসান। অপরদিকে আসামি পক্ষে ছিলেন এভোকেট মিজানুর রহমান ও এডভোকেট শাহীনূর ইসলাম। পরে এপিপি মাহবুবুল হাসান বলেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. সাজ্জাদ হোসেন বরকত এবং এইচএম ফুয়াদ জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া মামলার চার্জ গঠনের আংশিক শুনানি হয়েছে। পরবর্তী শুনানি আগামী ১৭ই এপ্রিল। শুনানিতে এপিপি আদালতকে বলেন, ২০০২ সালের পর আসামি সাজ্জাদ হোসেন বরকত ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ডে ব্যাপকভাবে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা শুরু করেন।
এই সময় আসামির কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ছিল না। ২০০৮ সাল থেকে আসামি ফরিদপুর জেলার এলজিইডি, বিআরটিএ, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে, পৌরসভা, জেলা পরিষদ পাসপোর্ট অফিস, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাদের মনোনীত লোকজনদের দিয়ে পরিচালনা করে অবৈধ পন্থায় কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছে। এছাড়া তারা ভূমি দখল টেন্ডার ও পরিবহন সেক্টরে ব্যাপক চাঁদাবাজি শুরু করে। আসামি তার মনোনীত লোকজন দিয়ে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে প্রচুর অংকের টাকা অবৈধভাবে অর্জন করে কাফরুল থানাধীন মহাখালীতে অফিস ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন ঠিকাদারি ও কনস্ট্রাকশন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফরিদপুর জেলার সকল প্রতিষ্ঠানের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতো। আসামি রিমান্ডে এসব নানা বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এপিপি বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, কমিশন বাণিজ্য, মাদক ব্যাবসা, চাঁদাবাজির মাধ্যমে ২৫শ’ ৩৫ কোটি ১১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা (২৫৩৫১১৪৪০০০) অর্জন করে। যা ১৮৮টি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে উত্তোলন-পূবক বণ্টন করে বণ্টনকৃত টাকা বিদেশে পাচার করায় বর্তমানে এসব একাউন্টের সর্বশেষ স্থিতি ৯ কোটি ৭৫ লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৮ টাকা (৯৭৫৬৬৮৭৮)।
অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা প্রসিকিউশনের এসব কথা নাকচ করে আদালতকে বলেন, আসামিরা রাজনীতির স্বীকার। তা নাহলে খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরকে পুলিশ আটক করলো ঢাকায়। কিন্তু তাকে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে কারো কারো মনের জ্বালা মিটাতে, খুশি করতে ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়া হলো। এটা কিসের আলামত। তাছাড়া, ঘটনা ফরিদপুরের, মামলা হলো ঢাকার কাফরুলে। মানি লন্ডারিং এর অভিযোগে সিআইডি মামলা করলেন। কিন্তু এ মামলা করার এখতিয়ার সিআইডি’র নেই। গত ৩রা মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে এ চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস। ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।