প্রসঙ্গ : ইসির সংলাপে উপস্থিতি

0

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে নতুন নির্বাচন কমিশন। সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের কর্মকৌশল নির্ধারণে কমিশন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে। আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে তারা প্রথম সংলাপ করে শিক্ষাবিদদের সাথে। ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি। সবার শেষে সংলাপ হবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। অতীতেও নির্বাচন কমিশন এ ধরনের সংলাপ করেছে। ইসির প্রথম দিনের সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ৩০ শিক্ষাবিদকে। এর মধ্যে অংশ নেন মাত্র ১৩ জন। আয়োজকরা বলেছিলেন, অনুপস্থিতির দীর্ঘ তালিকা অপ্রত্যাশিত। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন শুধু ইসির একার দায়িত্ব নয়। এমন একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকল নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে। এ কারণেই ইসি সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের মতামত গ্রহণ করে থাকে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘অনেকের অসুবিধা থাকতে পারে। যারা এসেছেন তাদের সঙ্গে খুব ভালভাবেই আলোচনা হয়েছে। সবাই এলে আমরা আরও বেশি খুশি হতাম।’ সিইসির বক্তব্য অনুযায়ী অনেকের অসুবিধা থাকতেই পারে। বেশিরভাগ ব্যক্তির সমস্যা থাকা কাক্সিক্ষত ছিল না।
এ সংলাপের পর আশা করা হয়েছিল পরবর্তী বৈঠক আশানুরূপ উপস্থিতিতেই হবে। আমন্ত্রিতদের গরিষ্ঠ সংখ্যক সংলাপে অংশ নেবেন। সংবাদ সূত্র বলছে, ইসির পক্ষ থেকে তেমন উদ্যোগ নেয়াও হয়েছিল। কিন্তু সংলাপের সংবাদ শিরোনাম হলো ইসির সংলাপ : আমন্ত্রিতদের অর্ধেকের বেশি অনুপস্থিত। যার অর্থ হলো যথা পূর্বং, তথা পরং। মঙ্গলবার বিভিন্ন পেশাজীবীদের সাথে আয়োজিত সংলাপে ইসি আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ৪০ জনকে। পত্র মারফৎ আমন্ত্রণ জানানোর পরও সংলাপে উপস্থিত হন ১৫ জন। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের অনুপস্থিতি। গুরুত্ব ও কার্যকারিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে কিনা সে ব্যাপারে ইসির কারো বক্তব্য গতকাল কোনো সংবাদ মাধ্যমে পাওয়া যায়নি। তবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক আলোচনা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, এই সংলাপের ব্যাপারে তাদের কোনো আগ্রহ নেই, আর এর কার্যকারিতাও নেই। প্রধান বিরোধী দলের এই বক্তব্য সংলাপের বিশাল অনুপস্থিতির একটি উত্তর বলে কেউ মনে করলে খুব ভুল বলা যাবে কি-না তা ভেবে দেখতে হবে ।
সিইসি বলেন, ‘অতীতে কিছু নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। আগামী নির্বাচন যেন অধিক অংশগ্রহণমূলক হয় সে জন্য সবার মতামত নেয়া হচ্ছে। জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য ইসি কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ। এজন্য কমিশন কি কি করতে পারে সে বিষয়ে আমরা সকলের মত নেয়ার চেষ্টা করছি।’ নতুন সিইসির এ বক্তব্য বেশ স্পষ্ট ও আন্তরিক। নতুন ইসির কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক। বিদায়ী সিইসি শুরুতে একই রকম কথা বলেছিলেন। কিন্তু তাদের কথা ও কাজে শেষ পর্যন্ত মিল না থাকায় জাতি আস্থা হারায়। এটা সত্য যে, সবার কাছে নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব নয়। তবে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে সঠিক বলে দাবি করার মতো কাজ করতে পারলে নিজেকে নিরপেক্ষ দাবি করা যায়। নির্বাচন দেশের সকল মানুষেরই প্রত্যাশা একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের এ জন্যে তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উঠেছে। মানুষ তার ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা খুঁজতে সে দাবিতে সমর্থন দিচ্ছে। আমরা চাই, মানুষ তার ভোটাধিকার ফিরে পাক। এ জন্য সর্বাধিক জনগণের প্রত্যাশার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হোক।