সেঞ্চুরিয়নেই কি রচনা হবে সাফল্যের নতুন ইতিহাস?

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ওয়ান্ডরার্সে হয়নি। তাতে কি! দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়নি এখনো। যে সেঞ্চুরিয়নে প্রথম ম্যাচে ৩১৪ রানের বড় স্কোর গড়ে তামিমের দল পেয়েছিল ৩৮ রানের জয়, সেই মাঠে কাল বুধবার জিততে পারলেই তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১‘এ জিতে যাবে টাইগাররা। তামিম, লিটন, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ইয়াসির আলী রাব্বি, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ আর তাসকিন-মোস্তাফিজরা কী তা পারবেন? ১৮ মার্চ এই মাঠেই লিটন দাস, সাকিব আল হাসান আর ইয়াসির আলীরা স্বচ্ছন্দে খেলে দলকে ৩০০ প্লাস রানের পুঁজি গড়ে দিয়েছিলেন। শরিফুল, তাসকিন আর মিরাজরা সেই স্কোরকেই জয়সূচক পুঁজিতে রূপান্তরিত করেছেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই সেঞ্চুরিয়নে শেষ ম্যাচ খেলতে নামার আগে একটা অন্যরকম আস্থা ও আত্মবিশ্বাস কাজ করার কথা টাইগারদের মনে।
আজ মঙ্গলবার অলররাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজের কথা শুনেও মনে হলো সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচটি সেঞ্চুরিয়নে বলেই একটা অন্যরকম আস্থা ও আত্মবিশ্বাসী টাইগাররা। তাদের বিশ্বাস ও আস্থা, সেঞ্চুরিয়নের মাঠ ও উইকেট ওয়ান্ডরার্সের চেয়ে ভাল এবং ব্যাটারদের অনুকুলে। প্রথমদিন কোনোরকম অস্তস্তি ছাড়া স্বচ্ছন্দে ব্যাটিং করা গেছে। বোলাররাও নিজেদের করণীয় কাজগুলো ঠিকমত করতে পেরেছেন। তাই অলরাউন্ডার মিরাজ মনে করেন, ‘এখানকার (সেঞ্চুরিয়ন) উইকেট খুবই ভালো। আমরা যেহেতু প্রথম ম্যাচ খেলেছি, উইকেট ভালো থাকে এখানে। আমাদের আত্মবিশ্বাসও আছে যে এখানে তিনশর বেশি রান করেছি।’ মিরাজের আশা, বোর্ডে একটা লড়াকু পুঁজি গড়ে দিতে পারলে তাকে ডিফেন্ড করা সম্ভব। বোলারদের জন্য যদি ভালো একটা সংগ্রহ এনে দিতে পারি দায়িত্ব নিয়ে খেলে, তাহলে বোলাররাও তা ডিফেন্ড করতে পারব আশা করি।’ মিরাজ বোঝানোর চেষ্টা করেন, ‘ওয়ানডে ক্রিকেটে ২০০ রান করে জেতা সম্ভব নয়, বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে। আমরা যদি ভালো একটা স্কোর গড়ি, তাহলে জেতাটা সহজ হয়ে যায়।’
মিরাজ মনে করেন, ওয়ান্ডরার্সের উইকেট কিন্তু স্বচ্ছন্দে খেলার ও রান করার মতো ছিল না। অসমান বাউন্স ছিল, বল উঁচু-নিচু হচ্ছিল। এটা ব্যাটসম্যানদের জন্য অনেক কঠিন।’ মিরাজের দাবি ওয়ান্ডরার্সের উইকেট ভালো থাকলে অন্যরকম চিত্র হতে পারত। সেঞ্চুরিয়ানের ব্যাটিং সহায়ক স্থিতিশীল বাউন্সে লিটন, তামিম, সাকিব, ইয়াসির আলী রাব্বি আর শেষ দিকে মিরাজ হাত খুলে খেলতে পেরেছেন। তামিম আর লিটন উদ্বোধনী জুটিতে ৯৫ রানের মজবুত ভিত রচে দিয়েছিলেন। এরপর সাকিব আর ইয়াসির আলী রাব্বির ১১৫ রানের পার্টনারশিপে স্কোর গিয়ে ঠেকে ৩১৪‘তে। শুরুতে মার খেলেও স্কোরবোর্ডটা মোটা তাজা থাকায় পরের স্পেলে মিরাজ স্পিন ঘূর্ণিতে দলকে জেতান। কিন্তু ওয়ান্ডরার্সে সেটা সম্ভব হয়নি। রাবাদার বাড়তি বাউন্সের মুখে অস্বস্তিতে পড়া। মজবুত ভিত রচনার পরিবর্তে ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে রীতিমত খাদের কিনারায় পড়ে যাওয়া। সেখান থেকে আফিফ আর মিরাজ সামনে আগানোর চেষ্টা করেও ওই রাবাদার বাধার মুখেই একটা পর্যায়ে গিয়ে আর পারেননি। যে কারণে ইনিংস থেমে যায় ১৯৪ রানে। বুধবার সেঞ্চুরিয়নের শেষ ম্যাচেও এমন উইকেটের প্রত্যাশায় টাইগারা সমর্থকরা। তাদের বিশ্বাস প্রথম ম্যাচের মত উইকেট থাকলে বাংলাদেশের সম্ভাবনা বেশি থাকবে। তখন হয়ত সেঞ্চুরিয়নেই লিখা হতে পারে সাফল্যের নতুন ইতিহাস। এদিকে একটি প্রশ্ন কিন্তু আছে, ওয়ান্ডরার্সে টাইগারদের শর্ট বলে নাকাল হতে দেখে স্বাগতিকরা যদি আবার কালকের ম্যাচের জন্য সেঞ্চুরিয়নের সবচেয়ে বাউন্সি পিচটাকে বেছে নেয়, তখন?