সত্য বলিতে দ্বিধা করিও না

0

তসলিমা নাসরিন
১. মেঘলা নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে তার স্বামী শারীরিক নির্যাতন করছে বিয়ের পর থেকেই। এক সময় নির্যাতন করতে করতে লোকটি বিয়ের ছ’মাসের মধ্যেই মেঘলাকে মেরেই ফেলেছে। মেঘলা এখন মৃত। অত্যাচারীর বাড়ি থেকে মেঘলা পালায়নি কেন? আর ১০টা মেয়ের মতোই হয়তো ভেবেছে, পালিয়ে যাবো কোথায়! তাই অসহায়ের মতো অত্যাচার সহ্য করেছে। বাপ মা’য়ের কথা আর কী বলবো। তারা তো অপদার্থ কম নয়। নির্যাতিত হচ্ছে মেয়ে, জানার পরও মানিয়ে নে, সহ্য কর বলতে থাকে। ক’জন বাবা মা মেয়েকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে নিজের কাছে নিয়ে যায় এবং নির্যাতককে তালাক দেওয়ার পরামর্শ দেয়!
মেয়ের কথা তারা ভাবে না, ভাবে লোকের কথা। লোকে কী বলবে!
প্রতিটি দেশেই নির্যাতিত মেয়েদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র থাকা উচিত। কোনও মেয়ে নির্যাতিত হওয়ার শুরুতেই যেন সেখানে আশ্রয় নেয়। সেখানে বিনেপয়সায় তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে, খাওয়া পরা আলোচনা পরামর্শ ইত্যাদি দেওয়া হবে, ডাক্তার, মনোবিদ দেওয়া হবে, যে কাজে তারা পারদর্শী, সে কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। অতঃপর স্বনির্ভর হওয়ার জন্য সব রকম সাহায্য-সহযোগিতা করা হবে। ধনীরা যেন অর্থহীন কাজে টাকা না ঢেলে নির্যাতিত মেয়েদের আশ্রয়কেন্দ্রে টাকা ঢালেন। সরকার থেকেও যেন সব রকম সাহায্য করা হয়। সেই সব আশ্রয়কেন্দ্রের যেন চব্বিশ ঘণ্টা ফোন খোলা থাকে, যে কোনও মেয়েই বিপদে পড়ে যেন ফোন করতে পারে। রেডিও টেলিভিশনে পত্রপত্রিকায় যেন এর বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। যে মেয়ে বিপদে পড়েছে, নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, আশ্রয়কেন্দ্রের রেসকিউ বাহিনী যেন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে। বাংলাদেশ একটি ভয়ঙ্কর নারীবিদ্বেষী দেশ। এ দেশে তো শত শত আশ্রয়কেন্দ্র থাকা উচিত। মেয়েরা রাস্তাঘাটে, অফিসে বাজারে, বাড়িতে গাড়িতে, দিনে রাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
আর যেন কোনও মেয়েকে মেঘলার মতো মরতে না হয়।
২.
-মেয়েদের সবচেয়ে কাছের মানুষ বলে সমাজ কাকে রায় দিয়েছে?
-স্বামীকে।
-ধর্ম এবং পুরুষতন্ত্রের বিচারে কে মেয়েদের সবচেয়ে বড় আশ্রয় এবং নিরাপত্তা?
-স্বামী।
-মেয়েদের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন সবচেয়ে বেশি কে করে?
-স্বামী।
-কোনও বিবাহিতা মেয়ে যদি বাড়িতে খুন হয়, তবে কাকে খুনি হিসেবে সন্দেহ করা হয়?
-স্বামীকে।
-অধিকাংশ সময় কে খুন করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়?
