বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণ ফিরছে, শান্তির প্রত্যাশা সবার

0

আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে সবা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাবিতে হল প্রাধ্যক্ষরা ফিরে আসা শিক্ষার্থীদের বরণ করেছেন ফুল ও চকোলেট দিয়ে। করোনাভাইরাসের অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার কার্ড এবং হলের পরিচয়পত্র দেখালে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। ঢাবিতে প্রথম ধাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পেরেছেন। অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার শর্তে আগামী ১০ অক্টোবর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ১৬ অক্টোবর থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরুর প্রস্তাব করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি। চলতি মাসের মধ্যে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলছে ১৮ অক্টোবর। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল আগামী ১১ অক্টোবর খুলে দেওয়া হচ্ছে। ১২ অক্টোবর খুলবে ইবির হল। ২১ অক্টোবর থেকেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হবে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস, তবে অনলাইনে ক্লাসও চলবে। দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমে আসায় দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একের পর এক খুলতে শুরু করায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনেও স্বস্তি ফিরেছে। তারা ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রত্যাশা করছে।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে গত বছরের মার্চে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলতে শুরু করলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা একেবারে কম নয়। এই শিক্ষার্থীরা এখনো অনলাইনে ক্লাস করছেন। তাদেরকেও শ্রেণিকক্ষে আনা প্রয়োজন। ক্যাম্পাসে ফিরতে পেরে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা জানান, গত দেড় বছরে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা না হওয়ায় সেশনজট দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সংকটে আছেন। তারা বলেন, অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা হলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষা আটকে আছে। এটা শিক্ষার্থীদের জন্য একটা বড় ক্ষতি। বিশেষ করে চাকরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের হতাশার মধ্যে পড়ে যেতে পারেন। এখন গত দেড় বছরের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য কর্তৃপক্ষকে চেষ্টা করতে হবে। আমরা মনে করি, ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য সবার আগে ক্ষতি কতটুকু হলো, তা পর্যালোচনা করা জরুরি। এরপর তার ভিত্তিতে ক্ষতি পোষানোর পরিকল্পনা করা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যাঁদের পরীক্ষা আটকে আছে, তাঁদের পরীক্ষা নেওয়া এবং সেশনজট কমানোর বিষয়টি সবার আগে বিবেচনায় নিতে হবে। আমরা আশা করব আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। আর শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পরিকল্পনামাফিক এগোবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রাজনীতির নামে নোংরামী ও হানাহানি করে শিক্ষার পরিবেশ যাতে বিঘিœত না হয়, কোন বিশ্ববিদ্যালয় যাতে ফের বন্ধ না হয়, কোনো মায়ের কোল যাতে খালি না হয়, সেদিকে সকলকেই সমান দৃষ্টি ও ভূমিকা রাখতে হবে।