যশোরের কৃতি সন্তান রাবি’র জনপ্রিয় অধ্যাপক ফারুক আর নেই# অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের শোক

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ যশোরের কৃতি সন্তান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজকর্ম বিভাগের জনপ্রিয় অধ্যাপক ড. ফারুক হোসাইন আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি ক্যান্সারে ভুগছিলেন। গতকাল সোমবার ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার বড় ভাই দৈনিক নয়াদিগন্তের চিফ রিপোর্টার হারুন জামিল। দীর্ঘদিন ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন অধ্যাপক ফারুক। জানা গেছে, ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ২৬ জুলাই ভর্তি হন। এরপর গত তিন-চার মাস পূর্বে চেকআপ করতে গিয়ে দেখেন তার ওষুধগুলো ঠিকমতো কাজ করছে না। তারপর হাসাপাতালে রেখে কেমো দেয়া হয়। কিছুটা শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও গত কয়েক দিন আগে স্বাস্থ্যের অবনতি হয়ে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল ভোর পৌনে ৫টায় তিনি ইন্তিকাল করেছেন।
অধ্যাপক ফারুক হোসেনের বাড়ি যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের দোগাছিয়ার গ্রামে। পিতার নাম মরহুম কফিল উদ্দিন বিশ্বাস। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর। তিনি স্ত্রী ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার আগে অধ্যাপক ফারুক ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। এ কলেজেও তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে প্রিয় ছিলেন। ২০০১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন যশোরের এ কৃতি সন্তান। অধ্যাপক ফারুকের অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে সমাজ কর্ম বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো: রবিউল ইসলাম বলেন, অধ্যাপক ফারুক ছিলেন শিক্ষার্থীবান্ধব এবং বিভাগের জনপ্রিয় শিক্ষক। অত্যন্ত মেধাবী ও একজন ভালো মানের গবেষকও ছিলেন তিনি। তার মতো একজন শিক্ষক বর্তমান সময়ে পাওয়া খুব কঠিন। তিনি শিক্ষার্থীদের মনের ভাষা খুব সহজেই বুঝতে পারতেন। যার ফলে বিভাগের প্রতিটি শিক্ষার্থীর অন্তরে তিনি আলাদা একটা জায়গায় করে নিয়েছিলেন। তার অনুপস্থিতি সমাজকর্ম পরিবারের জন্য হতাশাজনক ও অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তার ইন্তিকালে শুধু সমাজকর্মের নয় পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো বলে জানান তিনি। শোক প্রকাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, অধ্যাপক ফারুক দীর্ঘদিন থেকেই ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তবে তার এই বিদায় আমাদের খুবই মর্মাহত করে। তাকে মুম্বাই থেকে দেশে আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা করবে। অধ্যাপক ফারুক হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, অধ্যাপক ফারুক হোসেন তরুণদের স্বপ্ন দেখাতে পারতেন। তিনি ও তার বড় ভাই হারুন জামিলের উৎসাহ, উদ্দীপনায় কত তরুণের জীবন বদলে গেছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। একটি গ্রাম, কিংবা ইউনিয়ন নয়, একটি প্রজন্মকে শিক্ষিত ও আত্ম-নির্ভরশীল হতে সহায়তা করেছেন এই দুই ভাই। অধ্যাপক ফারুকের মত মানুষের চলে যাওয়া শুধুমাত্র তাঁর পরিবারের জন্য নয়, এই সমাজ, এই দেশের জন্যও অপূরণীয় ক্ষতি। অনিন্দ্য ইসলাম অমিত মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।