-স্বামী।
৩. আজ খবরের কাগজে কয়েকটি ধর্ষণের খবর পড়লাম। এক. নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে মামা দ্বারা আট বছর বয়সী শিশু হলো ধর্ষণের শিকার। দুই. ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে রূপগঞ্জের গাউছিয়া যাবে বলে সায়েদাবাদ টু গাউছিয়া রুটের একটি বাসে চড়েছিল এক তরুণী। সেই তরুণীকে বাসে একা পেয়ে ধর্ষণ করেছে বাসের ড্রাইভার আর হেলপার। ট্রেনে, বাসে, টেম্পোতে, গাড়িতে, অটোতে, রিকশায়, লঞ্চে, জাহাজে, নৌকোয় কোথাও একা চড়ে মেয়েদের নিরাপত্তা নেই। দিল্লির নির্ভয়া-ঘটনা জানিয়েছে মেয়েদের সঙ্গে পুরুষ থাকলেও মেয়েরা নিরাপদ নয়। মেয়েদের নিরাপত্তা ঘরে বাইরে, রাস্তাঘাটে কোথাও নেই। তিন. ব্রুনাইয়ের কাম্পং সেংকুরংয়ের একটি বাড়ি থেকে ময়লা আনতে গিয়ে বাংলাদেশের মোহাম্মদ শাদ আলী এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে।
বাংলাদেশের লোকেরা দেশে ধর্ষণ করে, দেশের বাইরে গিয়েও ধর্ষণ করে। কারণ মেয়েদের সম্পর্কে তারা যে শিক্ষা পেয়েছে, তা দেশেও যা, দেশের বাইরেও তা। পুরুষতন্ত্র তাদের শিখিয়েছে, মেয়েরা মানুষের মতো দেখতে হলেও সম্পূর্ণ মানুষ নয়, মেয়েরা নীচুশ্রেণির জীব, দাসীবাঁদী, আস্ত যৌনাঙ্গ এবং জরায়ু ছাড়া তারা কিছুই নয়। ঘর এবং ইস্কুল থেকেই মূলত শিশুরা শেখে। কোথাও মেয়েদের সমান অধিকার বিষয়ে, মানমর্যাদা বিষয়ে কোনও শিক্ষা তারা পায় না। ধর্ষকদের ধরে ধরে ফাঁসি দিলেই সমাজের বদল ঘটে না। ধর্ষণ হলো মেয়েদের বিরুদ্ধে ভায়োলেন্স। আমাদের সমাজ ভায়োলেন্স পছন্দ করা সমাজ। ধর্ষকদের জন্য তাই অধিকাংশ লোক ফাঁসি, পুরুষাঙ্গ কর্তন, পিটিয়ে মেরে ফেলা-ইত্যাদি ভায়োলেন্স শাস্তি হিসেবে প্রস্তাব করে। শিশুদের একটি সুস্থ পরিবেশ দেওয়া, সুশিক্ষা দিয়ে সুস্থ মানসিকতা তৈরি করায় মানুষের উৎসাহ কম। শিশুরাই তো জাতির ভবিষ্যৎ। শিশুরা বড় হচ্ছে। ঘৃণাপূর্ণ, বিদ্বেষপূর্ণ অসুস্থ অসুন্দর ভায়োলেন্ট মানুষে সমাজ ছেয়ে যাচ্ছে। ধর্ষণের খবর তাই আর অবাক করে না।
৪. মত প্রকাশের পক্ষে যুদ্ধ করছি অনেককাল। দ্বিখন্ডিতকে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করেছি। কলকাতার উচ্চ আদালত বলেছে এ বই নিষিদ্ধ করার কোনো কারণ নেই, যে অংশটুকুকে আপত্তিকর বলা হচ্ছে, সে অংশটুকুতে আছে শুধু ইসলামের ইতিহাস আর কোরআন হাদিসের উদ্ধৃতি। বই মুক্তি পেয়েছে, কিন্তু তারপরও ইসলামের ইতিহাস এবং মহানবীর জীবন চরিত বই থেকে বাদ দিতে হয়েছে। দুটো পৃষ্ঠা খালি এখনো। যারা ইসলামের ইতিহাস জানে না, তারা যদি ইসলামের পন্ডিতদের লেখা সেইসব ইতিহাস আজ পড়ে, তারা ভাববে বইগুলো নিশ্চয়ই ইসলামবিরোধীদের লেখা। বহুবিবাহ, শিশুবিবাহ, ক্রীতদাস প্রথা, নারী নিগ্রহ ইত্যাদিকে সপ্তম শতাব্দীর মানুষ এবং ইসলামের পন্ডিতরা স্বাভাবিক ভাবলেও একবিংশ শতাব্দীর মানুষ স্বাভাবিক ভাবে না।
৫. আত্মায় আমার বিশ্বাস নেই, প্রচলিত ধর্মে আমার বিশ্বাস নেই। আমার ধর্মের নাম মানবতা। আমার মানুষে বিশ্বাস, ভালো কাজে, ভালো চিন্তায় বিশ্বাস। আমার প্রাণে বিশ্বাস, নিষ্ঠায় বিশ্বাস। সাম্যে, সমতায় আর সমানাধিকারে বিশ্বাস। আমার কি তবে অধিকার নেই বাংলাদেশে বাস করার? আজ সাতাশ বছর আমি নির্বাসিত জীবনযাপন করছি। না, স্বেচ্ছায় নয়, বাধ্য হয়ে। দেশ ত্যাগ করতে আমাকে বাধ্য করেছে দেশের সরকার। দেশের দরজাও এখন আমার জন্য বন্ধ। আমি কি কাউকে খুন করেছিলাম? কারও কিছু লুট করেছিলাম। আমি ছিলাম ডাক্তার এবং লেখক। ডাক্তার এবং লেখক হিসেবে মানুষের সেবা করেছি। দেশ এবং দশের মঙ্গলের জন্য পরিশ্রম করেছি, মানুষ যেন মানুষ হয়, তাদের যেন শুভবুদ্ধির উদয় হয়, সে কারণে নিরলস লিখেছি। আমার এই ত্যাগের পুরস্কার আমাকে এখন ভোগ করতে হচ্ছে। হ্যাঁ একুশ বছর আমি নির্বাসিত। একুশ বছরে দেশের সংজ্ঞা আমার কাছে পাল্টে গেছে। দেশ বলতে এখন আমি মানুষ বুঝি। যে মানুষ ভালোবাসে, যে মানুষ সবার মত প্রকাশের অধিকারে বিশ্বাস করে, ধর্ম এবং কুসংস্কার থেকে যে মানুষ মুক্ত, সে মানুষই আমার স্বদেশ।
৬. এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা হলো। আত্মীয়ের স্ট্রোক হয়েছিল এক বছর আগে। ধীরে ধীরে শক্তি ফিরে পেয়েছে হাত-পায়ে। এখন চলতে ফিরতে পারছে। কথাও আগের চেয়ে ভালো বলতে পারছে। বললো :
— সৃষ্টিকর্তা রহম করেছে, রহম করেছে, রহম করেছে।
— রহম কী করে করলো?
