মিয়ানমারের জান্তা প্রধানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ মিয়ানমারের সামরিক জান্তা প্রধান মিন অঙ লাঙের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নেদারল্যান্ডের হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার ব্রিটেনভিত্তিক মিয়ানমার একাউন্টিবিলিটি প্রজেক্ট (এমএপি) নামের এক অধিকার সংগঠন এই অভিযোগ দায়ের করে। একইসাথে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর সামরিক বাহিনীর সহিংসতার বিষয়ে আদালতে প্রমাণ দাখিল করে সংগঠনটি। পরে এক বিবৃতিতে এমএপির পরিচালক ক্রিস গিনিজ বলেন, ‘অবৈধ অভ্যুত্থানের এই নেতার তার অধীন নিরাপত্তা বাহিনীর সংগঠিত গণ নিপীড়নমূলক অপরাধের দায় রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আইসিসিতে আমরা এই অপরাধের দায়ে মিন অঙ লাঙের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী মামলা দাঁড় করিয়েছি।’ জাতিসঙ্ঘের তদন্তকারী দলের প্রধান নিকোলাস কমিজানের তথ্য অনুসারে, অভিযোগের সমর্থনে অভ্যুত্থানের পর থেকে দুই লাখ ১৯ হাজার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। পরে ১ আগস্ট জরুরি অবস্থার মেয়াদ ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেন জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং লাইং। গত বছরের নভেম্বরে দেশটিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী। সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া অহিংস বিক্ষোভকে সামরিক উপায়ে জান্তা সরকার দমন করতে গেলে বিক্ষোভকারীরাও বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র হাতে নেয়।
গত ৭ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট দেশের সাধারণ মানুষকে সামরিক জান্তার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঘোষণা দেয়। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ ও সশস্ত্র তৎপরতায় সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে মিয়ানমারে এক হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী ও বিদ্রোহী নিহত হয়েছে বলে দেশটিতে মানবাধিকার নজরদারি করা সংস্থাগুলো জানায়। একইসাথে দেশটিতে ১০ হাজারের বেশি লোক গ্রেফতারির শিকার হয়। অপরদিকে সামরিক বাহিনী নিহতের এই সংখ্যা অস্বীকার করে আসছে এবং সংঘর্ষে বিপুল সৈন্য নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে।
সূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড