মনিরামপুর উপজেলা নির্বাচন ডিউটিতে দিতে ১০ লাখ টাকা ঘুষ আদায়!

0

মজনুর রহমান,মনিরামপুর(যশোর)॥ মনিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ডিউটির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে প্রায় দুই হাজার আনসার ও ভিডিপি সদস্যের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাতশ করে অন্তত ১০ লাখ টাকা উৎকোচ বাবদ আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। আর এ অভিযোগ রয়েছে প্রশিক্ষক(টিআই) ফারুক হোসেন ও ইউনিয়ন কমান্ডারদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনিরামপুরে মোট ১৬৫ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি প্রতিকেন্দ্রে ১২ জন করে আনসার ও ভিডিপি (পুরুষ-মহিলা) সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা।
নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের জন্যে নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতি সদস্যের জন্য এবার বরাদ্দ রয়েছে সব মিলিয়ে তিন হাজার দুইশ টাকা। আর এ টাকা ভিডিপি অফিসের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের জন্যে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসের প্রশিক্ষক(টিআই) ফারুক হোসেন একমাস আগে থেকে সদস্যদের নামের তালিকা প্রস্তুত শুরু করেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে, ফারুক হোসেন ভোটের ডিউটির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে সদস্যদের কাছ থেকে উৎকোচের টাকা আদায়ের জন্যে আবুল হোসেন, মোশাররফ হোসেন, আশরাফ হোসেন, রাহাত আলী, আবুল কালাম, কামাল হোসেন, লাভলী ইয়াসমিনসহ উপজেলার মোট ৯০ জন কমান্ডারকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আর কমান্ডাররা প্রতি সদস্যের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাতশ টাকা করে আদায় করছেন।
অন্যদিকে প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন প্রতি গ্রুপের(১২ জন) নাম চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে কমান্ডারদের কাছ থেকে চার হাজার করে আদায় করছেন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আনসার ও ভিডিপি অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, টিআই ফারুক হোসেনকে কমান্ডারদের মাধ্যমে টাকা আদায়ের দায়িত্ব দিয়েছেন উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানাকে। সূত্র আরো জানায়, কর্মকর্তার সম্মতি ছাড়া টাকা আদায় করা সম্ভব নয়। আনসার সদস্য আবদুল ওয়াদুদ জানান, এবার ভোটে দায়িত্ব পালনের জন্যে তালিকাভুক্ত হতে ইউনিয়ন কমান্ডারদের মাধ্যমে অফিসারকে পাঁচ থেকে সাতশ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আদায়কৃত টাকার পরিমাণ ১০ লাখ টাকার বেশি।
কাজল, রেহেনা, আবুল, কামাল, মফিজুরসহ বেশ কয়েকজন সদস্য অভিযোগ করেন, গতবারের উপজেলা নির্বাচনের চেয়ে এবার ভাতা বেশি দেওয়া হবে বলে উৎকোচের টাকা আগেভাগেই পরিশোধ করতে হয়েছে। এ ব্যাপারে মনোহরপুর ইউপির কমান্ডার আশরাফ হোসেন জানান, তিনি এবার পাঁচটি (৬০ জন) গ্রুপের তালিকা জমা দিয়েছেন। তবে কোন টাকার বিনিময়ে নয়। কোম্পানি কমান্ডার আবুল হোসেন অনুরোধ করে বলেন, উৎকোচ(টাকা) নেওয়ার ব্যাপারে ঘাটাঘাটি না করাই ভাল। প্রশিক্ষক(টিআই) ফারুক হোসেন ভোটের ডিউটির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্যে টাকা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন।উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা বলেন, টাকা নেওয়ার অভিযোগ আমার জানা নেই। তবে যদি কোন ব্যক্তি অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেন তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।