— এই যে ধীরে ধীরে হাঁটতে পারছি, কথা বলতে পারছি।
— কী বলতে চাও? তোমার প্রতি সৃষ্টিকর্তার দয়া, করুণা ইত্যাদি আছে?
— নিশ্চয়ই আছে। আছে বলেই স্ট্রোক থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।
— সৃষ্টিকর্তার এত দয়া থাকলে সৃষ্টিকর্তা তোমাকে স্ট্রোকটা দিয়েছিল কেন?
— স্ট্রোকটা?
— হ্যাঁ স্ট্রোকটা।
আত্মীয় থতমত খেলো। কথা বাড়ালো না।
৭. হায়দরবাদের আসাদউদ্দিন ওয়াইসি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছেন, ‘মুসলিম ভোটাররা আপনার সম্পত্তি নয়।’ তিনি কি বলতে চেয়েছেন মুসলিমরা মমতার নয়, মুসলিমরা তাঁর সম্পত্তি, যেহেতু তিনি মুসলিম? ওয়াইসি ধর্মের রাজনীতি করছেন। একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশে ধর্মের রাজনীতি কী করে বৈধ হয় আমি জানি না। ধর্মের রাজনীতি যতদিন টিকে থাকবে, ধর্মীয় সম্প্রদায়ে ততদিন বিভেদটাও টিকে থাকবে। বিভেদ যতদিন থাকবে, দাঙ্গা ফ্যাসাদ লেগেই থাকবে। অনেকে বলে এই লোকটি বিজেপির বেতনভুক কর্মচারী, বিরোধী দলগুলোর ভোট ভাগ করার কাজ করেন। রাজনীতিতে কত কিছুই ঘটে, এই সব বেচাকেনা হয়তো সব দলই করে। রাজনীতির সঙ্গে ধর্মের ছিটেফোঁটাও মেশানো উচিত নয়। তাহলে এক গ্লাস দুধের মধ্যে দুই ফোঁটা চোনা মেশালে যা হয়, তা হয়। দুধটাই পান করার অযোগ্য হয়ে ওঠে।
৮. অনেক দিন চলছে কৃষক আন্দোলন। আন্দোলন চলাকালীন প্রায় সাতশ’ কৃষক মারা গেছেন। কেউ ঠান্ডায়, কেউ পথ দুর্ঘটনায়, কেউ বিষ খেয়ে। আমি জানি না ওদের সমস্যার সমাধান কী করে হবে। একদিন তো সমস্যা ঘুচবে, নিশ্চয়ই ঘুচবে, শুধু ওরা আর দেখতে আসবে না সমস্যা ঘুচেছে। ওরা আর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে ফেরত আসবে না। দুঃখ কষ্ট, অভাব অনটন দেখতে ভালো লাগে না। পৃথিবীতে সমতার সমাজ যে গড়ার কথা ছিল, সেটার কী হলো! একটা কথা আমি খুব লিখতাম সেই সত্তর-আশির দশকে-সম্পদের সুষম বণ্টন। এখন সেই লাইনটি আমি আমার গদ্যে পদ্যে আর দেখতে পাই না, আমি এখন লিখি ধনী আর দরিদ্রের মধ্যে যে বিরাট এক গ্যাপ আছে, সেই গ্যাপটা কমানো দরকার। রাজনীতি না বুঝেও এটা বুঝেছি সম্পদের সুষম বণ্টনের কথা বললে অধিকাংশ লোক আমাকে পাগল ঠাউরাবে। আজকাল নাকি ইউটোপিয়া চলে না। আজকাল যা চলে তা বর্ণনা করলে আমি আবার দুঃখ কষ্টে ফিরে যাবো।
