মণিরামপুরের সাব রেজিস্ট্রারসহ দুই জনকে শোকজ ও এক জনকে বদলি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য্যরে ‘ঘুষ দিতে না পারায় জমি রেজিস্ট্রি হয়নি’ অভিযোগের পর যশোরের মণিরামপুর সহকারী রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সাব রেজিস্ট্রার শাহজাহান আলীসহ দুই জনকে শোকজ করেছে আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া মোহরার পদমর্যাদার এক জনকে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে সাব রেজিস্ট্রার শাহজাহান আলী জানান, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহাপরিদর্শক (নিবন্ধন) শহিদুল ইসলাম ঝিনুক স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো নোটিশ পেয়েছেন তিনি ও তার অফিস সহকারী শেখর চন্দ্র দে। এদিনই (বৃহস্পতিবার) তাদের ওই নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। তার জবাব দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন শাহজাহান আলী। তিনি আরও জানান, এছাড়া ওই দফতরের মোহরার শামসুজ্জামান মিলনকে বাঘারপাড়া সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। সাব-রেজিস্ট্রার শাহজাহান আলী বলেন, প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যকে ভুল বুঝিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন সাব রেজিস্ট্রি অফিসের বিরুদ্ধে তথ্য দেয়া হয়েছে। সহকারী রেজিস্ট্রার অফিসের এ কর্মকর্তা আরও জানান, গত ১৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১২টার দিকে প্রতিমন্ত্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য্যরে ছেলে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য্য শুভ’র নামে একটি জমি রেজিস্ট্রি করতে আসেন দলিল লেখক কামরুজ্জামানের সহকারী গৌতম ঘোষ বাপি। তখন কর্তব্যরত মোহরার শামসুজ্জামান মিলন তাকে জানান, এখনও ৪০টি দলিল সিরিয়ালে রয়েছে কী করে করবো। এ সময় বাপি ও মিলনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। তখন মোহরার মিলন দলিল নিয়ে সাব রেজিস্ট্রারের কাছে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে ছেলে পাঠিয়েছেন বলে জানান। সাব-রেজিস্ট্রার দলিলসহ কাগজপত্র যাচাই করে দেখতে পান দলিলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যাংকের পে-অর্ডার নেই। তিনি বিষয়টি দলিলের বহনকারী বাপিকে জানান। বাপি উত্তেজিত হয়ে চলে যান। শাহজাহান আলী আরও জানান, ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে পে-অর্ডারসহ দলিল নিয়ে আবার আসেন গৌতম ঘোষ বাপি। তখন দলিলটি রেজিস্ট্রি করা হয়। সাথে সাথে দলিলের নকল (সার্টিফাই) চায় সে (বাপি)। মন্ত্রীর সম্মানে দুই ঘণ্টার মধ্যে তার হাতে সার্টিফায়েড কপি দেয়া হয়। জমির বিবরণ সম্পর্কে শাহজাহান আলী জানান, দলিল অনুযায়ী সুপ্রিয় ভট্টাচার্য শুভ দুই একর জমি কিনেছেন মণিরামপুর উপজেলার রোহিতা ইউনিয়নের মিজানুর রহমানের কাছ থেকে। জমি ওই ইউনিয়নের বাসুদেবপর মৌজার ৭৩/৭৭/৭৮/৭৯ দাগ থেকে বিক্রি করা হয়েছে। জমির মূল্য দলিলে উল্লেখ করা হয়েছে ১৯ লাখ টাকা। অপরদিকে জমি বিক্রেতা রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, ২ একর জমি বিক্রি বাবদ তিনি ৮০ লাখ টাকা পেয়েছেন। বুধবার যশোরের মণিরামপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। আমি গত সপ্তাহে একটি জমি রেজিস্ট্রি করতে গিয়ে দুর্নীতির রেট অনুযায়ী টাকা দিতে না পারায় সেই জমি রেজিস্ট্রি হয়নি’।