৯. ঢাকায় শুনেছি প্রচ- জ্যাম। সামান্য পথ পেরোতেই কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। আমি বুঝি না মানুষ কেন গাড়ি চড়েই সবখানে যেতে চায় এমনকী এক-দুই কিলোমিটার রাস্তাও। হাঁটে না কেন মানুষ? দেশে যাওয়ার সুযোগ পেলে আমি তো শান্তিনগর থেকে শ্যামলী হেঁটে যাবো, শ্যামলী থেকে সাভার। কেউ কেউ বলে ফুটপাত নেই! নেই কেন? ফুটপাতে কেনাবেচা উঠিয়ে দিয়ে হাঁটার রাস্তা তৈরি করে নাও। এত গাড়িই বা কেন শহরে? রাস্তায় গাড়ি পার্ক করলে জরিমানা কর। গাড়ি শহরের বাইরে চালাবার জন্য রাখো। গাড়ি নিয়ে দূরে কোথাও যাও। বাইরের গাড়ি শহরের ভেতর ঢুকতে চাইলে হাই ট্যাক্স বসাও। শহরে পাবলিক বাসে চড়ো। মেট্রোরেল নেই? উফ! ও না হলে হিউজ জনসংখ্যার দেশে কী করে চলবে! ভালো বাস নেই? ঝকঝকে ডবল ডেকার কিনে নাও। সাইকেল চালাও। সাইকেল। বাইসাইকেল। পল্যুশান? মাস্ক পরে নাও। সরকারকে বলো বড় রাস্তার কিনার দিয়ে সরু করে সাইকেলের রাস্তা বানাতে, হাঁটার রাস্তা বানাতে। জ্যামের একটি বড় কারণ গাড়ির সংখ্যা বেশি, আরো একটি কারণ, রাস্তার সংখ্যা কম। রাস্তা আরো কিছু না বানালে চলবে না। বাংলাদেশের জন্য কি এসব ইউটোপিয়া? কী জানি! আমার তো মনে হচ্ছে এ এমন কোনও সমস্যা নয় যার সমাধান নেই। সমাধানের ইচ্ছেটা প্রবল হওয়া চাই। জ্যাম মানুষের দিন খেয়ে নিচ্ছে। রাতটুকুই সম্ভবত আছে ওদের। জাতিটা নিশাচর হয়ে গেলেও মন্দ হয় না। সবাইকে ঢাকামুখী হতে হয় কেন? বেইজিং-এ তো বেইজিং-এর বাইরের লোকদের মাইগ্রেট করতেই দেয় না। আমি চীন সরকারের মতো ফ্রিডম অব মুভমেন্টের বিরুদ্ধে নই। তবে ডিসেন্ট্রালাইজেশন যে জরুরি তা বুঝি। ঢাকার আশপাশে পেরিফেরি ডেভেলপ করলে ঢাকার ওপর চাপ কমে। দেশে এত বিজ্ঞ লোক থাকার পরও মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কেন? মাঝে মাঝে মনে হয় অনেকে বড়লোকি দেখানোর লোভ সামলাতে পারে না। শুনেছি ঢাকার রাস্তায় নাকি বিএমডাব্লু, মার্সিডিজ চলে। গরিব দেশে এত দামি গাড়ি! পয়সা কামিয়েছো ভালো কথা, লজ্জা জিনিসটা কোথায় হারিয়েছো?
১০. বাংলাদেশের তরুণ তরুণীরা, লক্ষ্য করছি, ‘র’ কে ‘ড়’ বলে, যেমন আমাদেড়, এড়কম, কড়েছি। এমনভাবে বাংলা বলে, শুনে মনে হয় কষ্ট হচ্ছে বলতে। ‘সুতরাং’ না বলে ‘সো’ বলে, ‘কিন্তু’ না বলে ‘বাট’ বলে। না, আমি বলছি না ওরা বাংলা ভাষাকে হত্যা করছে। পঁচিশ কোটি মানুষ বাংলা বলে, খুব সহজে এই ভাষার মৃত্যু হবে না। তবে ভাষার বিবর্তন ঘটে, ঘটছে। তরুণ-তরুণীরা ভাষাকে যেদিকে নিয়ে যাবে, ভাষা সেদিকেই যাবে। এই ভাষাটিকে শেষ অবধি বাংলা না বলে অন্য কোনও নামে হয়তো ডাকতে হবে।
লেখক : নির্বাসিত লেখিকা।